বিশেষ প্রতিবেদন - ৩ মার্চ, ২০১৩
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামাতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। ট্রাইব্যুনাল-১এ নিজামীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ ১৬টি অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছাত্রসংঘের প্রেসিডেন্ট ও আল-বাদরের প্রধান হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে।
চার্জ-১১: মতিউর রহমান নিজামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ও আল-বাদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে পূর্ব-পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে বক্তৃতা দিয়েছে। একাত্তরের ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে পাকিস্তান ছাত্রসংঘের নিখিল পাকিস্তান সভাপতি হিসেবে বলে যে, ‘পাকিস্তান আল্লাহর ঘর। আল্লাহ একে বার বার রক্ষা করেছেন। ভবিষ্যতেও রক্ষা করবেন। দুনিয়ার কোনো শক্তি পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না।’ সে আরও বলে যে, ‘আল্লাহ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তার প্রিয় ভূমির হেফাজত করেছেন।’ সে উপরোক্ত বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অপব্যাখ্যা দিয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালি মুসলিম জনগোষ্ঠীকে হিন্দু আখ্যা দিয়ে নিশ্চিহ্ন করতে প্ররোচিত করেছে।
উক্ত সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রসংঘের সভাপতি আবু নাসের বলে যে, ‘যেই হিন্দুর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পাকিস্তান অর্জন করেছি, সেই হিন্দুদের সঙ্গে আমরা কোনোদিন এক হতে পারি না।’ মতিউর রহমান নিজামীর উপস্থিতিতে উপরোক্ত উস্কানিমূলক বক্তব্যে নিজামীর মৌনতা উক্ত বক্তব্যের স্বীকৃতির শামিল।
চার্জ-১২: একাত্তরের ২২ আগস্ট ঢাকার ইসলামী একাডেমীতে আল-মাদানী স্মরণে এক আলোচনা সভায় মতিউর রহমান নিজামী বলে যে, ‘আল-মাদানীর রক্তের প্রতিশোধ নিতে পারলেই আমাদের শ্রদ্ধাবোধ প্রমাণিত হবে। আর এ প্রতিশোধ ইসলামের শত্রুদের সমূলে উৎখাতের মাধ্যমেই সম্ভব হতে পারে।’ সে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলে যে, ‘ইসলামের ইতিহাসে শুধু শাহাদতের ইতিহাস নয়, ইসলামের ইতিহাস শত্রু নিধনের ইতিহাস। গাজী হয়ে আল্লাহর দ্বীনকে গালিব করারও ইতিহাস। পাকিস্তানকে যারা বিচ্ছিন্ন করতে চায় তারা এ দেশ থেকেই ইসলামকে উৎখাত করতে চায়। আজ ইসলামের শত্রুরা হাতে অস্ত্র নিয়েছে।’ সে সবাইকে জামাত নেতা আল-মাদানীর পথ অনুসরণ করে যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানায়।