VLIR-UOS মূলত বেলজিয়াম সরকার প্রদত্ত বৃত্তি । এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবে এমন ১০ টি এশিয়ান দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এর নাম অন্তর্ভুক্ত আছে। আবেদনকারীকে বাংলাদেশ এর স্থায়ী নাগরিক হতে হবে এবং আবেদন করার সময় বাংলাদেশ এ অবস্থান করতে হবে। আইইএলটিএস এ ওভারঅল ব্যান্ড ৬.০ বা টোফেলে ৫৫০ (পেপার) বা ৭৯ (আইবিটি) স্কোর থাকলে আবেদন করা যাবে। জিম্যাট বা জিআরই এর প্রয়োজন নেই বললেই চলে।
VLIR-UOS তিন ধরনের বৃত্তি দিয়ে থাকেঃ
প্রফেশনাল ট্রেনিং প্রোগ্রাম, সংিশ্লষ্ট ক্ষেত্রে চাকরি অভিজ্ঞতা অতীব প্রয়োজন। এক বা দুই বৎসর মেয়াদি মাস্টাস প্রোগ্রাম । মাস্টাস প্রোগ্রামে চাকরি অভিজ্ঞতা প্রয়োজন নেই, তবে চাকরি অভিজ্ঞতা থাকলে বৃত্তি পেতে অগ্রাধিকার পাওয়া যায়। এক বৎসর মেয়াদি মাস্টাস প্রোগ্রাম গুলো মাল্টিডিসিপ্লিনারী কোর্স। যে কেউ আবেদন করতে পারবেন, যদি মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স এর মাধমে প্রমান করতে পারেন আপনি এই বিষয় নিয়ে কাজ করছেন বা করতে আগ্রহী। প্রফেশনাল ট্রেনিং প্রোগ্রাম এর জন্য সবোচ্চ বয়স ৪৫ বৎসর এবং মাস্টাস প্রোগ্রাম এর জন্য সবোচ্চ ৪০ বৎসর বয়সীরা আবেদন করতে পারবেন।
যা যা দরকারঃ
১) দুই/তিনটা রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার
২) মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স
৩) আইএলটিএস বা টফেল স্কোর
৪) অনাস বা/ও মাস্টাস এর ট্রান্সক্রিপ্ট
৫) অনাস বা/ও মাস্টাস এবং এসএসসি ও এইচএসসি এর সার্টিফিকেট
৬) প্রফেশনাল ট্রেনিং প্রোগ্রামের জন্য চাকুরী স্থান হতে একটি চিঠি। যা তে লেখা থাকবে এই ট্রেনিং নিলে আপনার চাকুরীদাতার কি কি উপকার হবে।
যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকারঃ
মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। VLIR-UOS আপনার মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স এ ঠিক কি কি দেখতে চায় তার একটা ধারণা শুরুতেই দিয়ে দিবে। শতকরা ১০০ ভাগ চেষ্টা করুন ঐ বিষয় গুলো কাভার করতে। ওয়েব এ অনেক স্যাম্পল মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স পাওয়া যায়। ঐ গুলো দেখুন। কিন্তু কোন ভাবেই কপি করবেন না। কারণ VLIR-UOS মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স আপনার প্রাথমিক আবেদনে অনলাইন এ পূরণ করতে হবে। plagiarism software দিয়ে তারা আপনার মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্সটি স্ক্যান করে দেখে আপনি ওয়েব থেকে কপি করেছেন কিনা। করলে বাকি ডকুমেন্ট গুলো দেখে তারা তাদের সময় নষ্ট করতে চায় না। সরাসরি ময়লার ঝুড়িতে। যিনি নিজে থেকে তার উচ্চশিক্ষার উদেশ্য লিখতে পারেন না তাকে বৃত্তি দিয়ে তারা নিজেদেরকে বিপদে রাখতে চায় না।
মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স লিখতে ছোট ও সহজ বাক্য ব্যবহার করুন। দয়া করে এমন শব্দ ব্যবহার করবেন না যা কম ব্যবহার হয়। জিআরই বই থেকে শব্দ নিয়ে নিজের পািন্ডত্য জাহির করতে যাবেন না। যেমন বাংলায় আপনাকে যদি কেউ নম্বরপত্র এর বদলে অভীক্ষাপত্র, বুদ্ধি-পরীক্ষা এর বদলে ধীনির্ণায়ক পরীক্ষা, স্বামীসুলভ এর পরিবতে পতিজনোচিত, কিছুক্ষন আগে না বলে সাম্প্রতিক অতীত বলে, তাহলে আপনার কি বুজতে একটু সময় লাগবে? আমার মনে হয় সবারই লাগবে। ঠিক যে প্রফেসররা আপানার মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স, রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার গুলা পড়বেন তাদেরও একটু সময় লাগবে বইকি। সে সাথে যদি কোন অর্থ বের করতে ডিকশনারী এর সহয়াতা প্রয়োজন হয় তাহলে! তাদের সে সময় কিন্তু নেই। উপরন্ত আপানার আইএলটিএস বা টফেল স্কোর যদি খুব সাধারণ হয়, তবে ধরে নিবে এটি আপনার লিখা নয়। ফলাফল অনুমান করতে পারছেন?
রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটারঃ যারা চাকরি করেন তারা অবশ্য চেষ্টা করবেন চাকুরীর জায়গা থেকে কমপক্ষে একটা জোগাড় করার জন্য। যদি কোন প্রোফেসনাল অ্যাসোসিয়েশান এর সদস্য হন, তাহলে সভাপতি বা মহাসচিব এর কাছ থেকে একটি। অপরটি একজন প্রফেসর এর কাছ থেকে যার ইউরোপ বা আমেরিকা বা জাপান বা অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ড থেকে ডিগ্রি আছে। দয়া করে ইন্ডিয়ান ডিগ্রিধারীদের রেফেরেন্স লেটার নিয়ে নিজের পরিশ্রম এর বারটা বাজাবেন না। আমার জানা মতে ইন্ডিয়ানরাও একই ফর্মুলা অনুসরণ করে। রেফেরেন্স লেটার যিনি দিবেন তার পূর্ণ ঠিকানা, নাম, পদবি, ডিগ্রি (শুধু পিএইচডি উল্লেখ করবেন, পাশে ব্রাকেটে দেশের নাম দিবেন), ইমেইল, টেলিফোন ইত্যাদি থাকতে হবে।
VLIR-UOS রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার এর জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফর্ম দিয়ে দেয়। যদি না দেয় সে ক্ষেত্রে রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার প্রদানকারির অফিসিয়াল প্যাড ও অফিসের খাম (যদি থাকে)ব্যবহার করুন। যার কাছ থেকে রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার নিচ্ছেন তাকে অবশ্যই জিজ্ঞাস করবেন একই বিষয়ে ঐ বৎসর তিনি অন্য কাউকে রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার দিয়েছেন কিনা। দিয়ে থাকলে তাকে সালাম দিয়ে অন্য কাউকে টার্গেট করুন।
রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার এর জন্য ব্যস্ত মানুষ এর পিছনে না ঘুরে যা করার নিজেই করে নেন, তারপর তাকে ভালো করে দেখিয়ে সাইন করে অবশ্যই সিল, স্বাক্ষর ও খাম এর মুখ বন্ধ অবস্থায় সংগ্রহ করুন। ভুক্তভোগী হিসেবে জানি রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার এর মত অতি জরুরী বিষয় অনেকেই হয় বোঝেনা, না হলে দিতে চান না। আর চাকুরীর জায়গা থেকে পাওয়া অনেক সময় কঠিন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে একবার চাকুরীর জায়গা থেকে পাইনি। বরং এই সব করে লাভ নাই, সময় নষ্ট, বৃত্তি পাওয়া ছেলের হাতের মোয়া না এসব শুনেছি। পরে আমি আবিস্কার করেছিলাম, আমার কাছ থেকে সব কাগজ পত্র নিয়ে সব সিস্টেম জেনে আমার বস নিজেই আবেদন করেছিলেন। তবে ওনার কথা গুলো আমার ক্ষেত্রে না ওনার ক্ষেত্রেই সত্যি হয়েছিল।
একটু সতর্ক হন। আপনার তৈরি রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার এর কোন প্রকার কপি আপনাকে যিনি রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার দিচ্ছেন তাকেও রাখতে দিবেন না। হতে পারে তিনি আপনার অন্য কোন বন্ধু বা বান্ধবিকে নিজের লেখা বলে তা বিগলিত চিত্তে সরবরাহ করে দিয়েছেন। ক্ষতি? পুরাটাই ক্ষতি। দুজন বাক্তি এর রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার এ উল্লেখিত যোগ্যতা, ভাষা, প্রদানকারী বাক্তি যখন অভিন্ন হবে, তখন বৃত্তিটা কেউ পাবেন না। বরং ভবিষতে আপনার আবেদন তারা সরাসরি ময়লার ঝুড়িতে ফেলবে, কিন্তু আপনাকে আবেদন করতে নিরুসাহিত করবে না। মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স ক্ষেত্রেও বিষয়টা খেয়াল রাখবেন।
