এই পোষ্টের প্রতিটি ঘটনা সত্যি।
ঘটনা-১ : একবার এক বন্ধুর সাথে কারওয়ান বাজারে গিয়েছিলাম মিষ্টি কিনতে। বন্ধুটি তাঁর পরিচিত এক দোকানে ঢুকলো। বলা বাহুল্য সেই দোকানের মিষ্টি আমার কাছে অসম্ভব ভাল লেগেছিল। তারপর থেকে নিয়মিত সে দোকানে যায়। এভাবে নিয়মিত যাতায়াতের ফলে সেই দোকানের দোকানী আজহারের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। একদিন একটু রাত করে সেই দোকানে গেলাম৷ গিয়ে দেখি দোকান পুরো খালি,আর আজহার দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি মিষ্টি চেয়ে পাঠালাম কিন্তু সে বলল মিষ্টি নেই। অথচ কাঁচের র্যাকে প্রচুর মিষ্টি রাখা। সেদিকে ইশারা করতেই আজহার বলল সেটা আমার জন্য নয়। আগেই বলেছি লোকটি আমার বন্ধুর মতো,তাই একটু চাপ দিতেই বললো র্যাকে যে মিষ্টি রাখা সেগুলো গভীর রাত্রে 'তেনারা' এসে খান।
যদি মিষ্টি না পায় তাহলে পুরো দোকানে ভাঙচুর চালাতে পারে। এটা শুনে আমি হেসে উঠলাম। আজহার আমার সামনে দোকান বন্ধ করে বলল 'তোমারতো বিশ্বাস হয়না। কাল ভোরে এসো' বলে চলে গেল। পরদিন খুব ভোরে সে দোকানের সামনে এলাম। যথারীতি দোকান বন্ধ।কিছুক্ষণ পর আজহার এসে দোকান খুলতেই দেখলাম র্যাক পুরো খালি। একটা মিষ্টিও নেই। তখন দোকানী আজহার মুচকি হেসে বললো 'এবার বিশ্বাস হয়েছে?'।
ঘটনা ২ : এই ঘটনাটি পার্বত্য চট্রগ্রামের ।সেখানকার পাহাড়ের নিচের এক গ্রামের লোকজনের সাথে ঘটনাটি কয়েকশো বছর ধরে ঘটে আসছে। গোপনীয়তার কারণে সেই গ্রামের নাম বলছিনা। গ্রামটার লোকজন মূলত কৃষিকাজ করেই জীবন কাটায়। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো প্রতিবার ফসল তোলার পূর্বে গ্রামের লোকজন এক শতবর্ষ পুরোনো অশ্বত্থ গাছের নিচে অশরীরীদের উদ্দেশ্যে খাবার নিবেদন করে। এটাকে স্থানীয় ভাষায় "ভোগ" বলা হয়। যদি কখনো "ভোগ" না দেওয়া হয় তাহলে নাকি সমস্ত ফসল পোকা খেয়ে ফেলে। এমনবহুবার ঘটেছে যে তারা শীতকালীন ফসল তুলবে কিন্তু "ভোগ" দেয়নি। অতঃপর তাদের সমস্ত ফসল ঘরে তোলার আগেই পোকা আক্রমণ করে খেয়ে ফেলেছে।
ঘটনা-৩ : এই ঘটনাটি শুনেছি গ্রামের এক চাচার কাছে। উনি অত্যন্ত ধার্মিক এক লোক। যৌবনে স্টেশন মাষ্টার হিসেবে কাজ করতেন। উনি যে স্টেশনে কাজ করতেন সঙ্গত কারণে সেটার নাম বলছিনা। কিন্তু স্টেশনটা কেমন ছিল তার একটা ধারণা দিচ্ছি। সাধারনত দেখা যায় যে রেল স্টেশনের নিকটে কোন বাজার কিংবা জনবসতি থাকে। কিন্তু ঐ স্টেশনের দুমাইলের মধ্যেও কোন জনবসতি বা হাটবাজার ছিল না। কারেন্ট তো অবশ্যই না। গ্যাস লাইট দিয়ে তখন আলো জ্বালাতে হতো। জায়গাটা এমনিতেই ভীষন নীরব। সন্ধ্যার পর জায়গাটায় কবরের নিস্তব্ধতা নেমে আসতো। আর সেই সাথে নেমে আসতো অশরীরীরা।আধার হলে চাচা তাঁর ঘরে ভেতর থেকে তালা মেরে বসে থাকতো। কেননা তখন স্টেশনে অশরীরীদের মেলা জমে গেছে। কে যেন হাঁটছে। গান গাইছে। কাঁদছে । চিৎকার করছে। এমন বহুশব্দ শুনতে পেত চাচা। কিন্ত জানালা একটু ফাঁক করে বাইরে তাকালে দেখা যেত সব খালি। কেউ নেই। তবে শব্দ কোথা থেকে আসতো?এমনকি একদিন চাচা গভীর রাতে উঠে শুনতে পান কে যেন ভয়ানক শব্দ করে বাইরে হাঁটছে। জানালা হালকা ফাঁক করে বাইরে তাকান। যা দেখেন তাতে জমে যান। অতিকায় এক অবয়ব রেল লাইনের মাঝখান দিয়ে হাঁটছে।দৈত্য বললেও এটাকে কম বলা হবে। এতো লম্বা যে মাথাটা ঠিকমতো দেখা যাচ্ছেনা।
তাই ভূতপ্রেতকে অবজ্ঞা করবেন না। করলে আপনিও হঠাৎ রাস্তাঘাটে গায়েব হয়ে যেতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৬:২৮