বাংলাদেশ একটা স্বাধীন ,সার্বভৌম রাষ্ট্র । এই রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসকারি সকল জনগনই দেশের নাগরিক । এ দেশের নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষার জন্য আছে সংবিধান। সংবিধান অনুসারে আছে জাতীয় সংসদ ও সংসদীয় পদ্ধতির সরকার। আছে শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ। জাতীয় সংসদে সরকার জনকল্যাণ মুলক বিভিন্ন আইন বিলের মাধ্যমে পাস করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় খুশী হলে জনগন পুনঃ নির্বাচিত করে। আর নাখোশ হলে অন্য দলকে ভোট দেয় । এটাই গনতন্ত্র চর্চার স্বাভাবিক নিয়ম। যদিও আমাদের দেশে এখনও গনতন্ত্র ক্ষমতার খোলস থেকে মুক্তি পায়নি । রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ইচ্ছের বৃত্তে গনতন্ত্র নিরাপদে আসন পেতে বসেছে। আর আইন গনতন্ত্রের মতই ক্ষমতাসীনদের সুক্ষ ও দক্ষ নজর দারীতে সঠিক দায়িত্ব পালন করছে বলে অনেকের অভিমত। গনতন্ত্রের এলিট খোলসের বাইরে যে কোটি কোটি সাধারন মানুষ যাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রতিদিন সংসার নির্বাহের খরচাপাতি আয় রোজগার করে বাসায় স্ত্রী সন্তানদের কাছে ফিরতে হয় । এর জন্য সময় অসময় , আইন ,হরতাল- অবোরোধ কিছুই মেনে চলা ইচ্ছে থাকলেও সম্ভব হয় না। সম্প্রতি ২০ দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধ- হরতল কর্মসুচি চলাকালে সাধারন মানুষ রুটি রুজির তাগিদে ককটেল, পেট্রোল বোমার ভয়াবহতাকে উপেক্ষা করে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে।এদের মধ্যে সাইকেল ,মোটর সাইকেল, রিক্সা, ইঞ্জিন ভ্যান ,ইজিবাইক ,প্রাইভেট কার , বাস, ট্রাকসহ সব ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন ও তাদের চালক এবং সহযোগীরাও আছে । এর মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেল চালিত সব ধরনের যান বাহন আছে। অবরোধে ২০ দলীয় নেতাদের নির্দেশে অনুগত দলীয় নেতা কর্মীরা সারা দেশে চোরা- গোপ্তা পেট্রোল বোমা ,ককটেল মেরে গাড়ী ও নিরীহ যাত্রীদের পুড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে । এই সুনির্দৃষ্ট কাজটি কে বা কারা করছে এটা সুস্পষ্ট। তাদের ঘটনা স্থলে পৌছনোর আগে প্রতিহত করা কোন অসম্ভব কাজ হতে পারে না। একটা অতি বেকারত্বের দেশে গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র একক এবং মিলিত ভাবে সহজে দ্রুত যান্ত্রিক সুবিধা ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কাজ মিটাতে যেখানে মোটর সাইকেল জীবনের অংশ হয়ে উঠেছিল ।
সেখানে পেট্রোল বোমা আক্রমন ঠেকাতে হঠাৎ পিছনে সাধারন যাত্রী বহনে নিষেধাজ্ঞা আসায় দেশে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবারের স্ত্রী সন্তান ছাড়া অনেক সদস্য আছে যারা বাড়ীর মোটর সাইকেলে চলাফেরা করেন। অনেক আত্মীয় স্বজন আছেন,অনেক প্রতিষ্ঠানে সহ কর্মী আছেন যারা নিয়মিত সঠিক সময়ে কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য শেয়ার করে খরচ দিয়ে দীর্ঘদিন এক বা একাধিক মোটর সাইকেল ব্যবহারকরে আসছেন । এতে সারা মাসে বেশ কিছু খরচ বাচে বলে অনেকে জানিয়েছেন। সীমিত আয়ের মানুষদের গ্রামে গঞ্জে দ্রুত চলাচলে মোটর সাইকেল এখন আর বিলাসিতা নয় । একান্ত প্রয়োজনীয় পরিবহনে পরিনত হয়েছে।একটা বৃহৎ বেকার তরুনশ্রেনী মোটর সাইকেল্ কে জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন হিসেবে এখন ব্যবহার করছে। অপরাধীদের ধরে সনাক্ত করে শাস্তি দেওয়া হোক আমরা চাই। আমরা আইন শৃংখলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে চাই। তবে সেটা দেশে বিদ্যমান আইনের আওতায় । নিরপরাধ সাধারন মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের ওপরে কোন প্রকার আইনি হস্তক্ষেপ স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করে। তাই কোন আইন হোক নাগরিক অধিকার সুরক্ষার জন্য , আইন রক্ষার জন্য নাগরিক যেন বিতর্কিত না হয়।