রাত ৩.৪৫ .........। হঠাৎ মোবাইলে ফোন। এত রাতে আমার ঘুমের যে ১২টা বাজাইছে মনে মনে টার ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলাম । ফোন রিসিভ করার পর ওপাশের কণ্ঠ শুনে আমার আইফেল টাওয়ার থেকে লাফাইয়া পরতে ইচ্ছা করতেছিল । একটা মেয়ে আমারে ফোন দিছে তাও আবার রাত ৩.৪৫ এ............।
মেয়েঃ হ্যালো, জান কি কর ?
আমিঃ (জীবনে প্রথম কোন মেয়ে আমাকে জান বলছে। এই কথা শুনে আমার ২০০ ওয়াটের ফিউজ বাল্ব বাত্তির রাজা ফিলিপ্সের মত আন্ধার ঘরে সূর্যের আলো ছড়াইল ) লিওনেল মেসি আর রোনালদোকে নিয়া টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলতাছি, আপনি খেলবেন ?
মেয়েঃ মেসি আর রোনালদোকে নিয়া আমার সাথে টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ম্যাচ কিভাবে খেলবা ?
আমিঃনা, ঠিক আছে তাহলে আপনার সাথে আমি দিবা-রাত্রির ফুল ম্যাচ খেলবো ।
মেয়েঃ যাহ্, দুষ্টু।
আমিঃ(একটা মেয়ের কণ্ঠে দুষ্টু শোনার আনন্দ প্রথমবার উপলব্ধি করলাম ) আপনি কে?
মেয়েঃ কালকের কথা এখন ও মনে নিয়ে বসে আছ? আর তুমি আমাকে আপনি আপনি করছ কেন জান?
আমিঃকালকের কথা !!!!! (আমিতো কালকে সিনেমা দেখা ছাড়া আর কোন কাজই করি নাই)।
মেয়েঃ (কিস করার শব্দ) এই বার খুশি।
মেয়েঃ (আহ, কি শান্তি। লেপের নিচে শুয়ে চন্দ্র বিজয়ের স্বাদ পেলাম )। খুশি মানে এখন তো তোমাকে আরও কাছে পেতে ইচ্ছা করছে।
মেয়েঃআবার শুরু করলা, কালকের ভূত এখন ও মাথা থেকে নামে নাই ?
এতক্ষনে বুঝলাম আসল কাহিনি কি ?
আমিঃ ঠিক আছে লিটনের ফ্ল্যাটে না যেতে চাও, তোমার বাসায় আমি আসি ।
মেয়েঃনা না। বাসায় আম্মু থাকে সবসময়। আচ্ছা তোমার কণ্ঠ এরকম লাগছে কেন?
আমিঃঠাণ্ডা লাগছে, কালকে রাতে তোমার জন্য অনেকক্ষন কেঁদেছিলাম তো তাই (চাপা মারার জন্য নোবেল থাকলে নির্ঘাত এইবার নোবেলটা আমার হইত), আর লেপের নিচে তো তাই।
মেয়েঃস্যরি, জান তোমাকে অনেক কষ্ট দিলাম। আই লাভ ইউ।
আমিঃ(আজকে জানি কার মুখ দেখে ঘুমাইতে আসছিলাম ) । :!> :!> :!> :!> হুম
মেয়েঃকালকে দেখা করবা।
আমিঃআর তোমার সাথে দেখা করব না।
মেয়েঃকেন জান?
আমিঃকারণ তুমি আমাকে লাভ কর না। শুধু মুখেই বল।
মেয়েঃছিঃ, তুমি এই কথা বলতে পারলা।
আমিঃআরে ধুর, আমি তো তোমার সাথে মজা করলাম।
মেয়েঃও আচ্ছা, তাহলে কালকে কখন দেখা হচ্ছে?
আমিঃকালকে একটু ব্যাস্ত থাকব। একটা প্রোগ্রামিং এর কোর্স করছি তো, কালকে ক্লাস আছে। (যদিও কম্পিউটার এর সামনে বসে সিনেমা দেখতে দেখতে দাড়ি চুলকানো ছাড়া আমার আর কোন কাজ নাই)
মেয়েঃকি? তুমি না বি.বি.এতে পড়? প্রোগ্রামিং এর কোর্স করবা কিভাবে ?
আমিঃ ফাও কোর্স। বন্ধু করবে তো, তাই ভাবলাম আমিও করে আসি। এই সুযোগে কিছু মেয়েও দেখা হবে ?
মেয়েঃকি? তুমি মেয়ে দেখতে যাবা।
আমিঃআরে পাগল, আসমানে যখন চাঁদের সাথে তাঁরা উঠে সবাই কিন্তু দুইজনকেই দেখে । আর চাঁদকেই সবার কাছে ভালো লাগে। আর তুমি হলা আমার আকাশের চাঁদ ।
মেয়েঃহাসি...।। আজকে তোমার কথা সম্পূর্ণ অন্য রকম লাগছে। তুমি তো আগে কোন দিন এইভাবে কথা বল নাই।
আমিঃআমাকে চিনতে তোমার এখনও অনেক দেরি আছে। আমাকে দেখলে বা কথা শুনলে মনে হয় আমি ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানি না, কিন্তু আমি শাক দিয়ে ভাজা মাছ ঢাকি এর পর মাছ খাই।
মেয়েঃবুঝলাম।তাহলে পরশু।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে তুমি রাজি।
মেয়েঃ বললাম না আম্মু বাসায় থাকে।
আমিঃসবসময় তো আর থাকে না। টুয়েন্টি-টুয়েন্টি খেলতে দিবা না, দিবা-রাত্রির ফুল ম্যাচ
খেলতে দিবা না। পাওয়ার প্লে খেলতে দাও।
মেয়েঃ আচ্ছা পরে দেখা যাবে।
আমিঃআমাকে একটা গান শুনাবা।
মেয়েঃনা।
আমিঃ প্লীজ, প্লীজ, প্লীজ।
মেয়েঃ আচ্ছা। “আমার ও পরান ও যাহা চায়...............”।হইছে!!!! এখন ঘুমাও।
আমিঃ ওকে। পাখি আরেক বার বলবা ।
মেয়েঃ কি?
আমিঃ ১৩৪
মেয়েঃ (রোম্যান্টিক হাসি) না।
আমিঃ প্লীজ একবার।
মেয়েঃ আই লাভ ইউ। হইসে এখন ঘুমাও।
আমিঃ ওকে বায়।
মেয়েঃ (রোম্যান্টিক হাসি) বায়। (আবার ও কিস)
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বন্ধুরে ফোন,
“দোস্ত আমার তো প্রেম হইয়া গেসে। কাল রাতে এক মাইয়া ফোন দিসে। আমারে তো কিস-টিস কইরা, জান-টান বইলা পেরেসান”
“কি কস পার্টি কবে দিবি, নাম কি মাইয়ার”
“নাম তো জানি না। মনে হয় খানদানি আইটেম। যেমনে জান কইসে আর কিস করসে। আবার পরশু দিন মাইয়ার বাসায় গিয়া পাওয়ার প্লে খেলতে কইসে। আর পার্টি দিতে পারমু না দোস্ত।মানিব্যাগে মাত্র ৫০ টাকা আছে।”
“পাওয়ার প্লে, এক রাতেই এত দূর আগাইসস। গিয়া দেখ শালা কল গার্ল নাকি, বাসের সিটে তোর নাম্বার পাইয়া ফোন দিসে। আর ৫০ টাকা দিয়া পার্টি কোন ব্যাপার না। ২০ টাকা দিয়া একটা ইউ এন্ড মি কিনবি, আর বাকি ৩০ টাকা দিয়া গোল্ড লিফ কিন্না পার্টি দিবি।”
“ওকে, বন্ধু। আর কল গার্ল হইলে তো গেসি। ২০ টাকাই পানি তে।”
“দেখ কি হয়।”
“হুম, তাহলে আজকে বিকাল ৫ তায় পার্টি, ওকে।”
“ওকে বায়”
একটু পরেই সে মেয়ে আবার ফোন দিল, “সরি, ভাইয়া(জান থেকে ভাইয়া শুনে আমার ২০০ ওয়াটের ফিলিপ্স বাল্ব আবার ফিউজ হইয়া গেল)। কালকে আমার বি.এফ.কে ফোন করতে গিয়ে ভুলে আপানার কাছে চলে গিয়েছিল। আর আপনিও তো কিছু বললেন না।”
“বি.এফ.কে ফোন দিতে গিয়ে আমার কাছে আসে কিভাবে??? আর আমিতো মজা পাইছিলাম তাই কিছু বলি নাই। আপানাকে অবুঝ বানিয়ে খুব মজা লাগছিল ”
“আমার মোবাইল বড় আপুর কাছে ছিল, আমি অন্য মোবাইল থেকে ফোন দিয়েছিলাম তো তাই একটা ডিজিট ভুল হয়ে আপনার কাছে চলে গেসে। আপনিও তো কম না, অচেনা একটা মেয়েকে নিজের গার্ল ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলসেন। আর আমাকে অবুঝ বানিয়েছেন মানে?”
“বানানোর আগেই তো আপনি হয়ে গেছেন। কিছু বলার আগেই জান বলসেন, কিস করসেন। আর আপানার সাথে কথা বলে মনে হইছে আপনি সবুজ মানে অনেক চালাক তাই আপনাকে অবুজ বানিয়ে দিসি। যদি আবুজ হতেন তাহলে সবুজ বানিয়ে দিতাম।”
“হা হা হা, আপনি ভালই কথা জানেন। তাড়াতাড়ি বিয়ে করেন, বউ অনেক সুখে থাকবে ”
“আপনি চাইলে কালকেই হবে!!”
“ইনাফ, কালকে ভুল করে কথা বলসি বলে আজকে মাথায় উঠে গেসেন নাকি। ভালো থাকবেন।”
“আপনিও ভালো থাকবেন, আর একটা চশমা পরে ফোন দিবেন, নয়তো আবার অন্য কারো কাছে গেলে বাসায় আইসা ফুল ম্যাচ খেলা শুরু করে দিবে।”
“দেখা যাবে”
“হ্যালো............ হ্যালো ..........।”
এরপর আবারো বন্ধুকে ফোন,
“দোস্ত, আমি তো শেষ”
“কি হইসে”
সব ঘটনা খুলে বলার পর সে আমারে কয়
“ভালই তো তোর ২০ টাকা বাঁচল সাথে ইজ্জত ও।”
“যা, শালা, মেজাজ খারাপ আছে,পার্টি বাদ। পরে কথা হবে।”
এরপরে অনেক বার ওই নাম্বার এ ফোন দিসি, কিন্তু একবার ও খোলা পাই নাই। তাই মনের দুঃখে গান শুনি, "একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে, ফিরবে না সে-তো আর কারো আকাশে.......................।"
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০২