আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
তাকবীরে তাশরীকের মাসআলা
যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামায থেকে ১৩ তারিখের আসরের নামায পর্যন্ত (মোট ২৩ ওয়াক্ত) তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব।
এটা ফরয নামাযের পর প্রত্যেক বালিগ পুরুষ মহিলা, মুকীম, মুসাফির, গ্রামবাসী, শহরবাসী, জামায়াতের সাথে নামায পড়ুক বা একাকী পড়–ক প্রত্যেকের উপর একবার করে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করতে হবে। { ফাতাওয়ায়ে শামী, বাহরুর রায়িক।}
একবারের অধিক তাকবীর বলবে না কারণ, একের অধিক বলার কথা শরীয়তে নেই। { তাহতাবী. পৃষ্ঠা-২৯৪।}
তাবকীরে তাশরীক হচ্ছে
اللهُ اَكْبَرُ – اللهُ اَكْبَرُ، لَا اِلَهَ اِلَّااللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ – اللهُ اَكْبَرُ وَللهِ الْحَمْدُ -
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, ওয়ালিল্লাহিল হামদ্।
আল্লাহ মহান ! আল্লাহ মহান ! আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এবং আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। এবং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
যিল হজ্জ মাসের ৯ তারিখকে আরাফার দিন বলে, দশ তারিখকে ইয়াওমুন নাহার বা কুরবানীর দিন বলা হয়।
তাকবীরে তাশরীকের গোড়ার কথা
সহীহ্ আল বুখারীর ব্যাখ্যাকার আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী রহ. মবসুত ও কাজীখান কিতাবদ্বয় থেকে ‘হেদায়া ’ কিতাবের ব্যাখ্যা গ্রন্থে নকল করেছেন যে, হযরত ইবরাহীম আ. আপন পুত্র ইসমাঈল আ. কে যখন কুরবানী করতে শুরু কররেন, তখন হযরত জিবরাইল আ. আল্লাহর নির্দেশে বেহেশ্ত থেকে একটি দুম্বা নিয়ে রওয়ানা হলেন।
তাঁর সংশয় হচ্ছিল পৃথিবীতে পদার্পন করার পূর্বেই হযরত ইবরাহীম আ. যবেহ কার্য সম্পন্ন করে ফেলবেন।
তাই হযরত জিবরাইল আ. আকাশ থেকেই উচ্চস্বরে ধ্বনী দিতে থাকেন - الله اكبر- الله اكبر । হযরত ইবরাহীম আ. তাঁর আওয়াজ শুনে আকাশ পানে দৃষ্টি করে দেখতে পেলেন যে, উপস্থিত কুরবানীর বস্তু ইসমাঈল আ.-এর পরিবর্তে তিনি একটি দুম্বা নিয়ে আসছেন।
তাই তিনি স্বতস্ফুর্তভাবে বলে উঠলেন -لا اله الاالله والله اكبر পিতার মুখে তাওহীদের এ অমূল্যবাণী শুনতে পেয়ে হযরত ইসমাঈল আ. আল্লাহর মহাত্ম, মর্যাদা ও শান শওকতের উপর হামদ পেশ করে বললেন : الله اكبر ولله الحمد একজন মহান আল্লাহর ফেরেশতা, একজন নবী ও একজন ভাবী নবী এ তিন মহান ব্যক্তিত্বের খুশীর আবেগে উচ্চারিত এ আমলটুকু ও পবিত্র কালামগুলো আল্লাহর দরবারে এত বেশী কবুল হল যে, কিয়ামত পর্যন্ত ঈদুল আয্হায় বিশ্ব মুসলিমের কন্ঠে কন্ঠে উচ্চারিত হতে থাকবে।
তাকবীর সম্পর্কে আরো কতিপয় মাসায়েল
১. ইমাম তাকবীর বলতে ভুলে গেলে ও মুক্তাদীর তাকবীর বলা ওয়াজিব। { ফাতওয়ায়ে শামী ১ম খন্ড ৭৭৭ পৃষ্ঠা।}
২. পুরুষেরা তাকবীর উচ্চ-মধ্যম স্বরে আর মহিলাগণ অনুচ্চস্বরে বলবে। পুরুষ উচ্চ স্বরে না পড়ে আস্তে আস্তে পড়লে ওয়াজিব আদায় হবে না।
৩. মাসবুক তার নামায আদায় করে তাকবীর বলবে। { ফাতাওয়ায়ে শামী ১ম খন্ড-৭৮৬পৃষ্ঠা।}
৪. যদি মুসল্লী ফরয নামাযের পর তাকবীর বলতে ভুলে যায়। এবং কিছু কাজ করে ফেলে যার দ্বারা নামায নষ্ট হয়ে যায় (যেমন মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া, অথবা ভূলে বা ইচ্ছায় কথা বলা অথবা ইচ্ছা করে অজু ভঙ্গ করা) তবে তার উপর থেকে তাকবীর বলা রহিত হয়ে যাবে। { ফাতাওয়া শামী ১ম খন্ড, ৭৮৬পৃ।}
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৪৭