বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংক এবং ফাইন্যান্স কোম্পানির Yearly Interest on Deposit ৮-১১% এর মধ্যে এবং Lending Interest Rate ১১-১৪%। এই রকম পরিস্থিতিতে ব্যাংক গুলাকে Lending Rate ৯% এ নামাইতে বলা হইছে যা আমার মতে এই বছরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। আর ৩ মাস মেয়াদি Interest on Deposit ৬% এ নামাতে বলা হয়েছে যা ইতিমধ্যে ৬-৭% এর আসে পাশেই আছে। আর ৩ মাস মেয়াদি ইন্টারেষ্ট রেইটের খুব বেশি প্রভাবও নাই। কারন ৩ মাস মেয়াদি ডিপোজিট, টোটাল ডিপোজিটের খুব ছোট একটা অংশ।
তাইলে এখন কি করা হবে?
আপাতত আমার যেইটা মনে হয়, কৃষি ঋন হয়তবা ৯% এ নামানো হতে পারে। আর ব্যাংকগুলা এত সহজে কৃষি ঋন দিতে চায় না। সুতরাং এইটারও Money Market এ তেমন কোন প্রভাব নাই। Industrial Loan কোন ভাবেই ৯% এ নামানো সম্ভব না, কারন On average ৭%-৮% এ Deposit সংগ্রহ করে ৯% এ তা লোন দিতে গেলে ব্যাংক গুলারে দেউলিয়া হতে হবে। তার ভিতর Huge Classified Loan থাকায় Spread ৩-৪% এর নিচে নামানো যাবে না। সুতরাং ৭-৮% হারে ডিপোজিট নিলে কমপক্ষে ১০-১২% ইন্টারেষ্টেই লোন দিতে হবে। আর যদি ব্যাংকগুলা লোক দেখানোর জন্য Industrial Loan or Weighted Average Lending Rate ৯% এ নামায়ও, তাহলে তারা বিভিন্ন অজুহাতে Loan Application গুলো Reject করবে। বা একটা দুইটা লোন দিয়ে বলবে আমরা কথা রাখছি। আর Deposit এর ইন্টারেষ্ট খুব বেশি কমানো যাবে না। তাহলে ক্লায়েন্টরা টাকা তুলে অন্য জায়গায় ইনভেষ্ট করবে অথবা Consume করবে Savings কমায় দিয়ে। কারন Deposit এর ইন্টারেষ্ট যদি ৫% করে দেওয়া হয় তাহলে Savers দের জন্য ব্যাংকে টাকা রাখা লস। কারন Inflation 5.5% এর বেশি। তার মানে Inflation Adjust করলে Savers দের টাকা ব্যাংকে রাখলে লস হবে।বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় Weighted Average Lending Rate ৯% এ নামানো Totally Impractical and Impossible.
ইন্টারেষ্ট রেইট কি ৯% এ আনা সম্ভবই না?
সম্ভব। তার জন্য যা যা করা যেতে পারে তা হলঃ
১। A/D Ratio(For Commercial Bank) আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া(৮৩.৫% থেকে ৮৫%)।
২। SLR(Statutory Reserve Ratio) যা বানিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলোর জন্য ১৩% সেইটা কমানো। SLR(Statutory Reserve Ratio) হচ্ছে CRR এর বাইরে ক্যাশ, গোল্ড অথবা অন্য সিকিউরিটিস(বাংলাদেশ ব্যাংক এর অনুমোদিত)এর বিনিয়োগ। এখন Revised CRR Rate আসার পর বানিজ্যিক ব্যাংক গুলোকে ১০০ টাকা পাবলিক থেকে ডিপোজিট নিলে ৫.৫ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে ক্যাশ হিসাবে রাখতে হয়। এবং সাথে আরও ১৩ টাকা ক্যাশ, গোল্ড এবং সিকিউরিটিস ফর্মে রাখতে হয়। এই ১৩% এর Requirement টা সিথিল করলে ব্যাংকগুলোর কাছে কিছু অতিরিক্ত টাকা থাকবে যা তারা কম রেইটে লোন দিতে পারবে।
এই ২ টা উপায় অবলম্বন করলে ব্যাংকের কাছে থাকা Liquidity, যা আগে ব্যাংক লোন হিসাবে দিতে পারতো না, তা লোন হিসাবে দিতে পারবে। তবে এতে সমস্যা হল ব্যাংকের Risk বেড়ে যাবে।
৩। সব থেকে উত্তম এবং সহজ পদ্ধতি হচ্ছে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো। যা Money Market এ ব্যালেন্স নিয়ে আসবে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যদি ব্যাংকের সুদের হারের থেকে ০.৫%-১% কমে রাখা যায় তাহলে ৪ টা সুবিধা এবং ১ টা অসুবিধা।
সুবিধা ১: সরকার সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে জনগন থেকে লোন নেয় যার জন্য সরকারকে অনেক বেশি সুদ দিতে হয়(১১%+)। এবং সরকার যতটা জনগন থেকে লোন নিতে চায় তার থেকে অনেক বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। যার কারনে সরকারের ঋনের বোঝা বাড়ে। সঞ্চয়পত্রের সুদ কমায় দিলে সরকারের ঋনের বোঝা কমবে।
সুবিধা ২: সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ব্যাংকের সুদের হারের থেকে ০.৫%-১% কমে রাখা গেলে জনগন সঞ্চয়পত্র কম কিনে ব্যাংকে টাকা রাখবে এবং সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে লোন নিতে পারবে। সরকার সাধারনত সরকারি ব্যাংক থেকেই লোন নিবে। এতে করে সরকারি ব্যাংকে যে অলস টাকা আছে তার সুষ্ঠু ব্যবহার হবে। সরকারি ব্যাংক গুলো আস্তে আস্তে প্রফিটে চলে আসবে যেহেতু সরকার লোন নিলে খেলাপি হবে না।
সুবিধা ৩: বেসরকারি ব্যাংকের টাকার সংকট কমবে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কম থাকলে Savers দের একটা বড় অংশ বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রাখবে, যেহেতু সাধারনত, সরকারি ব্যাংকের থেকে বেসরকারি ব্যাংকে সুদের হার বেশি। তাতে করে ব্যাংকগুলো অল্প সুদে টাকা পাবে যার ফলে তারা অল্প সুদে ঋণও দিতে পারবে।
সুবিধা ৪: সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমলে টাকা ব্যাংকে যাওয়ার পাশাপাশি শেয়ার বাজারেও আসবে যা শেয়ার বাজারের জন্য ভাল হবে।
Overall Money Market & Capital Market এ ব্যালেন্স আসবে।
অসুবিধা ১: সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমালে ভোটাররা অসন্তুষ্ট হবে। কারন ভোটারদের একটা বড় অংশ বেশি সুদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে। সুতরাং এই ইস্যু ইলেকশনে প্রভাব ফেলতে পারে।
Economics এ একটা কথা আছে “There is often trade-offs between different macroeconomic objectives”. মানে একটা জিনিস ইতিবাচক করতে গেলে Automatically আরেক জায়গায় নেতিবাচক প্রভাব পরে। যেমন Money Supply বারলে গ্রোথ বাড়ে কিন্তু সাথে সাথে মূল্যস্ফীতিও বাড়ে। আবার টাকার ভ্যালু কমলে এক দিক দিয়ে রপ্তানিকারকরা উপকার পায় আবার অন্য দিকে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো নিয়ে সরকারও এমনই এক দোটানায়। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমালে সরকার Economically Gainer But Politically Loser. সার্বিক বিবেচনায় আমি যেইটা দেখি, আপাতত এই বছর lending Interest Rate 9% নামার কোন সম্ভাবনা নেই। হয়তবা আগামি বছর এই লক্ষ অর্জন করা গেলেও যেতে পারে যদি পলিসি মেকিং ঠিক ঠাক হয়। ব্যাংকগুলার জুলাই ১, ২০১৮ থেকে ইন্টারেষ্ট কমানোর কথা। দেখা যাক তারা কি করে।
Above statements are exclusively my personal opinions.
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:২০