ঢাকায় মত্ত হাওয়া বইছে, তা উত্তুরে না দখিনা, ঠাওর করা যাচ্ছে না। হাওয়ায় একটা ভেজা গন্ধ, বসন্তের স্পর্শ নেই। যদিও বাসন্তী আমের মুকুলের সুবাস উড়ছে থেকে থেকে।
চলছে ভ্রাম্যমাণ 'বইখাতা কাগজ পেপার বিক্রি', 'বড় ইলিশমাছ বিক্রি' হাঁকডাক, যন্ত্রযানের সন্ত্রাসী শব্দ, ইমারত নির্মাণের শ্রুতিক্লিষ্টতা। তার মাঝেও আপন স্থান করে নিয়েছে দু তিনটির চড়ুইর কিচিরমিচির নাচন, কাকের কর্কশতা আর শহুরে শালিকের কাকলি, পোষা পায়রার ডানা ঝাপটানি।
দুপুরবেলার আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে আছে ধোঁয়াটে মেঘে। আজকের দুপুরকে কেবল অলস নয়, লাগছে উদাস, উন্মনা, উদাত্ত।
কারণ হাওয়ায় ভাসছে বর্ষারেণু।
ঝমঝম বৃষ্টির একঘেয়ে কিন্তু চনমনে একটা কল্পনা সেই ভেজা হাওয়ায় ভেসে আসছে।
নিঃসঙ্গ তবুও নৈসর্গিক একটা পাহাড়, সেই পাহাড় ঘিরে নাচতে থাকা মেঘমালা, মেঘের রূপান্তর, বৃষ্টির জলছাঁট- যেন নির্বাক আহবান করছে।
একাকী, তবুও স্রোততরঙ্গ আর তার কল্লোল মিলে উচ্ছ্বসিত সমুদ্র, তার জমিনে মিশে যাওয়া বৃষ্টির জলশব্দ, মেঘ আর সমুদ্রের মিলিত ছন্দ- যেন সুরে সুরে গাইছে, ডাকছে।
একটা পাহাড়ি দ্বীপ, তার এই অচঞ্চল সন্তান পাহাড় আর এই শান্তমিতা সমুদ্র, তাদের নিয়ে একাকী আসন পেতে আছে এই অবনীর কোন এক প্রান্তে, কার যেন প্রতীক্ষায়। সেকেন্ড যাচ্ছে, মিনিট যাচ্ছে, ঘন্টা যাচ্ছে, প্রহর অতিক্রান্ত, তবু দ্বীপটি অভ্যর্থনায় অপেক্ষারত।
কিন্তু কেউ জানে না, শহুরে বাস্তবতার সেই দুপুরের ম্লান মেঘে সেই কবেই হারিয়ে গেছে কাল্পনিক দ্বীপের এক বর্ষণস্নিগ্ধ দুপুর।