somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

1 NEW MESSAGE

৩০ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাস্তার
ধুলি কণা গুলো এখনো চোখে ভাসছে,
ঝড় আসার পূর্বাভাস
পাওয়া যাচ্ছিল।
ধুলো বালিতে চারদিকের বাতাস
ভারি হয়ে আছে, ঠিক যেন কুয়াশার
চাদর। এরই
মাঝে হাটছিলো আদনান।
গায়ে সাদা-কালো শার্ট আর জিন্স
এর
প্যান্ট। প্যান্ট এর হাটুতে একটু...
ছেড়া। আফনান তার হৃদয়ে এমনই
ছেড়া কষ্ট অনুভব করছে। পকেট
থেকে মোবাইল বের করলো…মডেল
নকিয়া 6100i । Yes বাটন চাপতেই
….দেখতে পেলো তুলির নাম্বার। ২৫
মিনিট আগেই তুলিকে কল
করেছিলো আফনান! অনেক আনন্দ
নিয়েই কথা শুরু হয়েছিলো।
শুরুটা ছিলো এরকম, “জানিস
আমি এ+
পেয়েছি”।! কিন্তু তুলির কথায়
কেমন
যেন একটা পরিবর্তন দেখা গেলো!
আফনান অনেক বার বুঝার
চেষ্টা করেও তার পরিবর্তনের
কারনটা বুঝে উঠতে পারলো না।
তুলি যেন কেমন অস্বাভাবিক
আচরন
করতে লাগলো।! “আপনার সাথে কোন
কথা বলার ইচ্ছাই আমার
নাই…..কি প্রয়োজনে আপনি আমাকে কল
করেছেন!! এ+ পাওয়া তো তেমন
কঠিন
কোন বেপার না…..রাখলাম”,
এটা ছিলো তুলির ভাষ্য। আফনান
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতেই আবার
চেষ্টা করলো সংযোগ করার কিন্তু
সম্ভব হলো না। কারন সে রিসিভ
করছিলো না। আফনান অনেক শান্ত
ছেলে। ৩০ মিনিট আগেই তার
এইচ.এস.সি র ফল প্রকাশ
পেয়েছিলো। তুলি আফনানের
একমাত্র
মেয়ে বন্ধু……৩ বছর আগে মোবাইল
ফোনের কল্যানে তাদের পরিচয়!খুব
ভালো মেয়ে হিসেবেই
তুলিকে সে জানতো। অনেক
ভালো বন্ধুত্ব ও ছিলো তাদের
মাঝে।
ঝগড়া আর মিলনের মধুর
বেপারটা ঘটতো প্রায়ই।
হয়তো মনের
অজান্তে তাদের মাঝে ভালোবাসাও
জন্মে ছিলো। কিন্তু তুলির
আজকের
রুপ আফনানকে চিন্তিত
করে তুললো।
অজানা আশঙ্কা বুকে নিয়ে …এক
পা দু
পা করে আস্তে আস্তে এগিয়ে চললো বাসার
পথে। তার ভালো রেজাল্টের খবর
পেয়ে হয়তো সবাই অনেক খুশি হবে,
কিন্তু কেন যেন আফনান নিজেই
খুশি হতে পারছিলো না।
পথের ধুলো এখনো তার
চোখে ভাসছে!!
হয়তো কোন বড় ধরনের সারপ্রাইজ
অপেক্ষা করছিলো আফনানের
জন্য!
আসার পথে ১
কেজি মিষ্টি নিয়ে নিলো বাসার
জন্য। বাসায় পৌঁছাতে ১৫ মিনিট
লাগলো। বাসার সবাই খুব
খুশি অাফনানের এর রেজাল্টে। হাত
মুখ ধুয়ে নিজের
ঘরে গিয়ে বসলো আফনান।
নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করলো।
আবার
তুলির সাথে যোগাযোগ করার
চেষ্টা করলো। কিন্তু সম্ভব
হলো না।
আজ আফনানের জন্য খুব খুশির
একটা দিন। কিন্তু
সে খুশি ছিলো না।
কি করবে বুঝতে পারছিলো না সে!
আফনান সিদ্ধান্ত নিলো তুলির
বাসায় যাবে…………….
আফনানের বাসা থেকে তুলির বাসার
দুরুত্ব ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। আফনান
হিসেব করে দেখলো এখন
রওনা হলে রাত ৮.০০ টা নাগাদ
পৌঁছাতে পারবে। ফিরতে অনেক রাত
হয়ে যাবে, বিপদ ও হতে পারে।
কিন্তু
সব কিছু উপেক্ষা করে বাসার
কাউকে না জানিয়ে আফনান
রওনা হলো তুলির বাসার উদ্দেশ্যে।
রাত ৮.০৮ মিনিট……শহর হওয়ায়
এখনো সন্ধার আমেজ রয়ে গেছে।
অবশেষে তুলির বাসায়
পৌঁছালো আফনান। কিন্তু বাসায়
গিয়ে জানতে পারলো তুলি বাসায়
নেই।
কোথায় যেন গিয়েছে তুলি!!......বাবার
ভাষ্য মতে তুলি আরো ৩
ঘন্টা আগেই
বাসা থেকে বের হয়েছে।……..আফনান
অধির আগ্রহে রাত ৯.০০
টা পর্যন্ত
তুলির জন্য তার বাসার
সামনে অপেক্ষা করলো।………
শেষ পর্যন্ত তুলির
দেখা না মেলায়….আফনান তার
বাসার
উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
…………………………..আজই তুলি ও
আফনানের দেখা হওয়ার কথা ছিলো।
তুলির দেয়া শর্ত্বানুযায়ি আফনান
এইচ.এস.সি তে এ+ পেলেই তাদের
দেখা হবে। বিকেলে দেখা করার
কথা উঠানোর আগেই তুলি ফোন
রেখে দিয়েছিলো।! আফনান তখন
বসা ছিলো সি.এন.জি তে……..আরো ২
ঘন্টা লাগবে তার বাসায় পৌঁছাতে।
রাস্তার ধুলোবালি মাখা বাতাস তার
মুখে এসে লাগছিলো। আফনান এই
বাতাসের ছোঁয়ায়
নিজেকে আরো একা ভাবতে লাগলো।
তার ৩ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ
হওয়ার কথা ছিলো আজ। কিন্তু
তা আর হলো না!......এমনটাই
ভাবতে লাগলো সে। গাড়িটি তখন
ঢাকার কাঁচপুর ব্রিজের
কাছাকাছি……..হঠাৎ
একটি মালবাহি ট্রাক এর প্রচন্ড
ধাক্কায় তার
সি.এন.জি রাস্তা হতে ২/৩ গজ
দুরে গিয়ে ছিটকে পড়ে। তারপর
বিকট
আওয়াজ বিস্ফোরনের!
চারদিকে হৈ চৈ শুরু হলো!!!
আফনানকে গুরুতর আহত অবস্থায়
হাসপাতাল নেয়া হলো…….বোধ হয়
আফনান হাসপাতালে নেয়ার পথেই
পাড়ি জমিয়েছিলো অসীম যাত্রার
পথে! তার বুক
পকেটে পাওয়া গিয়েছিলো একটা রক্ত
মাখা কাগজ!!...
যেখানে লেখা ছিলো, “ক্যানভাস
ছাড়া তুলির যেমন কোন অস্তিত্ব
নেই, তুলি ছাড়াও ক্যানভাসের কোন
মুল্য নেই” ..– রঙ-তুলি!!
পুলিশ আফনানের পকেট থেকে তার
মোবাইলটি খুজে পেলো, মোবাইলের
Yes বাটন চাপতেই
স্ক্রিনে ভেসে আসলো তুলির
নামটি।
কল করা হলো সেই
রক্তে ভেজা পাতায় লেখা নাম
তুলির
কাছে। কল গেলো না! Busy দেখালো।
কিছুক্ষণ পরেই মোবাইলের
স্ক্রিনে ভেসে উঠলো “1 New
Massage” পুলিশ
কর্মকর্তা মেসেজটি Open
করলেন,
……….মেসেজটিতে লেখা ছিলো……..
“Ami Amar kotha rekhechi, Ami
ekhon tomar bashay tomar
opekkhay
achi.
……………….tumi kokhon asbe!! Ami
amar bikeler beboharer jonno sotti
onek dukkhito. Vebe nao seta chilo
tomake surprise deyar ekta
ongsho. I
am really sorry. A+ peye ki amar
kotha bhule gela naki! Taratari
bashay
esho..:p”. . . . . **tuli**
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×