দুইহাজার সালের আগের ঘটনা । রাজদীঘি গ্রাম । তখনকার সময় পুলিশ-আর্মি এগুলো শুধু বড় বড় শহরগঞ্জের বিলাসিতা ছিল । রাজদীঘির মতো গ্রামের লোকজনকে কিংবদন্তি পুলিশদের চোর ধরার ঘটনা শুনেই সন্তুষ্ট থাকতে হতো । ফলাফল দিনে দুপুরে দস্যু কতৃক হামলা । আর রাতের বেলা তো কথাই নেই । গ্রামের যুবক ছেলেরা মিলে লাটিয়াল বাহিনী বানালেও দুঃসাহসিক লুটেরাদের কাছ থেকে রেহাই নেই । অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে সামনে যা পাই তা লুট করে নিয়ে যায় । সোনাদানা, যুবতি মেয়ে কেউই তখন নিরাপদ ছিল না । মাঝে মাঝে লুটেরাদের সাথে লাটিয়ালদের সংঘর্ষে কিছু লাশও পড়তো । তখন হয়তো টাকার লোভে কিছু পুলিশ এসে হাজির হতো ।
দিনে দিনে অবস্থার অবনতি হচ্ছিল । যখন তখন দস্যুরা এসে হাজির হয় । আরেকটু ভালো থাকার জন্য গ্রামের কিছু লোক ভিটেমাটি ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যায় । তাদের দেখাদেখি আরো অনেকে চলে যেতে শুরু করে । গ্রামের মুরুব্বীরা দেখলো এভাবে চলতে থাকলে গ্রাম জনশূন্য হয়ে যাবে । মাইলের পর ধানী জমি কে দেখবে তখন ? বহুচিন্তাভাবনা করে রাজদীঘি গ্রামের মুরুব্বীরা টিক করলো আর নয় । এবার কিছু একটা করতে হবে ।
রাজদীঘি গ্রাম থেকে মাইল পঞ্চাশেক দূরে নিয়তপুর গ্রাম । রাজদীঘি গ্রামের সকল মুরুব্বীরা হাজির হলো নিয়তপুরে । তানবাদশার দরবারে । সকলের আশা তানবাদশাহ হয়তো এই সমস্যার সমাধান দিতে পারবে । তখনকার সময়ে তানবাদশার মতো যাদুকর খুঁজে পাওয়া যেত না । অসম্ভব ক্ষমতা সম্পন্ন এক লোক ছিল সে । যদিও কেউ কেউ মনে করে সে লোক ছিল না । জিন গোত্রের কেউ হয়তো হবে । তানবাদশার ক্ষমতার একটা উদাহরণ দিচ্ছি । একবার গ্রামের সকল লোকের সামনে সে পানির উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে নদী পার হয়েছিলো ।
যায়হোক রাজদীঘি গ্রামের মরুব্বীরা সব কিছু তানবাদশাহকে খুলে বলল । সব শুনে তানবাদশাহ বলল আর এমন হবেনা । সে তার অনুগত জিনদের মধ্যে কয়েকজন জিনকে গ্রাম পাহারার জন্য পাঠিয়ে দিবে । এটা শুনে রাজদীঘি গ্রামের লোকজন সন্তুষ্ট হয়ে গ্রামে ফিরে আসে ।
এরপর থেকে সত্যি সত্যি রাজদীঘি গ্রামে ডাকাতি গায়েব হয়ে যায় । গভীর রাত্রে নাকি অনেকে দেখতে পাই কালো ঘোড়ায় চড়ে সাদা আলখেল্লা পড়া কিছু লোক গ্রাম পাহারা দিচ্ছে । এরা নিশ্চয় তানবাদশার পাঠানো জিনের দল । কোনো কোনোদিন গ্রামের লোকজন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেত গ্রামের রাস্তার সামনের গাছগুলোতে লুটেরাদের লাশ ঝুলছে । এরা নিশ্চয় গ্রামে লুটপাট চালাতে এসেছিল । জিনেরা ধরে ব্যাটাদের মজা দেখিয়েছে । এরপর থেকে গ্রামে ডাকাতি বন্ধ ।
[বি দ্রঃ আপনারা যারা মনে করছেন এগুলো সব গল্প তাদের বলছি এখনো গভীর রাতে পাহাড়াদার জিনদের দেখতে পাওয়া যায় । ]
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:০২