ছবি-গুগুল
বিকেলের সোনালি রোদ আর মন মাতাল করা বাতাস সেই সাথে মায়ার মায়াবী চোখ আমাকে শুধু ওর কাছে টেনে নিচ্ছে। ইচ্ছে করছে সমস্ত সুধা পান করে নেই।
- এই যে মিঃ! কি ভাবছেন এত? কোথায় হারিয়েছেন বলেনত?
- যদি বলি তোমার মাঝে হারিয়েছিলাম, বিশ্বাস করবে?
- হিহিহি! আপনি না কথায় কথায় শুধু দুষ্টামি করেন। চলেন পাহাড়ের ওপাশটায় যাই। সবাই মে বি ওদিকেই আছে।
- সবাই যেখানে আছে সেদিকে যেতে ইচ্ছে করছেনা মায়া। আমার সঙ্গ কি তোমার খারাপ লাগছে? যদি খারাপ লাগে যেতে পার।
- এভাবে বলছেন কেন? আচ্ছা ঠিকাছে যাবনা।
- মায়া, একটা সিগারেট ধরাই, প্রব্লেম নেইত?
- উহু! এখন সিগারেট ধরানো যাবেনা। বিশ্রি লাগে আমার কাছে।
সৌরভ মনে মনে বলে তবে কি তোমার অধর ভিজিয়ে দিতে দিবে?
পাশাপাশি হেটে চলল দুজন। নিস্তব্ধ চারপাশ। মায়ার চোখে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে সৌরভের। কি জানি আছে মায়ার ভেতর যা খুব কাছে টেনে নেয়। যখনি মায়ার কাছে আসে সব ওলট পালট হয়ে যায় সৌরভের। সৌরভ বুঝে গেছে ভালোলাগা শুধু তার একার নয় মায়ারও আছে। কেমন যেন একটা নিরব চাওয়া আছে মায়ার সেটা মায়ার চোখ দেখলেই বুঝা যায়।
সন্ধ্যা নেমে এলো। পুব আকাশে চাঁদের উপস্থিতি আর শীতল বাতাস খুব বেশিই রোমান্টিক করে তুলছে আমাকে। একটু পরই মায়া আসবে। একসাথে চা পান করেই চাঁদ দেখব দুজন।
মায়া আমার খুব কাছেই বসে আছে। চাঁদের আলোয় চারপাশটা দারুন লাগছে। হয়ত মায়া পাশে আছে বলেই পরিবেশ টা এত মনোমুগ্ধকর লাগছে। বাতাসে মায়ার চুল উড়ছে। মায়ার চুলগুলো আমার মুখে এসে লাগছে । মিষ্টি একটা ঘ্রাণ পাচ্ছি চুল থেকে, সম্ভত শ্যাম্পু করেছে চুলে। খুব সাহস করে মায়াকে বললাম
- মায়া
- হু!
- একটা অনুরোধ করি?
- জ্বি বলেন।
- আজ সারারাত চাঁদ দেখবে আমার সাথে?
- মায়া চুপ থেকে বলল আচ্ছা।
মায়া যে এত সহজে রাজী হয়ে যাবে আমি ভাবতেই পারিনি। সারারাত চাঁদ দেখেছি আমরা। মায়া মিষ্টি করে গান শুনিয়েছে আমাকে। খুব ইচ্ছে করছিল ওর হাতটা ধরে বসে থাকি কিন্তু পারিনি। পারিনি মুখ ফুটে বলতে “ভালোবাসি”। তবে আমার মনের কথা সবি বুঝেছে মায়া। তাইত সে আমার কাধে মাথা রেখেছিল। শ্রেষ্ঠ একটা রাত পার করেছি আমরা।
সারাদিন ঘুমিয়ে বিকেলে উঠে খেয়ে দেয়ে মায়ার সাথে কথা বললাম। মায়াকে বললাম
- সন্ধ্যায় কি করবে?
- রুমেই থাকব। শরীর ভালো লাগছেনা।
সিদ্ধান্ত নিলাম ওর রুমে গিয়েই ওকে দেখে আসব। আর আজ আমি বলবই ভালোবাসার কথা।
একটা পাঞ্জাবি পড়লাম নেভি ব্লু। এই কালারটা আমার খুব পছন্দের। অনেকগুলো গোলাপ কিনে আনলাম। চুপি চুপি চারপাশ দেখে মায়ার রুমের দিকে পা বাড়ালাম। মায়ার রুমের কলিং বেল বাজাতে ইচ্ছে করল না। নক করতে যাব দেখি দরজাটা খোলা। দরজা ঠেলে রুমে ঢুকলাম। কাউকে দেখতে না পেয়ে আমি ধীরে ধীরে ড্রয়িং রুম পার করে বেড রুমের দিকে গেলাম।
সমস্ত আকাশ যেন আমার মাথায় ভেঙে পড়েছে। মনে হচ্ছে পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে। নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতেই পারছিনা। মায়া অন্য কারো বাহুডোরে। ওদের অন্তরঙ্গ মূহুর্ত আমি সহ্য করতে পারলাম না। চিৎকার করে উঠলাম।
- মায়া ছি! এত নিচ তুমি? এত জঘন্য তুমি?
আমার অগ্নিমূর্তি দেখে ওরা ভয় পেয়ে গেল।
আমার দু’হাতে রক্ত দেখেই ভয় পেয়ে গেলাম আমি। আবিষ্কার করলাম হাতের কাছের ফুলদানি দিয়েই মায়ার সাথের মানুষটি কে আমি শেষ করে দিয়েছি ।