চল আজ . . . .
বৃষ্টিতে ভিজি,
অনেকদিন বৃষ্টিতে ভেজা হয় না|
যা মানিব্যাগ আর মোবাইলটা রুমে রেখে আয়|
কথাগুলো, জোসেফ একটানা বলে গেল|
আমি আস্তে করে শুধু বললাম|
না. . . রে বৃষ্টিতে ভিজলে আমার জ্বর আসবে আর সামনে পরীহ্মা ।
মন সায় দিচ্ছে না|
একথা বলে আমি রুমে চলে আসি|
রুমে এসে জানালার দিকে চোখ পড়তেই বুঝতে পারলাম|বাইরে মুষুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে|চেয়ারটা টেনে নিয়ে জানালার কাছে বসলাম|বৃষ্টি পড়ার দৃশ্য দেখছি আর ভাবছি|
একসময় বৃষ্টি এলে মনটা উদাস হয়ে যেত|হারিয়ে যেতাম অন্য ভুবনে|বাড়িতে থাকলে রুমে বসে জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখতাম । আর টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার শব্দ শুনতাম|আমার রুমের জানালা দিয়ে মাঠের অনেকদুর পযর্ন্ত বৃষ্টি দেখা যেত|আমি তখন প্রকৃতির অন্য রুপ দেখতে পেতাম|আমার মনটা ভাল হয়ে যেত|বৃষ্টি দেখা শেষ হলে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম|টিনের চালের বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম|আমি নিজেও জানতাম না|আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করলে,মা কে না বলেই,বৃষ্টিতে ভিজতে চলে যেতাম| ইচ্ছেমতো ভিজে আবার বাড়িতে চলে আসতাম|
আসার সাথে সাথে মা বকাবকি শুরু করে দিত|মানুষ কখনো এতহ্মন বৃষ্টিতে ভেজে|তোমার না সর্দির সমস্যা,এবার জ্বর আসুক দেখি তোমাকে এবার কে ওষুধ এনে দেয়|
আমি বলতাম,আমার কিছু হবে না|তুমি তোয়ালেটা তাড়িতাড়ি দাও,মাথাটা মুছি ফেলি|
মা আর কিছু বলতো না|মা জানে,আমাকে বলে কিছু হবে না|আমার মন যা চায়,আমি তাই করি|আমার গন্ডারের চামড়া কথা সহজে ভিতরে ঢোকে না|
ফ্রেশ হয়ে এসে মাকে বলতাম,হ্মুধায় পেট চোঁ চোঁ করছো|
কি রান্না করছো আজ?
তাড়াতাড়ি দাও|
আহ্. . . রে . . .
সময়টা কেমন জানি বদলে গেছে|বদলে গেছি আমিও|এখন বেশ বড় হয়েছি|আগের মতো আর দেখা হয় না ,জানালা দিয়ে দিগন্ত ভরা মাঠে বৃষ্টি পড়ার দৃশ্য,শোনা হয় না টিনের চালের ঝমঝম বৃষ্টি পড়ার শব্দ|
এখন আর বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করে না|
আমি জানি এখন বৃষ্টিতে ভিজলে কেউ কিছু বলার নেই|
মাও আর এখন বকবে না|
তবুও কেমন জানি,কোন কিছু করতে গেলে|এখন অনেক কিছু ভাবতে হয়| মনে পড়ে যায়,শৈশবের সেই বৃষ্টিতে ভেজা দিনগুলির কথা|যখন ছিলাম দুরন্ত আর বাঁধন হারা|
এখন আর কোন কিছু করা হয়ে ওঠে না|
কোথায় হারিয়ে গেল আমার সেই শৈশব,কৈশোর আর বৃষ্টিতে ভেজা দিনগুলি . . . . . .