গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন দেখলাম।
সেই সংবাদ সম্মেলনে শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে আমি একটুও অবাক হইনি!
অবাক হয়েছি তেলবাজদের অতি মাত্রার তেলবাজী দেখে। তেলবাজদের তেলবাজী কিছু নমুনা... পুরোটাই পড়বে আসা করি
মোজাম্মেল বাবু (একাত্তর টেলিভিশন)
আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, ২০৩০-৪০ সাল পর্যন্ত ফুয়েল ডাইভারশনের মাধ্যমে ৫০ ভাগ সাশ্রয়ী কয়লা, ১০ শতাংশ সোলার এবং ২০ শতাংশ, ২৫ শতাংশ গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে যুগপোযোগী পরিকল্পনা আপনি করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। আপনার দ্বারাই সম্ভব জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আপনি বলেছেন, সোলার বিদ্যুৎ করা হবে, তবে এমন জমিতে করা যাবে না, যেখানে ফসল হয়। যদি করাও হয়, তবে এটুকু গ্যাপ-গ্যাপ দিয়ে করা হয়, যেন কিছু আলো আর কোনও না কোনও ফলন হয়। তো এই রকম একজন নেতৃত্বকে যখন পরিবেশের কথা বলা হয়, সেটা সত্যিই মার চেয়ে মাসির দরদ বেশি।
শুধু আমার একটাই প্রশ্ন এই সমস্ত যেই ইঞ্জিনিয়ারিং সেটা আপনি নিজে মনিটরিং করবেন কিনা? কারণ আমাদের আস্থা একটু কম।
মোল্লা আমজাদ হোসেন (এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন)
আজকে যে সস্তায় জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে, তার সূত্রপাত ঘটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। নইলে আজকে আমাদের গ্যাস আমদানি করে বা বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে কিনে বিদ্যুৎখাত চালাতে হতো। আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না। এটা আমি আমার বিশ্বাস থেকে, হৃদয় থেকে নিশ্চিত। তবে সুন্দরবন অঞ্চলে শিল্পায়নের যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, যদি নদীর দুই ধারে জমি দখল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয়, সেটা সুন্দরবনের ক্ষতি করতে পারে। পরিকল্পিত শিল্পায়ন ও দূষণমুক্ত শিল্পায়নে আপনার সরকার কী করবে জানতে চাই?
গোলাম সারওয়ার (সমকাল)
আপনি সুবিস্তারে এই রামপাল প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, যে প্রশ্নগুলো আমাদের মনে ছিল এবং আছে, তার প্রত্যেকটির জবাব আপনি দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে, আপনার দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি দেশের ক্ষতি করছেন, দেশকে বিক্রি করছেন। কিন্তু যিনি দেশের জন্য জীবন দিতে পারেন, তাকে নিয়ে এই কথা। আমি মনে করি এর জোরালো প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন। দিল্লি থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে পারে; আর রামপালে হতে পারবে না, এ কথা আমরা মানতে রাজি নই। আমরা আপনার সঙ্গে আছি।
শাবান মাহমুদ (বাংলাদেশ প্রতিদিন)
এই দেশে যখন স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল আপনার বাবার নেতৃত্বে, তখন একটি অংশ আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। আবার আপনি যখন ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে বারবার কাজ করছেন, তখন আমরা দেখেছি, ওই অংশেরই একটা অংশ, যারা উত্তরাধিকার সূত্রে বংশ পরস্পরায় তারা বেড়ে উঠেছে, তারা আপনার বিরোধিতা করে আসছে। এর ফলে আমরা দেখি, বাংলাদেশের উন্নয়নের বিপক্ষে একটি গ্রুপ বরাবরই সক্রিয় রয়েছে। তার ভেতর দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারপ্রধান হিসেবে কেবল আপনার কাছে আমি জানতে চাইব, এই অংশটি দেশ ও রাষ্ট্রের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তারা যদি ক্ষতিকর হয়ে থাকে, দেশপ্রেমী জনগণ তাদের কিভাবে বয়কট করতে পারে? সরকারপ্রধান হিসেবে, উন্নয়নের নেত্রী হিসেবে, দেশের একজন গণমানুষের নেত্রী হিসেবে আপনি কী মনে করেন?
এতো তেলবাজদের ভীরে দুইটা প্রশ্ন আমার মনে ধরেছে,
১. আনিস আলমগীর (এশিয়ান টিভি)
বিদ্যুৎ প্রকল্প যে দরকার, এটা নিয়ে আমার আর কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু একটা বিষয় ক্লিয়ার হইনি আমি। টাকাটা আমরা দিচ্ছি। কিন্তু বিদ্যুৎ ভাগের ক্ষেত্রে ফিফটি-ফিফটি কেন? (জাইগাটাও কিন্তু আমাদের)
২. রেজওয়ানুল হক রাজা (মাছরাঙা টেলিভিশন)
রামপাল নিয়ে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন হচ্ছে। এবং আজ আপনি অনেক তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন। রামপালের বিপক্ষে যারা তারা যখন ব্রিফিং করেন, নানা তথ্য-উপাত্ত দেন। কোনটি সত্য, কোনটি মিথ্যা, আমাদের মতো সাধারণ মানুষরা তা অতোটা বুঝতে পারি না। আমি শুধু একটা জিনিস জানতে চাই যে, জঙ্গিবাদের কারণে আমরা দেশের মধ্যে একটা অস্বস্তির মধ্যে আছি। এই মুহূর্তে এই রামপাল ইস্যু নিয়ে যদি একটা গোলযোগ হয়, সেটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক হবে। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের মধ্যে আপনার একজন বন্ধুও আছেন; এটা সম্ভব কিনা—তাদের সঙ্গে বসে একটা আলোচনা করে বিষয়টি রিকনসিডার করার সুযোগ আছে কিনা?
এই প্রস্নের উত্তর অবস্যই প্রধানমন্ত্রী অনেক সুন্দরভাবেই দিয়েছেন আমার খুভ মনে ধরেছে! তিনি বলেছেন তাহলে এক কাজ করি সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেই? তাহলেই তারা বুঝবে....
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৫৬