ঘাসের চাদরে শুয়ে শুয়ে, পড়ন্ত বিকেলের নীল আকাশে, সাদা মেঘের ভেলা দেখতে তো একটু একটু বেশ ভালই লাগছে... আমার জায়গায় ব্লগার জনৈক গন্ডমূর্খ থাকলে নিশ্চিত কমেডি জুড়ে দিতো এতক্ষণে..
....................নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা..............
...........................কে ভাসিয়ে দিলি ঠেলা...................
.......................আমার বিবির চোখে পড়লে...............
....................আজও বায়না ধরলো বলে(



এই বৃহস্পতিবার ক্লাস শেষ হলেই মনটা খারাপ হতে শুরু করে ... একাকিত্ব যেন জাপটে ধরে পিষে ফেলে


দৌড়াতে দৌড়াতে প্রিন্স (প্রিন্স হেক্টর) এসে বলল, ঐ শালা তুই মাঠের এই চিপায় কি করিস একা একা... ডাকতেছিলাম উত্তর দিচ্ছিলি না কেন... আমরা তোকে বাড়ি বাড়ি খুজে বেড়াচ্ছি আর তুই এখানে শুয়ে শুয়ে ঘাস চিবাচ্ছিস .... অপূর্ণ রা বল-ব্যাট নিয়ে দাড়িয়া আছে চল খেলবো....
বেচারা প্রিন্স ডাকতে এসে হাপিয়ে গেছে.... অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওর সাথে গেলাম খেলতে ... ওরা খেলা শুরু করে দিয়েছে ....খেলা শেষ হতে হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো ..... আমরা কয়জন ছাড়া অনেকেই বাড়ি চলে যাচ্ছে......হঠাৎ আমি মাক্স কে বললাম চল না একটু জগলু রোড থেকে ঘুরে আসি....
অচিন বিরক্তকন্ঠে বলল, কেন, আমরা জগলু রোডে যাবো কেন , আমরা কি অপু-তানভীর নাকি যে সারাদিন জগলু রোডে ঘুরঘুর করবো....
বিস্মিত কন্ঠে বললাম, মানে!!!!!!

মানে আবার কি তুই জানিস না ঐ রোডেই রিদীতার বাড়ি .... আমি যতদিন ঐ রোডে গেছি ততদিন ই অপুর সাথে দেখা হইছে... আর এই সময় গেলে তো অপুকে অবশ্যই পাবি .... শুনেছি রিদীতা নাকি এই সময়ে চটপটি খেতে বের হয় ...

রিদীতা এই সময়ে বের হয় শুনে যাওয়ার আগ্রহ টা আরও বেড়ে গেলো


অনেকটা অভিমান নিয়ে অপূর্ণকে বললাম চলতো আজ অপুর খবর আছে..... যদি ওকে জগলু রোডে পাই তাহলে দেখবি কি করি....
এই কথা শুনে অপূর্ণ সহ সকলের চোখ চকচক করতে লাগলো.

চল দেখবি কি করি...(


জগলু রোডে ঢোকামাত্রই অপুর দেখা মিলল..... আমরা প্ল্যানমতো ওকে দেখেও না দেখার ভান করে কথাচ্ছলে হাটতে লাগলাম....
একসাথে আমাদের দেখে অপুর চোখ তো ছানাবড়া হয়ে গেলো.

রিদীতা দের বাড়ীর সামনে এসে আমার ভেতরটা খা খা করতে লাগলো.... ইস্ একবার যদি ও বের হতো.... একটিবার, শুধু একটিবার... ও-মা এ-তো দেখি "চিমা মস্তকে হুল হুল" মনে হলো যেন আমি বললাম "চিচিংফাক"


একসাথে আমাদের দেখে রিদীতা তো ভূত দেখার মত ভয় পেল....
প্রিন্স বলল, কি ব্যাপার রিদীতা কই যাচ্ছ......
-এইতো সামনেই যাচ্ছি চটপটি খেতে .... তোমরা কই যাচ্ছ.....
আমার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না.... অপূর্ণ বলল আমরা এদিকে হাটতে এসেছি..... আমি শুধু অচিনকে বললাম তোরা শুধু দুরে গিয়ে দারা .... দেখ আমি কি করে অপুর বারোটা বাজাই....
রিদীতা ভদ্রতার খাতিরে বলল চলো সবাই মিলে চটপটি খাই....
অচিন বলল না আমরা খাবো না.... তুমি শুধু রাজনীলকে নিয়ে যাও ... ও নাকি খাবে....
ও-মা এই কথা শুনে অপুর কি বারোটা বাজাবো আমারই তো ব্যান্ড বেজে গেলো


ওরা চলে যাওয়ার পর আমি আর শুধুই রিদীতাপাশাপাশি হাটতে লাগলাম .... সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে শুধু আমার হৃৎপিন্ড লাফালাফির শব্দ ছাড়া... জানি না ওর সামনে আসলে এমন হয় কেনো, আগে তো হয়নি কখনো.

চোখ বন্ধ করে একটু দম নিয়ে বললাম তু-তুমি কি প্রতিদিন চ-চটপটি খেতে বের হও...
রিদীতা একটু হেসে বলল হে আমার সন্ধ্যাটা শুরুই হয় শাহী মামার চটপটি দিয়ে....তুমি আজ খেযে দেখো তোমারও ভাল লাগবে..

ওর নিঃশব্দ হাসিটা আমার হৃদয় ছুয়ে গেলো...ওর দিকে বিস্ময়ের চোখে তাকিয়ে বললাম তাই নাকি...আর খেয়াল করলাম আমি যা ভেবেছিলাম তা নয় ও-তো বেশ হাসিখুশি আর মিশুক স্বভাবেরই... কথা বলার মাঝেও আমার মত কোন আড়ষ্টতা নেই....এমন ভাবে কথা বলছে যেনো আমি ওর কতদিনের চেনা...এক অচেনা সুখ আমাকে ঘিরে ধরলো.. (মনে মনে উত্তম কুমারের মত গাইতে লাগলাম,


ওর সাথে চটপটি খেতে খেতে অপুর কথা আর আমদের প্ল্যান এর কথা বেমালুম ভুলে গেছি... হঠাৎ অপুকে দেখে মেজাজ বিলা হয়ে গেলো

বিরক্ত কন্ঠে বললাম , কি রে অপু তুই্ ..... একা একা কি করিস এখানে..
আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে ওর চোখ তো অসস্থির কোটরে ঢুকে গেলো .... আমতা আমতা করে বলল, মানে না মা-নে চটপটি খেতে এসেছি...

মনে মনে ভাবলাম , যাক ওর ভাল একটা শিক্ষা হলো..

গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক......."Take it as fun only"
উৎসর্গ : আমার কিছু প্রিয় ব্লগার অপু তানভীর, অপূর্ণ, অচিন, মাক্স, গিয়াস-লিটন ভাই, অনীনদিতা আপু, প্রিন্স হেক্টর, দায়িত্ববান নাগরিক, স্বর্ণা আপু, শায়মা আপু, জনৈক গন্ডমূর্খ....
"অনীনদিতা তুমি কার আমার নাকি অপু তানভীরের"