কপিবিদ্যা মহাবিদ্যা, না পড়িলে ধরা।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
নাটকের নামঃ উদ্দেশ্য
অভিনয়েঃ তাহসান, মিম
রচনা, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ্।
নাটকটির গল্পে দেখা যায়, অনিমা কোন এক ছাদের ট্যাংকির উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার চেহারায় বিষন্নতার ছাপ। পরবর্তিতে ফ্ল্যাশব্যাকে দেখা যাবে, অনিমা একজন পুলিশ কর্মকর্তা। একদিন সকালে পার্কে জগিং করতে গিয়ে দেখে এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাই হয়েছে। তৎক্ষণাৎ ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করে সে। কিন্তু ভুল বশত জারিফ নামের অপর একজনকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে জারিফকে ছেড়ে দেয় মিম। জারিফও থানা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় অনিমাকে যা ইচ্ছা তাই বলে যায়।
এদিকে গল্প অন্যদিকে মোড় নেয়, অনিমা এবার জারিফকে কিডন্যাপ করে দুঃখ প্রকাশ করার জন্যে। এরপর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। হঠাৎ একদিন রাতের বেলায় এক সন্ত্রাসীকে ধাওয়া করে সে। এসময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। এক পর্যায় অনিমার পিস্তল থেকে গুলি বের হয়ে ভুল বশত জারিফের বুকে লাগে এবং জারিফ মারা যায়। তারপর থেকে অনিমা নিজেকে দোষী মনে করে আর অপরাধ বোধ তাকে গ্রাস করে। আর এভাবেই নাটকটির গল্প এগিয়ে যেতে থাকে।
নাটকটার রচনা, চিত্রনাট্য ইত্যাদিতে মাবরুর রশিদ বান্নাহ্ না লিখে কপি লিখে দেয়াটাই শ্রেয়। কারন হুবুহু কপি করেছে ২০০৪ সালের কোরিয়ান মুভি Windstruck কে।
হাসি পেলো ললনাদের হার্ট থ্রব তাহসানকে কপি করা একটা ক্যারেক্টারে অভিনয় করতে দেখে। এরা ভাবে কি?? আমরা বাহিরের মুভি টুভি সমন্ধে কোন জ্ঞান রাখি নাহ?? কপি যখন করেছেই তখন এটা উল্লেখ করে দিলে কি নাটকের দর্শক কমে যেতো??
আমি রোমান্টিক মুভির ফ্রিক নাহ। তবে সেটা যদি হয় কোরিয়ান, তাহলে আমি রাত জাগতে রাজি আছি। ওদের চেয়ে ভালো রোমান্টিক মুভি কেউ বানায় নাই, বানাতে পারবেও নাহ। যাহোক, যেই মুভিটাকে কপি করলো সেটার কাহিনীটা একটু বলি। তাদের জন্য যারা দেখেন নি মুভিটা।
Windstruck (2004)
আমার অন্যতম পছন্দের মুভিগুলোর একটি। পুরো মুভিটা ২ ঘন্টা তিন মিনিটের।
মুভিটার শুরুর দিকে দেখা যায় এক তরুনী ছাদের কিনারে বিষন্ন মনে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটার নাম Kyungjin (বাংলায় স্পেলিং করতে পারি নাহ )।,
Kyungjin একজন পুলিশ অফিসার। নায়কের নাম Myungwoo। সে পেশায় স্কুলের একজন ফিজিক্স টিচার। একদিন সকালে এক মহিলার পার্স ছিনতাই হয়ে গেলে Myungwoo তার পিছু পিছু দৌড়াতে থাকে। Kyungjin সেটা দেখে ভুলবশত Myungwoo কে ছিনতাইকারী ভেবে বসে। তারপর ছিন্তাইকারী ভেবে ধরে ফেলে Myungwoo কে। রাস্তার মধ্যে প্রহার শুরু করে Myungwoo কে। থানায় নেবার পর Myungwoo ছিন্তাইকারীর চেহারা একে দেখায়। এতে অবশেষে ছাড়া পায় সে।
