আজ মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ এসেছে দেশে। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। যে জীবন অনন্ত
লোকে চলে যায়, তিনি মুক্ত হয়ে যান। তাঁর বাস্তবে আর কোন দায় থাকে না । বেঁচে থাকতে তিনি ভাল- মন্দ যাই করুন না কেন, মৃত্যুই তাকে ইহলোকের সকল বন্ধন থেকে মুক্তি দিতে পারে । তাই কোন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে কোন রাজনীতি করা রাজনীতিবিদ দের জন্য কাম্য নয়। কোকোর মৃত্যু হয়েছে মালায়েশিয়ায়। বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের শাসনের সময় গ্রেফতার হয়ে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তিনি বিদেশে চিকিৎসার জন্য চলে যান। তার বিরুদ্ধে দুদকে মানি লন্ডারিং এর অভিযোগ ছিল ।
পরে তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হয় ও তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করা হয় । আইন অনুযায়ী রায় ঘোষনার সময় তাকে পলাতক দেখানো হয়। তাই জীবিত অবস্থায় তিনি দেশে ফিরতে পারেন নাই। এ বিষয়টাকে তার রাজনৈতিক দল বি এন পি বলেছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র , আদালত বলেছে দুর্নীতি ।আজ তিনি সৃষ্টি কর্তার নির্দেশেই অকালে মুক্ত হয়ে গেলেন।পিছনে এক বৃদ্ধা মাতার কাঁধে রেখে গেলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বোঝা সন্তানের লাশ। দুদিন আগে যে মৃত্যুকে ঘিরে শোকাহত বৃদ্ধা মাতা, সাবেক প্রধান মন্ত্রী ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতাকে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ অবস্থায় সান্তনা দিতে গিয়ে ছিলেন দেশের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হসিনা । দেশবাসী অধীর আগ্রহে গুলশান কার্যালয়ের ভিতরে ও বাইরে মিডিয়ার ক্যামেরায় চোখ রেখে ছিল।কিন্তু প্রধান মন্ত্রীকে দেখা করতে না দিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য করায় সকলে হতাশ হল। দেশে চলমান আন্দোলনের কারনে যে আতংক ও অস্থিরতা চলছে সাধারন মানুষ ভেবেছিল , শান্তিতে না হোক শোকের এই কঠিন পরিস্থিতে হয়তো বিরোধিতার কঠিন বরফ একটু হলেও গলবে । যা একদিন জাতিকে দুই নেত্রীর মধ্যে আলোচনার প্রত্যাশাটা পুরন করবে। কিন্তু রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারনে শোক ও সংগ্রামের রাজনৈতিক ভাষা একই বৃত্তে আট্কে গেল । শোকাহত একজন বৃদ্ধা মাতাকে রাজনীতির কঠিন অবরোধের মধ্যেই অবরুদ্ধ রাখা হোল, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য শুভফল দিবে না । আমরা এই মুহুর্তে মৃতের আত্মার শান্তি কামনা ও শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাই।