যতবার খুব সাজিয়ে কিছু করতে যাই কোথায় যেন থেমে যায়। গতিময় পথ চলা মসৃণ হয় না কখনওই। কিছু একটা বাধা ডিঙ্গানো ছাড়া।
যে কাজটা এক লহমার তা আটকে যায় কোন শূন্যতার মুখোশে। দেখা যায় না কোন শেষ। শুধু অপেক্ষার পালা এক বিরান তেপান্তরে।
চোখ মুদে বসে থাকি। চারপাশে প্রচণ্ড কোলাহল এড়িয়ে; ভাবি সমুদ্রপাড়ের গল্প। মগজের কোষে কোষে গেঁথে নেই খোলা হাওয়ার জানালা।
বয়ে যায় সমস্ত চঞ্চলতা, কীট পতঙ্গ জলের গড়িয়ে যাওয়া থেকে, বাতাসে মেঘের ভেলা ভাসা। দৌড় ঝাঁপে ব্যাস্ত পথ, শেষ হয়ে গেল সব কিছু এমন তাড়নায় ছুটছে লোকজন। সময়ের ঘড়ি কান ধরে টানছে। কিন্তু কিছুই যদি না আগায় তবে এমন লাফ ঝাঁপ পেরে লাভ কী। আমি তাই ধ্যান মগ্ন হই। ভিতর থেকে সব উত্তেজনা, অস্থিরতা চঞ্চলতা উড়িয়ে দিয়ে পাহাড়ের মতন নিঃশব্দ মৌনতায় আসন পেতে বসে থাকি।
টগবগে ঘোড়ার মতন সবল সতেজতায় ছোটে গেল কিছু স্বপ্নময় কিশোর কিশোরী পাশ দিয়ে দূরন্ত পথ চলায় সাথে কথার ফুলঝুরি ঝরিয়ে। অস্থির ব্যাস্ততায় হাঁটছে কিছু খিটখিটে মধ্য বয়সি। চোখ, মুখ, কপাল কুচকে যত বিরক্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে চারপাশে। তবে চোখের তারা লোলুপ ঝুলে আছে এর মাঝেও যুবতী, কিশোরীর দেহে। আর আছে অবহেলার তাচ্ছিল পাশের মধ্য বয়সি নারীটির জন্য।
ছন্নছাড়া বিভিন্ন রকম তাড়াহুড়ার মাঝে হুড়মুড়িয়ে একটা আতংকময় শব্দ জাগল। অনেক পায়ের শব্দের সাথে একটি আর্তনাদ মিশে গেল ধুলার পাশ থেকে আকাশের কুলে।
আর্ত চিৎকার ঘন থেকে ঘন দ্রুত থেকে দ্রুততর হলো আরো কাছে বাজতে থাকল দামামার মতন। নিস্তরঙ্গ শান্ত জলের মতন ধ্যানমগ্ন থাকা হলো না, পাহাড়ের অনড়তা কাটিয়ে চোখের পাতা টান হলো শব্দের দিক নির্দেশনায়।
আহ্ ! অন্তর কাঁপিয়ে একটি চিৎকার, আর্ত চিৎকারের সাথে মিশে গেল আমার মুখ থেকেও ভয়ার্ত শরীর হীম করে।
ফিনকি দিয়ে লাল রক্তের ধারায় রঞ্জিত হচ্ছে আমার চারপাশ। টগবগে এক যুবক তড়পাচ্ছে জবাই করা মোরগের মতন ভূতলে। উল্লাসে আরেকদল ছুরি লাঠি হাতে দারুণ এক কর্ম সেরে স্বস্থির আনন্দে খেলা জিতার উচ্ছ্বাসে চলে গেল।
স্থীর হয়ে যাওয়া দেহর দিকে তাকিয়ে আমার মনে হলো একটা কাজ মাঝ পথে থেমে থাকলে শেষ হবে আশা করা যায় একটা দেহ থেমে গেলে আর কোন আশাই থাকে না। অস্থিরতার কিছু নেই...........