তবে Myungwoo রাস্তায় ওই মহিলার ছিনতাই হওয়া ব্যাগটা দেখতে পেয়ে হাতে তুলে নিলে সেই মহিলা পুলিশ অফিসার আবার তাকে ধরে ফেলে এবং থানায় নিয়ে আসে। তবে ততক্ষণে Myungwoo এর আকা চেহারার সাথে মিলিয়ে আসল ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলা হয়েছে।
এবার Myungwoo পুলিশ অফিসারকে তাকে সরি বলতে বলে। জবাবে Kyungjin বলে, "আমার ডিকশনারিতে সরি বলে কোন শব্দ নেই। যদি তোমার সরি শুনতে ইচ্ছে করে তবে তোমার নামটা Myungwoo থেকে পালটে Sorry রাখো"
এভাবেই পরিচয় তাদের।
একদিন Kyungjin ড্রাগ ডিয়েলারদের পিছু নেয়। সাথে Myungwoo কে আসতে বলে। Myungwoo আসতে রাজি না হওয়াতে Kyungjin তার নিজের হাতের সাথে Myungwoo এর হাত হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকিয়ে নেয়। বাধ্য হয়ে Myungwoo তার সাথে হাটতে থাকে।
তারপর থেকে একসাথে সময় কাটাতে থাকে তারা। সময় কাটাতে কাটাতে ভালোবেসে ফেলে একে অপরকে।
নায়ক একদিন নতুন গাড়ি কিনে ওকে নিয়ে ভ্রমনে যায়। ভ্রমন থেকে ফেরার পথে বৃষ্টির কারনে পাহাড় ধ্বসে পড়াতে ওদের গাড়ি নদীতে পড়ে যায়। নায়ক জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। নায়িকা পানিতে ডুবে যাওয়া গাড়ি থেকে নায়ককে বের করে ডাঙায় নিয়ে আসে। নায়কের বুকে চাপা দিয়ে, মুখ দিয়ে বাতাস দিয়ে তাকে বাঁচাবার জন্য পাগলের মত কাঁদতে কাঁদতে চেষ্টা চালাতে থাকে। মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সাথে এই দৃশ্যটা জাস্ট অসাধারন। যাহোক, নায়িকা অবশেষে বাঁচাতে সক্ষম হয় নায়ককে।
তারপর একদিন নায়ক রেস্টুরেন্টে অপেক্ষা করতে থাকে নায়িকার জন্যে। কিন্তু গুরুতর এক ক্রিমিনালের পিছু নেয়াতে আসতে পারে নাহ Kyungjin। নায়ক ছুটে যায় ওকে সাহায্য করার জন্য। এক পর্যায়ে ভুলবশত নায়িকার সাথের অন্য পুলিশ অফিসারের গুলি গিয়ে লাগে Myungwoo এর বুকে। তবে নায়িকা ভাবে গুলিটা সে করেছে। Myungwoo মারা যায়। Kyungjin ওর মৃত্যুর পর অনেকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
Myungwoo মারা যাবার অনেকদিন পর আবারও ক্রিমিনালের পেছনে ছুটতে দেখা যায় Kyungjin কে। এবার তার সাথে রয়েছে সেই অফিসার যে ভুলে Myungwoo কে গুলি করেছিলো। দৌড়াদৌড়ির এক পর্যায়ে বুকে গুলিবিদ্ধ হয় Kyungjin। হাসপাতালে তার সাথের সেই পুলিশ অফিসারটি বার বার সত্যটা বলার চেষ্টা করে যে Myungwoo কে সে গুলি করেছিলো।
শেষের দিকে দেখা যায় নায়িকা তার জানালা খুলে বাতাসের মধ্যে Myungwoo কে খুজছে। ঠিক যেভাবে Myungwoo বলেছিলো,"জানো, আমি আমার আগের জনমে বাতাস ছিলাম। আমি যখন থাকবো না তখন আমাকে বাতাসের মধ্যে খুজো। আমি মরে গিয়ে আবার বাতাস হয়ে যেতে চাই।"
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন