চন্দন কাষ্ঠ, সাদা পরিধেয়, নিবিড় নিস্তব্ধতা, কনডেম সেল, লাল টুপি, জার্মান থেকে আনা বিশেষ মজবুত পিচ্ছিল দড়ি, দড়িতে নিয়ম করে সপ্তাহ খানেক মাখানো সবড়ি কলা আর মাখন, শেষ আহার, সাড়ে এগারোটা, তওবা পাঠ, স্টেজ তার উপর কাঠের পাঠাতন, এক পা, দুই পা, বীমের সাথে রশি পেচানো, শেষ মুহূর্তে কোনো দৈব শক্তির আগমনের প্রচণ্ড আশা, মুক্তির আশা, লিভার ঘোরানো, জেল সুপারের নির্বিকার চেহারা, হাতে রুমাল, অসীম মহাকাল - রূদ্ধ বর্তমান, পার্থক্য শুধু একটা রুমাল, পঁয়তাল্লিশ বৎসর আগের কোনো এক বিকেল, মাওলানা ইরতাজউদ্দীন কাশেমপুরীর অন্যায় মৃত্যু, যম টুপি পড়ানো, সরল সহজ চাষার পেটে লাথি, বুকে তাক করা শীসার বুলেট, আয়েশা বেগমের অসহায় তারস্বর চিৎকার, প্রিয়জনের প্রিয় মুখ, এক বুক আফসোস, দাঁতে দাঁত চেপে রাখা, মোটা দড়ি দিয়ে কণ্ঠনালি ঘেরানো, টিকটিক টিকটিক, শেষ নিঃশ্বাস, আশশাহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ...... বারোটা পাঁচ, হাত থেকে পরে গেলো রুমাল, শূণ্যে ভেসে ছুটে যাচ্ছে অভিকর্ষের টানে, সর্বশক্তি দিয়ে লিভারে টান, খুলে গেলো কাঠের দরজা, পায়ের তলে শূণ্য, ঝুলতে থাকা মানব দেহ, মাটির দেহ, শহীদ রুমী, জুয়েল, আজাদ, বদীর স্বস্তির হাসি, পিছনে অতীত, রক্ত চোষা অতীত।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪০