শ্যামল দত্তের হিসাবে এক হাজার ৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তার হিসাবগুলো থেকে এক হাজার ২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ২১ কোটি ১১ লাখ টাকা জমা রয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থেকে শ্যামল দত্তকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। বর্তমানে হত্যামামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মার ব্যাংক হিসাবে। তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৫৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়। তার মধ্যে ৫৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। বর্তমানে হিসাবগুলোতে জমা রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। সমকালের সাবেক সম্পাদক আলমগীর হোসেনের নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে ৩১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন জমা রয়েছে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
বৈশাখী টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ অশোক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবেও বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ২৪ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকে প্রায় পুরোটাই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্থিতি রয়েছে ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা। বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবীরের ৫৭ ব্যাংক হিসাবে ১৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা করা হয়। এসব হিসাব থেকে ১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে জমা আছে এক কোটি ১০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক নঈম নিজামের ২২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব হিসাব থেকে ১৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখনো তার হিসাবগুলোতে ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা রয়েছে। নঈম নিজামের স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিনের ১৭টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। তার হিসাবগুলোতে ১০ কোটি টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে স্থিতি ৫৮ লাখ টাকা রয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত ফরিদা ইয়াসমিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
এছাড়া ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৯৭ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায় ডিবিসি নিউজের সাবেক হেড অব নিউজ জায়েদুল হাসান পিন্টুর ৪২টি ব্যাংক হিসাবে। এসব হিসাব থেকে ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাকি ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক সাংবাদিক ফরাজী আজমল হোসেনের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার জমা করা হয়েছে। এসব হিসাব থেকে ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। ইত্তেফাকের আরেক সাবেক সাংবাদিক শ্যামল সরকারের ১৪ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। হিসাবগুলোতে ২৫ লাখ টাকা এখনও জমা আছে। সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মধুসূদন মণ্ডলের ব্যাংক হিসাবে ৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর প্রায় পুরোটাই তুলে নেওয়া হয়েছে। এটিএন বাংলার জহিরুল ইসলাম মামুনের (জ ই মামুন) ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা জমা হয়। এরই মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদের ৩টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব হিসাব থেকে ৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। স্বদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতনের ৭টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার ও বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদের দুটি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা জমা হয়। এসব হিসাব থেকে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর মির্জা মেহেদী তমালের ৪টি ব্যাংক হিসাবে মিলেছে এক কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
এরা সেইসব সাংবাদিক যারা হাসিনার ফেসিবাদের দোসর। এরা বঙ্গবন্ধুর গুনগান গাইতো রাতদিন। যে যতবেশি বঙ্গবন্ধু ও শেখ পরিবারের ঢোল পিটাইতো তার একাউন্টে তত বেশি টাকা। একজন সাংবাদিকের একাউন্টে এতো টাকা কোত্থেকে আসলো? নাকি আম্লিগের সুবিধাভোগিরা বলবে যে, তাদের দাদারা জমিদার ঘোড়ায় চড়ে জমি দেখাশোন করতো?