ডিগ্রি সার্টিফিকেটঃ অনাস বা/ও মাস্টাস সার্টিফিকেট এর ইংরেজী কপি তৈরী রাখুন। আপনার বিশ্ববিদ্যালয় যদি নিজেরা সার্টিফিকেট সত্যায়িত করে তবে ভাল। ঢাবি করে। না করলে নোটারি পাবলিক দিয়ে করাবেন (প্রতিটি ২০/-)। দয়া করে কোন ভাবেই সরকারি কর্মকর্তা বা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক বা তথাকিত নীলক্ষেত মেড নিজের কাছে থাকা সিল দিয়ে সত্যায়িত করতে যাবেন না।
ট্রান্সক্রিপ্টঃ অনাস বা/ও মাস্টাস এর ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরী রাখুন। ট্রান্সক্রিপ্ট আপনি নিজে হাতে নিবেন আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবশ্যই সিল, স্বাক্ষর ও খাম এর মুখ বন্ধ অবস্থায়। আপনার অন্যান্য ডকুমেন্ট এর সাথে এক সাথে খাম এ করে পাঠাবেন। স্কুল ও কলেজের ট্রান্সক্রিপ্ট বা নম্বরপত্র পাঠানোর কোন দরকার নাই তবে স্কুল ও কলেজের সত্যায়িত সার্টিফিকেট পাঠাতে হবে।
আইএলটিএস বা টফেলঃ এর সার্টিফিকেট নোটারি করবেন বা সরাসরি কতৄপক্ষ কে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করবেন। তবে আপনার সংিশ্লষ্ট কতৄপক্ষ কিভাবে আইএলটিএস বা টফেল এর সার্টিফিকেট চাচ্ছে তা আবেদন এর নির্দেশনাতে লেখা থাকবে।
বৃত্তির পরিমাণঃ
হেল্থ ইনস্যুরেন্স (অ্যাক্সিডেন্টাল যাতায়াতের সব খরচ ইনস্যুরেন্স থেকেই আসবে), টিউশন ফি, ঢাকা থেকে বেলজিয়াম থেকে ঢাকা যাতায়াতের সব খরচ বেলজিয়াম সরকার বহন করবে। ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও মাস্টাস প্রোগ্রাম এর বৃত্তি এর টাকার পরিমাণ ভিন্ন। তবে কমবেশি ১২০০ ইউরো পাবেন প্রতি মাসে। এ থেকে স্টুডেন্ট ডরমিটরি এর ভাড়া আপনাকে পরিশোধ করতে হবে (২৪০ – ৩২০ ইউরো)। মাস্টাস প্রোগ্রাম এর ক্ষেত্রে বিবাহিত হলে প্রতিমাসে এর জন্য অতিরিক্ত ভাতা পাবেন। এছাড়া প্রাথমিকভাবে প্রায় ৮০০-১২০০ ইউরো পাবেন বই কেনা ও অ্যাডজাস্ট করার জন্য।
কিছু পরামর্শঃ
প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়, চলে ১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। তবে শেষ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগেই আবেদন করাই ভালো। প্রতি বৎসর ১ ফেব্রুয়ারী এর মধ্যে আবেদন সহ সকল প্রকার ডকুমেন্ট সংিশ্লষ্ট কতৃপক্ষ এর কাছে পৌছাতে হবে। দুই জন স্টুডেন্ট এর যোগ্যতা একই হলে মেয়েরা অগ্রাধিকার পাবেন। দুইজন ছেলে বা দুইজন মেয়ে এর যোগ্যতা একই হলে হলে, যিনি আগে আবেদন করেছেন তিনি অগ্রাধিকার পাবেন।
আবেদন ফর্ম এ একটি ঘর আছে যেখানে আপনি এই কোর্সে থাকাকালিন কত টাকা নিজে থেকে বা অন্য কোন সোর্স থেকে জোগাড় করতে পারবেন তার তথ্য দিতে বলা হয়। দয়া করে ফাদে পা দিবেন না। নিদিষ্ট ঘরে NIL লিখুন । আপনি যদি অন্য সোর্স থেকে টাকা জোগাড় করতে পারেন তাহলে আপনাকে কোন দুঃখে বৃত্তি দিতে যাবে?
