আমি মনে হয় কিছুটা নারী বিদ্বেষী। ব্যাপার টা অদ্ভুত শোনালেও আশপাশের এক রাশ ফেমিনিস্ট দের মাঝে কিভাবে কিভাবে যেনো আমি একটা মেনিনিস্ট হিসেবে বড় হয়ে গেলাম। এইসব ফেমিনিস্ট দের অনেক কাজই আমার কাছে অযৌক্তিক এবং হাস্যরস পূর্ণ মনে হয়। নারীবাদীরা আন্দোলন করে নারীর অধিকার রক্ষার্থে। সত্যিই কি অধিকারটা মেয়েদের দরকার?
একটা প্রচণ্ড রকম মা ভক্ত ভাইকে চিনতাম ছোটবেলায়। ছোটমামার বন্ধু। তার বহুদিনের প্রণয়কে আপ্রাণ চেষ্টা করেও সে পরিণয়ে রূপ দিতে পারেনাই। কারণ তার মায়ের লাল টুকটুকে বউ চাই। আপুটা গাঢ় শ্যামলা। মাকে কোনোভাবেই রাজি করাতে না পেরে শেষে সম্পর্কটারই ইতি টানতে হয়েছিল। যথাযথ শিক্ষাটা কি শুধুই পুরুষদের দরকার?
আমাদের দেশের কুচকুচে কালো মায়েদেরও ছেলের কাছে অন্ন বস্ত্র বাসস্থান এর আগে দাবী থাকে একটা সাদা বউ চাই। তাই বলে অন্য মায়েদেরও যে ফরসা বউ দাবী করার পূর্ণ অধিকার আছে তা না। কিন্তু অন্তত নিজে কালো হওয়ার সুবাদে হলেও একটা মেয়ে যাকে সৃষ্টিকর্তা ভালোবেসে অনেক রঙ দিয়ে পাঠিয়েছেন তাকে করুণার বদলে সে সম্মানের চোখে দেখবেন এই আশা টুক আমরা করতেই পারি। কিন্তু সে আশার গুড়ে কঙ্কর। মা জননীরা গলার স্বর সপ্তম স্কেলে চড়িয়ে যুক্তি দেখান, ছেলের বউ কালো হলে তো নাতি নাতনিও কালো হবে। মুখ দেখাবো কি করে। যেনো পুত্রবধূর স্কিন টোন স্কেল সমানুপাতিক সামাজিক স্ট্যাটাস। যার ছেলের বউ যত ধবল তার সোশ্যাল ইম্পরটেন্স তত বেশি। এবং হাস্যকর হলেও সত্যি যুগ যুগ ধরে এই কালচারই চলে আসতেছে এই বঙ্গ দেশে। বউ এর মেলানিন কম থাকলে তার চৌদ্দ, ক্ষেত্র বিশেষে আঠেরো খুনও মাফ করা যেতে পারে। কিন্তু একটা শ্যামা বধূ মনের ভুলেও একটা চুন পান থেকে খসিয়ে ফেলেছে কি ফেলেনি.....
লেটস টক অ্যাবাউট ইভটিজিং। একটা মহিলার কাছে তার ঘরের ২৪ বছরের ছেলের নামেও যদি নারীঘটিত কমপ্লেইন আসে তিনি তার হৃদপিন্ডের একটা সিস্টোল একটা ডায়াস্টোল পরিপূর্ণ ভাবে কমপ্লিট হবার আগেই বলে ফেলবেন, ভাবী বাদ দেন বাচ্চা মানুষ ভুল করে ফেলছে। বয়সটাই তো ভুল করার। অথচ এই ভুল করার বয়সেই যদি কেউ ভুল করে তার ঘরের মেয়েকে কিছু বলে বসে? ইউ নো দ্যা রেস্ট অফ ইট। একটা মেয়ে তার ছেলের বাচ্চা গর্ভে নিয়ে তার সামনে দাঁড়ালে সবার আগে তিনি চেষ্টা করেন চরিত্রহীন মেয়েটার ঝামেলা থেকে তার দুগ্ধপোষ্য ছেলেকে উদ্ধার করার। ছেলে মানুষ না হয় একটু ভুল করেই ফেলছে। কিন্তু মেয়েটা কিভাবে পারলো...ছিঃ ছিঃ। অথচ তার পুত্রও যে সমান দোষে দোষী সে কথা তিনি বেমালুম ভুলে যান। সবার কথা বলছিনা। কিন্তু মানতে কষ্ট হলেও সত্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মহিলা জাতি এর চেয়েও নিকৃষ্ট মনোভাব নিয়ে চলেন।
বারো বছর বয়স কালে যখন পাশের বাসার মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করার প্রথম কমপ্লেইন বাসায় আসে তখন প্রত্যেক ছেলের মায়ের উচিত তার ছেলেকে ঘুরিয়ে দুইটা থাপ্পড় মারা। বিলিভ ইট অর নট পরবর্তী জীবনে তার দ্বারা সম্ভাব্য ৭০ ভাগ ইভটিজিং এর সমাপ্তি এইখানেই হবে।
ছোটবেলা থেকেই ছেলে সন্তানদের মাত্রাতিরিক্ত আশকারা দেওয়া, না চাইতেই আকাশের চাঁদ হাতে ধরিয়ে দেওয়ার অভ্যাস, মুসলমানি করানোর আগে থেকেই কানের চারপাশে অনবরত "আমার বাবার জন্য লাল টুকটুকে বউ আনবো ঘরে" এই সব কিছু করে মেয়েরা। তারপরেও আপনি কিভাবে আশা করেন সেই ছেলে বড় হয়ে রেসিস্ট হবে না? তবুও বলবেন একচেটিয়া ছেলেদের দোষ? নির্যাতিত মেয়েরা? অধিকার মেয়েদের দরকার? এইসবের মনমানসিকতা নিয়ে বড় হওয়ার দায় যেমন শুধু ছেলেদের না। তেমনি একটা পার্ভাট কিংবা রেসিস্ট কিংবা পেডোফাইল পুরুষের বিকৃত মস্তিষ্কের পেছনেও কোনো না কোনো ভাবে তার পরিবারই দায়ী। আর একটা পরিবারের চাবিকাঠি থাকে মায়েদের হাতেই। সুতরাং একটা ছেলেকে রেপের দায়ে লকাপে ঢোকানোর সময় সাথে করে তার মাকে কিংবা প্রয়োজনে অন্যান্য সদস্যদেরও ঢোকানো উচিত। কারণ তিনি তার ছেলেকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন নাই। তাকে বুঝতে হবে শুধুমাত্র ছেলে সন্তান জন্ম দেওয়া কোনো গর্বের কাজ না। তাকে মানুষ হিসেবে বড় করতে পারাটা গর্বের কাজ।
নারী অধিকার নামে কোনো শব্দের অস্তিত্ব নাই। অধিকার টা আসলে ছেলেদের দরকার। সঠিকভাবে বড় হবার পরিবেশের অধিকার। আর তারপরেও আশরাফুল মাখলুকাত না হতে পারলে মধ্যপ্রাচ্যের অতি উন্নত বিচার ব্যবস্থা তো আছেই।
রিমেম্বার,, তোমার ভাইকে কেউ গালি দিলে কিন্তু সাথে তোমার মা বোনের প্রতিও সম্ভাষণ থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৪