ভোরবেলা হাঁটতে বেড়িয়েছিলাম,হেঁটে এসে বাসায় ঢুকবো এমন সময় মহল্লার এক কাকার সাথে দেখা।পাশে আমার এক কাকিমা ছিলেন তিনি কাকার হাতের দিকে ইশারা করে বললেন আগরবাতি দিয়ে কি হবে?
জবাবে তিনি বললেন তার বোন মারা গেছেন।
শুনে বুকের ভেতরটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। মহিলা খুব ভালো মানুষ ছিলেন।আমি আমার এই ছোট্ট জীবনে এতো ঠাণ্ডা মেজাজের মহিলা মানুষ খুব কম দেখেছি।মাঝেমাঝেই কারণ বসত আমি তাদের বাসায় যেতাম।সম্পর্কে ফুপু হওয়ায় খুব আদর করতেন।ঈদের আগেও তাদের বাসায় গিয়েছিলাম ডেকে নিয়ে কথা বললেন দোয়া করলেন।
মন মানছিলোনা, তাই বাসায় না ঢুকে কাকিমা আর ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে গেলাম ফুপুদের বাসায়।
ফুপা একাই কান্না করে আকাশ ভারী করে ফেলছেন।এই প্রথম দেখলাম কোন মানুষ তার স্ত্রীর জন্য এভাবে চিৎকার করে কাঁদছেন। বিলাপ করছেন আর তাদের দীর্ঘ সংসার জীবনের স্মৃতিচারণ করছেন।
প্রেম করে তারা বিয়ে করেছিলেন।এই দীর্ঘ সংসার জীবনে তাদের কোন কথা কাটাকাটি বা মনোমালিন্য হয়নি।একজন আরেকজন কে এখান থেকে ওখানে সরে পর্যন্ত বসতে বলেননি।
ফুপু বছরের অধিকাংশ সময় অসুস্থ থাকতেন।ফুপাই ফুপুর সব কাজ করে দিতেন।এমনকি ফুপুর গোসল শেষে তার কাপড় ধুয়ে ফুপা রোদে মেলে দিতেন।
মাগরিবে নামাজে গিয়ে ফুপাকে চোখে পড়ল।হাত তুলে আল্লাহর দরবারে কান্না করছে স্ত্রীর আত্মার শান্তির জন্য।
তিনি যে খুব নামাজি ব্যক্তি এমন নয়।শুধুমাত্র স্ত্রীর আত্মার শান্তি কামনা করতেই তিনি মসজিদে এসেছেন।আল্লাহর কাছে হাত তুলে কাঁদছেন।
এই হল ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমাদের সমাজের তথাকথিত ভালোবাসার অনেক ঊর্ধ্বে।
পৃথিবীর এমন ভালোবাসা গুলো দীর্ঘজীবী হোক,সেই সাথে কালের স্রোতে ভেসে যাক স্বার্থের খোলসে মোড়া বিষাক্ত ভালোবাসা গুলো
ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:১৯