একটি ধ্রুপদী আন্দোলনে তারুন্যের বিজয়
ওরা ফিরে গেছে ক্যাম্পাসে। একটি মৌলিক আধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ওরা নেমে এসেছিল ঢাকার
রাজপথে। ধানমণ্ডি, উত্তরা,মহাখালি, মীরপুর ,মোহাম্মাদপুর সহ সকল গুরুত্বপুর্ন রাজপথে ওদের
ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবীতে শান্তিপুর্ন সমাবেশ। হাতে ছোট ছোট ব্যানার , তাতে লেখা - NO VAT
পর পর তিন দিন ঢাকা শহর যান চলাচল বন্ধে অচল। দিন যাচ্ছে আন্দোলনের গতি বাড়ছে। পুলিশ
প্রশাসন গভীর ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে। সুধীসমাজ ,সরকার ,অভিভাবকবৃন্দ
সহ সকলে নির্বাক বিস্ময়ে সারাদেশে স্যাটেলাইট চ্যানেলের মাধ্যমে ঢাকার রাজপথে গভীর উৎকণ্ঠায় তাকিয়ে আছে, কি হবে কে জানে ?? আমরা ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের মিছিল দেখিনি , ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে ঢাকা শহরের ঐতিহাসিক জনসমাবেশ দেখিনি । তবে তরুন্ দের এই সমাবেশ দেখে সেদিনের ঢাকার রাজপথের কথা বারবার কল্পনায়
মনে ভেসে উঠছিল। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশান ফির ওপরে এই প্রথম বারের মত ভ্যাট
আরোপ এবং অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের এ প্রসঙ্গে অনড় অবস্থান কে কেন্দ্রকরে তরুন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ওপরে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবীতে রাজপথে শান্তিপুর্ন অবস্থান ও সমাবেশ ছিল একটি শক্তিশালী গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া । এদেশের তরুন্ শিক্ষার্থীদের সিংহ ভাগ বেসরকারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে। পিতামাতার কাছে তাদের যেমন শিক্ষাসহ সকল খরচ মেটানোর দাবী
থাকে,সরকার নাগরিকদের অভিভাবক বিধায় তরুণরাও সরকারের কাছে শিক্ষাখাতে ভ্যাটপ্রত্যাহারের দাবী তুলে আবেদন করেছিল। এক- দুদিন অপেক্ষা করার পরে সরকার তাদের সে দাবী সম্পুর্ন মেনে নিয়েছে । এক্ষেত্রে তরুনদের দাবী আদায়ের সাথে সাথে সরকারের ও একটি
কূটনৈতিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম গনতানত্রিক দেশে দাবীদাওয়া নিয়ে
শান্তিপুর্ন আন্দোলন এবং বিজয় অর্জন ভবিষ্যত প্রজন্মকে সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি অধিক আস্থাশীল করবে। ভবিষ্যত দেশ গড়ার দায়িত্ব এই তরুন্ দের হাতে। সেজন্য ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সঠিক
বলে আমরা মনে করি। একটি পরিশীলিত ধ্রুপদী আন্দোলনে তারুন্যের এই বিজয় কে সাধুবাদ
জানাই। সরকার এবং সরকার প্রধানকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৬