কো-অর্ডিনেটিং ইউনিভার্সিটির কোন প্রফেসরের সাথে আগে থেকেই ই-মেইলে যোগাযোগ করে রাখতে পারেন। তবে কোনভাবেই VLIR-UOS সম্পরকে কিছু উল্লেখ করবেন না। আপনার উপথাপনা ও বিষয় সম্পর্কিত কোন প্রকাশনা তার পছন্দ হলে তিনিই আপনাকে VLIR-UOS এ আবেদন করতে পরামর্শ দিবেন। আখেরে আপনার লাভ হবে যদি যোগাযোগ চালিয়ে যান।
আগে কোন বিদেশী বা দেশি বৃত্তি পেলে তা কোন আবেদনপত্র বা সিভি এর কোন জায়গায় উল্লেখ করবেন না। কারণ যারা আগে কোন বৃত্তি পাননি তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
এর আগে ইউরোপ বৃত্তি নিয়ে পড়াশুনা বিষয় একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। ইরাসমাস বৃত্তির বিষয় কিছু তথ্য আছে সেখানে। এবার এর পোস্ট কিছু বিষয় বিস্তারিত লিখলাম। কিছু বিষয় আগের পোস্ট এর জন্যও প্রযোজ্য।
VLIR-UOS ও ইরাসমাস এর সিলেকশন প্রক্রিয়াতে আমাদের দেশের আমলাতন্ত্র এর হাত নেই। তাই অনায়েসে যে কেউ এতে আবেদন করে বৃত্তি পেয়ে যেতে পারেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আমি একবার কমনওয়েলথ বৃত্তি জন্য ইউজিসিতে আবেদন করেছিলাম। ভাইভা দেবার আগেই জেনে গেলাম আমার বিভাগের একজন শিক্ষক নাকি আগে থেকেই নিবাচিত। বিশ্বাস করি নাই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষক নই কিন্তু একমাস আগে আমি আইএলটিএস এ ভাল একটি স্কোর করেছি। আর উক্ত শিক্ষক আইএলটিএস কি সেটি না জানলেও মধুর ক্যান্টিনে কয়টি চেয়ার আছে তা খুব ভাল জানতেন। আমার একটি প্রকাশনা ছিল, তার প্রকাশনা নেই। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে ভাইভা বোর্ড গিয়েছিলাম। আগে জানলে ভাইভা বোর্ড এ যেতাম না, যেখানে আমি কোন রাজনিতিক দল এর সমর্থক তা জানতে চায়। আমি বা আমার চোদ্দ গুষ্টি কোনদিন রাজনীতি করে নাই। ভাইভা এর পরদিন জানলাম উক্ত শিক্ষক প্রথম হয়েছেন, আর আমি দ্বিতীয়।
এক বৎ সর পর দেখি উক্ত শিক্ষক ড্যাং ড্যাং করে ঢাবিতে ঘুরে, উনার তখন ইউকে থাকার কথা। পরে জেনেছিলাম, উনি আইএলটিএস এ ওভারঅল ব্যান্ড স্কোর ৪.৫ পেয়েছিলেন, তাই কমনওয়েলথ এ শেষ পর্যন্ত যেতে পারেননি। বিষয়টি আমাকে যথাসময় জানালে আমি দ্বিতীয় স্থানে থাকার জন্য সহজেই কমনওয়েলথ এর বৃত্তিটা পেতে পারতাম। কিন্তু তিনি বা ইউজিসির আমলাতন্ত্র বিষয়টি আমাকে জানানোর কষ্ট করেননি। এক বৎসর আগে উক্ত শিক্ষক এর ইমেল পাই। যার বিষয়বস্তু, তার জন্য আমাকে একটি বিদেশি বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তবে তার শর্ত আছে। তার মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স, রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার গুলো আমাকে লিখেও দিতে হবে। আমি লিখে দিতেও রাজী হয়েছি। শুধু একটি ছোট শর্ত দিয়েছি তাকে। তার আইএলটিএস এ ৬.৫ এর সার্টিফিকেটটা আমাকে স্ক্যান করে পাঠাতে। আজও অপেক্ষা করছি তার জন্য।
শিক্ষা মন্ত্রনালয় এর ওয়েবসাইট থেকে বৃত্তি এর খোঁজ নিয়ে কতবার যে আবেদন করেছি আমার নিজেরই খেয়াল নেই। পরে আমলাতন্ত্র এড়িয়ে কি করা যায় তার সন্ধানে নেমে পড়লাম। বিফল হইনি। আমি ইতিমধ্যে ইউরোপে দুইটা বড় আর একটা ছোট বৃত্তি ভোগ করেছি, যেখানে দেশীও আমলাতন্ত্র এর কোন হাত ছিল না। ছিল আমার নিজের মনবল, লেগে থাকার প্রতিজ্ঞা, আর নিজের উপর বিশ্বাস।
অপ্রাসঙ্গিক ও ব্যক্তিগত তথ্য বিনিময় করলাম এই জন্য যে, আমার মত সাধারণ স্টুডেন্টরা হতাশায় না ভুগে দেশের আমলাতন্ত্রকে সরাসরি না বলে নিজে চেষ্টা করবেন। সফলতা আসবেই। পরিশেষে আবারো বলছি বৃত্তি পেতে হলে আহামরি স্টুডেন্ট হবার দরকার নাই, সদিচ্ছাই যথেষ্ট। বৃত্তের বাইরে চিন্তা করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:১৭