বিএনপি চেয়ারপারসনকে সবসময় ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করতাম। কোনো বার্তা নিয়ে যখন বিএনপিপ্রধানের কাছে যেতাম, তখন তিনি খাটে উঠে আমাকে বসতে দিতেন চেয়ারে। আমি বিব্রতবোধ করলেও তিনিই আমাকে বসার জন্য বলতেন।বিএনপি চেয়ারপারসন খেতেন খুবই সামান্য। তবে তিনি পেঁপের তরকারি খেতে পছন্দ করতেন। নিজে থেকে অন্য কোনো মেন্যু দিতেন না। থাকতেন পরিপাটি হয়ে। কথা বলতেন খুবই কম।বিএনপি চেয়ারপারসনের মা তৈয়বা মজুমদার যখন মারা যান, শেষবারের মতো দেখতে সুযোগ দেওয়া হয় বেগম খালেদা জিয়াকে। কিন্তু তার দুই ছেলে পৃথকভাবে নানীকে দেখতে যান। কিন্তু মা-ছেলেদের একসঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ ছিল না।বিএনপি নেত্রীর পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান ও অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।কোনো বিশেষ বার্তা থাকলে সঙ্গে সঙ্গেই নেত্রীকে জানিয়ে দিতাম। অবশ্য সবকিছুই হতো জেলকোড অনুযায়ী। তিনি বলেন, আমার মনে আছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার মা যখন মারা যান, তখন বিএনপিপ্রধানকে ৬ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় মাকে দেখতে। মাকে শেষবারের মতো দেখতে যখন নির্ধারিত সময় অতিক্রম করে, তখন আমার ওপর নির্দেশ আসে তাকে নিয়ে যেতে। আমি জানতাম না, বাসায় তাকে কিছু খেতে দেওয়া হয়েছে। আমি বাইরে ছিলাম। যখন তাকে বার্তা দেওয়া হয়, চলে যেতে হবে, তখন তিনি না খেয়েই চলে আসেন। বিষয়টি পরে আমি জানতে পেরেছি। এ বিষয়টি নিয়ে আজও আমি অনুতপ্ত। কিন্তু বেগম জিয়া আমাকে এ নিয়ে কোনো কথাই বলেননি। তার প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যায়। আরেক দিন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে খবর জানালাম, তার ছেলে তারেক রহমান বাথরুমে পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। শুধু এটুকুই বললেন, ঠিক আছে।বিএনপি চেয়ারপারসন নামাজ পড়তেন। সারা রাত জেগে নামাজ পড়তেন। ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমাতে যেতেন। কখনো কিছু লেখার জন্য কাগজ-কলম চাইলে নিয়ে যেতাম।
-বিভীষিকাময় ওয়ান-ইলেভেনে দুই নেত্রীর সাব-জেলে দায়িত্ব পালনের স্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন ডিআইজি প্রিজন মেজর শামসুল হায়দার সিদ্দিকী (অব.)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:১২