প্রবল ব্যথায় জেগে উঠলো মিতু । ঘেমে পুরো শরীর ভিজে গেছে । গলা শুকিয়ে কাঠ । সে কি আবার এসেছে ?
-মিতু, হঠাৎ অস্পষ্ট সরে কেউ বলে উঠলো । শুনে আতংকে লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে বসলো মিতু । গলাটা তাঁর খুব চেনা । ভয়ে ভয়ে দরজার দিকে তাকাল সে । জমাট অন্ধকারে প্রথমে কিছু না দেখতে পেলেও বুঝতে পারলো কে সেখানে আছে । তখনি অন্ধকার সরে গিয়ে সেখানে জায়গা করে নিল একরাশ নীল কুয়াশা । ধীরে ধীরে সেখানে ভেসে উঠলো এক মানব অবয়ব । প্রচন্ড ভয়ে জ্ঞান হারানোর উপক্রম হলো মিতুর । অবয়বটা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে । আরেকটু কাছে আসতেই জানালার ফাঁক দিয়ে আসা হালকা আলোয় মিতু অবয়বটার মুখ দেখতে পেল । অসম্ভব সুন্দর এক তরুণের মুখ । কিন্তু সেখানে ভয়ানক নিষ্ঠুরতার চাপ স্পষ্ট । আবারও অবয়বটি বলে উঠলো -মিতু । আতংকে মিতুর মুখ দিয়ে বিচিত্র শব্দ বের হলো । -নাম বলো , ঠান্ডা স্বরে বলল ভয়ানক অবয়বটি । আরও এক পা মিতুর দিকে এগিয়ে গেলো সে । -নাম বলো । মিতুর একদম পাশে এসে দাঁড়ালো সে । মিতু বুঝতে পারলো এখন কিছু না করলে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী । অবয়বটা একদম কাছে এসে দাঁড়ালো । এতো কাছে যে অবয়বটার শীতল নিশ্বাস নিজের গায়ের উপর অনুভব করতে পারছে । -নাম বলো , শেষবারের মতো বলল অশরীরীটা । বহুকষ্টে মিতু বলল - ফাইয়াজ। সিদ্দিকী ফাইয়াজ । সঙ্গে সঙ্গে অবয়বটা ভয়ানক শব্দে হেসে উঠলো । মনে হলো সে নতুন শিকার পেয়েছে । মিতুর দিকে চেয়ে হাসি থামিয়ে ভোজবাজির মতো অদৃশ্য হয়ে গেলো সে নতুন শিকারের সন্ধানে । অবয়বটা চলে যাবার পর ধীরে ধীরে শান্ত হলো মিতু । কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে সে নিজেই বুঝতে পারে না । পরদিন ভোরে বাবার চিৎকারে ঘুম ভাঙে মিতুর । বাবা উত্তেজিত ভঙ্গিতে কথা বলছেন । হাতে তার মিষ্টির প্যাকেট । বাবা চেচিয়ে বলছে ' মিতু মা আমার আজ থেকে তোকে আর আতংক নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে হবে না । পাড়ার মাস্তান ফাইয়াজকে কে যেন মেরে নর্দমায় ফেলে দিয়েছে । পাড়ার লোক মিষ্টি খাওয়াচ্ছে পরস্পরকে । '
(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