প্রথম মত : কোরবানি ওয়াজিব।
ইমাম আওযায়ী, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানীফা রহ. প্রমুখের মত এটাই। আর ইমাম মালেক ও ইমাম আহমদ রহ. থেকে
একটি মত বর্ণিত আছে যে তারাও ওয়াজিব বলেছেন।
দ্বিতীয় মত : কোরবানি সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
এটা অধিকাংশ উলামাদের মত। এবং ইমাম মালেক ও
শাফেয়ী রহ.-এর প্রসিদ্ধ মত। কিন্তু এ মতের প্রবক্তারা আবার বলেছেন : সামর্থ্য থাকা অবস্থায় কোরবানি পরিত্যাগ করা মাকরূহ। যদি কোন জনপদের লোকেরা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সম্মিলিতভাবে কোরবানি পরিত্যাগ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করা হবে। কেননা, কোরবানি হল ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন।[১৬]
• যারা কোরবানি ওয়াজিব বলেন
তাদের দলিল :
(এক) আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন :
ﻓَﺼَﻞِّ ﻟِﺮَﺑِّﻚَ ﻭَﺍﻧْﺤَﺮْ
'তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও পশু কোরবানি কর।'[১৭] আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশ পালন ওয়াজিব হয়ে থাকে।
(দুই) রাসূলে কারীম স. বলেছেন :
ﻣﻦ ﻭﺟﺪ ﺳﻌﺔ ﻭﻟﻢ ﻳﻀﺢ، ﻓﻼ ﻳﻘﺮﺑﻦ ﻣﺼﻼﻧﺎ . ﺭﻭﺍﻩ
ﺃﺣﻤﺪ ﻭﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ، ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ .
'যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না সে যেন
আমাদের ঈদগাহের ধারে না আসে।'[১৮]
যারা কোরবানি পরিত্যাগ করে তাদের প্রতি এ হাদিস একটি সতর্ক- বাণী। তাই কোরবানি ওয়াজিব।
(তিন) রাসূলে কারীম স. বলেছেন :
ﻳﺎ ﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ : ﺇﻥ ﻋﻠﻰ ﻛﻞ ﺃﻫﻞ ﺑﻴﺖ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻋﺎﻡ
ﺃﺿﺤﻴﺔ . . ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ ﻭﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ৩১২৫ ، ﺣﺴﻨﻪ
ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ
হে মানব সকল ! প্রত্যেক পরিবারের দায়িত্ব হল প্রতি বছর কোরবানি দেয়া।[১৯]
• যারা কোরবানি সুন্নত বলেন তাদের দলিল :
(এক) রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন :
ﺇﺫﺍ ﺭﺃﻳﺘﻢ ﻫﻼﻝ ﺫﻱ ﺍﻟﺤﺠﺔ، ﻭﺃﺭﺍﺩ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﺃﻥ ﻳﻀﺤﻲ،
ﻓﻠﻴﻤﺴﻚ ﻋﻦ ﺷﻌﺮﻩ ﻭﺃﻇﻔﺎﺭﻩ، ﺣﺘﻰ ﻳﻀﺤﻲ . ﺭﻭﺍﻩ
ﻣﺴﻠﻢ ১৯৭৭
'তোমাদের মাঝে যে কোরবানি করতে চায়, যিলহজ মাসের চাঁদ
দেখার পর সে যেন কোরবানি সম্পন্ন করার আগে তার কোন চুল ও নখ না কাটে।'[২০]
এ হাদিসে রাসূল স.-এর 'যে কোরবানি করতে চায়' কথা দ্বারা
বুঝে আসে এটা ওয়াজিব নয়। (দুই) রাসূল স. তার উম্মতের মাঝে যারা কোরবানি করেনি তাদের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছেন। তার এ কাজ দ্বারা বুঝে নেয়া যায় যে কোরবানি ওয়াজিব নয়।
শাইখ ইবনে উসাইমীন রহ. উভয় পক্ষের দলিল-প্রমাণ উল্লেখ করার পর বলেন: এ সকল দলিল-প্রমাণ পরস্পর বিরোধী নয়
বরং একটা অন্যটার সম্পূরক। সারকথা হল যারা কোরবানিকে
ওয়াজিব বলেছেন তাদের প্রমাণাদি অধিকতর শক্তিশালী। আর
ইমাম ইবনে তাইমিয়ার মত এটাই।