রিদীতা- ইয়েস ম্যাডাম।
রোল নং- ২
অপু তানভীর- ইয়েস ম্যাডাম।
............ব্লা ব্লা ব্লা..............
রোল নং-৫৭
আমি- ইয়েস ম্যাডাম।
Anyway, আমি রাজনীল...রাজনীল চৌধুরী...৯ম শ্রণী... বাবার সরকারী চাকরীর সুবাদে প্রতিবছর স্কুল চেন্জ করাটা আমার কাছে এখন ছোটোখাটো বেশ বড় ধরনের এ্যাডভেন্চারে পরিণত হয়ে গেছে.... যদিও পুরাতন বন্ধু, স্মৃতি ছেড়ে আসতে খুব কষ্ট হয় তবুও নতুন পরিবেশ কে চ্যালেন্জ হিসেবে নিতে খারাপ লাগে না......
প্রতিবছর ১ম চ্যালেন্জ থাকে "ফার্স্ট বয়" কে ভড়কে দেওয়া..... ও-মা একি



রুটিন মাফিক আমি ১ম দিনই পেছনের বেন্চে বসার সুবাদে কয়েকটা পাংখা দোস্ত জুটিয়ে ফেললাম

অপূর্ণ, অচিন, মাক্স বরাবরের মত পেছনের বেন্চে বসলেও ২য় দিন আমি ২য় বেন্চে ঠিক অনীনদিতার পেছনে বসে ওদের তাক লাগিয়ে দিলাম

অপূর্ণ তো আমার কাছে এসে বলেই বসল, কি মা্ম্মা, ঘটনা তো সুবিধার মনে হচ্ছে না,.. তুমি তো দেখি মাম্মা "একের মাল"

রিদীতা শুনে ফেলবে ভেবে আমি ব্যাগটা রেখে অপূর্ণ কে নিয়ে পেছনে চলে আসলাম.....
পেছনে আসা মাত্রই অপূর্ণ, অচিন আর মাক্স আমাকে রিমান্ডে বসিয়ে দিলো..

মাক্স তর্জনী উচিয়ে বলল, শালা আমরা ক্লাস সিক্স থেকে নাইন পর্যন্ত লাইন মেরে আজ পর্যন্ত ওর সাথে একটা কথা পর্যন্ত বলতে পারলাম না আর তুমি কোথা থেকে উইড়া আইসা খই ভাইজা চইলা যাবা

আমি ওদের শান্ত করে দিয়ে বললাম, ধুর শালা আমি রিদীতা পেছনে লাগলাম এইটা তোদের কে বলল, আমি তো লাগছি শালা অপু তানভীরের পেছনে.... ও-মা এ-কি ম্যাজিকরে বাপ "এ-দেখি সিংগারার ভেতরে আলু, কেমতে-কি"

অচিন কৌতুহল বশত বলেই ফেলল

অপু কি করল মানে, কাল থেকেই তো দেখছি ঐ শালা সারাক্ষণ রিদীতা পেছনে আঠার মত লেগে আছে, রিদীতার সাথে ওর এতো কি আলাপ, আমরা কি পেছনে বসে বসে আঙ্গুল চুষবো নাকি রে

অচিন বেশ শক্ত গলায় বলল

ও-মা ম্যাজিকের মত অপু পেছনের বেন্চে এসে হাজির ..... মনে হল যেন আলাউদ্দীন তার চেরাগের দৈত্য কে ডাকল ... আর দৈত্য এসে বলল ,,, "বান্দা হাজির"

Hi অপু, আমি রাজনীল বলেই হাতটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম..... ও-তো আকাশ থেকে পড়ে গিয়ে বলল, তুমি আমার নাম জানলে কি করে...
আরে তুই আমার নাম না জানলেও আমি তোর নাম ঠিকই জানি.... বলতো কেন?
অপু একটু যেন রেগে গিয়ে বলল , কেন?
কারন তুই রিদীতার ভাল বন্ধু তাই... আচ্ছা তুই ওর বন্ধু ঠিক আছে, তাই বলে কি সারাক্ষণ ওর আচল ধরে ঘুরতে হবে নাকি

অপু তো রাগে কিছুটা ফুলে গিয়ে আমার দিকে এমন করে তাকালো, যে জাফর স্যারের ভাষায় বলতে গেলে বলা লাগে মানুষের চোখ দিয়ে যদি আগুন বের হতো তাহলে আমি এতক্ষণে ভস্ম হয়ে যেতাম....আর ভারী গলায় বলল তুই কি বলতে চাইছিস্

কি আর বলব, বলছি অনেক তো ঘুরলি এখন আমাদের একটু সুযোগ-টুযোগ দে .... আর সবচেয়ে বড় কথা তুই ওর সাথে ঘুরলে জীবনেও ফার্স্ট হতে পারবি না

অপু এবার চোখ রাঙ্গিয়ে আমাকে বলল, ঐ খবরদার রিদীতার দিকে নজর দিবি না , ওকে আমি ভালবাসি


ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়ার আগেই ওকে সামনে পাঠিয়ে দিলাম, আর যাই হোক রিদীতা জেনে গেলে সর্বনাশ....
দেখতে দেখতে ১ম সাময়িক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো ..... অপু আগের মতই আছে রিদীতা পেছনে লেগে .... আমরা ব্যাকসিটেড বলে বেল পাচ্ছি না ......
রেজাল্টের পর আমি আর ব্যাকসিটেড থাকলাম না .... অপু ,রিদীতা , আর আমার পাংখা বন্ধুদের তাক লাগিয়ে দিয়ে আমি ফার্স্ট হয়ে গেলাম

রিদীতা এখন একটু একটু আমার সাথে মিশতে শুরু করেছে.... ও যেদিন প্রথম আমার অংক খাতা টা দেখতে চাইল সেদিন একটা শীতল রক্তস্রোত আমার গায়ের শিরদ্বার বেয়ে মাথায় উঠে গেল

অপু ও মাঝে মাঝে আমার সাথে লিয়াজো করতে আসে



ভাবছি একদিন রিদীতাকে বলেই ফেলব যে ..."রিদীতা তুমি কার আমার নাকি অপু তানভীরের".... যা হয় হবে!!!!
গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক......."Take it as fun only"
উৎসর্গ : আমার কিছু প্রিয় ব্লগার অপু তানভীর, অপূর্ণ, অচিন, মাক্স, গিয়াস-লিটন ভাই, অনীনদিতা....