বহুদিন যাবত শিক্ষার্থীদের যৌন শিক্ষা নিয়ে অনেক পণ্ডিত ব্যাক্তি লেখা লেখি করতেছিলেন। হয়ত বা তেনাদের এই মহৎ উদ্যোগের প্রতি সম্মান দেখিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল শিক্ষার্থীদের যৌন শিক্ষা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। যেমন দেশে বাবার ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট না দেয়া লাগলেও সন্তানের (স্কুল পড়ুয়া) ঠিকই গণতন্ত্র শেখার জন্য ভোট দিতে হয়। মজার ব্যাপার হল এই গণতন্ত্র শেখার অকালপক্ক প্রক্রিয়াতেও কারচুপি এবং মারামারির অভিযোগ ছিল। সহজে বললে বলা যাবে কারচুপি কে সহনীয় রূপ দেয়ার এক অভিনব কৌশল ছিল এটি।
যাই হোক হয়ত মানুষ নেগেটিভ তাই ভালো কিছু চোখে পরে না। শারীরিক শিক্ষার নামে কোন বয়সে কত টুকুন শিক্ষা দেয়া যাবে তার একটি নীতিমালা প্রয়োজন। কারন আমাদের উপরের লেভেলের মানুষ গুলোর মস্তিষ্ক হয় কাজ করে না নয়ত এরা আসলে বাংলাদেশের সংস্কৃতি আর ইউ এস এ এর সংস্কৃতির পার্থক্য করতে জানেন না। একটি ষষ্ঠ, সপ্তম কিংবা অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কেন কনডম, জন্মনিরোধক পিল অথবা এম আর সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে? কেউ ব্যখ্যা করবেন কি? যে বাবা সন্তানের মুখে এমন প্রশ্ন শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পরে সে বাবা কি খুব সেকেলে নাকি আমরা শিক্ষার্থীদের আধুনিক করার নামে অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছি?
মাঝে মাঝে ফেসবুকে কিছু জ্ঞানীর পোষ্ট দেখি যেখানে নারীর রজচক্র কিংবা পুরুষের স্বাভাবিক যৌন প্রক্রিয়া গুলোর সম্পর্কে জনসচেতনতা মূলক লেখা থাকে। তাঁদের উদ্যোগ যথেষ্ট ভালো। কিন্তু তাঁদের লেখার শব্দ চয়ন দেখে বুঝা যায় আসলে তাঁরা জনসচেতনতার চেয়ে ফেসবুক পাঠকের চটির স্থান দখলের প্রতিযোগিতাতে নেমেছেন। যেমন রজচক্রের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে এক পণ্ডিত লিখেছেন “প্রতি মাসে মেয়েদের জরায়ু থেকে একটি ডিম নষ্ট হয়ে ভে………… দিয়ে বেড় হয়ে আসাকে রজচক্র বলে”। এই কথা টি কিন্তু এভাবেও লেখা যায় “নারী প্রজনন তন্ত্রের স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়াতে জরায়ুতে পুরাতন প্রজনন কোষ নষ্ট হয়ে নতুন একটি কোষ প্রতিস্থাপিত হয়। এই প্রক্রিয়াতে মেয়েদের গপোনাংগ দিয়ে রক্ত মেশানো তরল পদার্থের সাথে পুরাতন কোষটি বের হয়ে আসে”। কষ্টের ব্যাপার হল যে ব্যাক্তি লেখা খানা লিখেছেন তিনি একজন ডাক্তার ছিলেন এবং লেখাটি হাজার হাজার বার শেয়ার হয়েছে। এটা শুধু একটা উদাহরণ দিলাম। এমন হাজারো উদাহরণ দৈনিক সামনে আসে আর বুদ্ধিমান বাঙালি মেয়েদের নিয়ে কিছু বলেছে বা খুব ভালো কিছু বলেছে হিসেব করেই শেয়ার দিয়ে “হাগার হাগার” মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। অনেক লেখক আবার বলেই দেয় অনেক কষ্ট করে লিখেছি শেয়ার করে জানিয়ে দেন সবাইকে। এক হুজুগে জাতির আরেক হুজুগে বিশেষ অজ্ঞ।
যাই হোক ছবির এই বইয়ের কথা গুলো ও এমন কিছুই বলে মনে হয়েছে। পড়ে দেখতে পারেন এবং চিন্তা করুন কত টুকুন বিকৃত রুচির ব্যাক্তিবর্গ আমাদের ছেলে মেয়ে দের কারিকুলাম ঠিক করে দেয়। হ্যাঁ এঁদের হাতেই আমাদের দেশ এবং জাতির ভবিষ্যৎ শপে দিয়েছি আমরা। নির্দ্বিধাতে বলতে পারেন যত দিন এঁদের হাতে দেশ পথ খুঁজে পাবে না বাংলাদেশ।
একটি দেশের কারিকুলাম যারা ঠিক করতে পারে না, একটি দেশের বই কিংবা শিক্ষক কোন মানের হওয়া উচিৎ এই ধারণা যাঁদের নেই তাঁরা নাকি দেশ প্রেমিকের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। ফেসবুকে কিংবা দুচারটি ব্লগে লিখে কেউ যদি শরৎচন্দ্র, বঙ্কিম, মুজতবা আলী কিংবা নজরুল হবার স্বপ্নে বিভোর থাকে এবং তাকে দিয়ে বই লেখানো হয় তাহলে এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার আশা করাও পাপ।