somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

*** মেয়েটি নয় ছেলেটিই বেশ্যা ছিল ***

২৬ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মেয়েটি মারা গেছে। আত্মহত্যা করেছে। নিজেই আজরাইলের হাতে তুলে দিয়েছে নিয়েছে জীবন। একবারের জন্যও ভাবেনি নিজের কথা,ক্যারিয়ারের কথা,বাবা মায়ের কথা। পাগল হয়ে গিয়েছিল,অন্ধ হয়ে গিয়েছিল ভুল এক ভালবাসায়। মৃত্যুর আগে ভয়ানক এক ভিডিও আপলোড করে গেছে নিজের ফেসবুক আইডিতে। এমন এক সমাজের মানুষের উদ্দেশ্য জানিয়ে গেছে তার আকুতি, হয়তো করে গেছে বিচারের প্রার্থনা যে সমাজের মানুষগুলো পোশাকের নিচে পচে,গলে নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই। যারা তার প্রতিবাদের ভাষা বুঝবে না কোনদিন।
হ্যাঁ মেয়েটি অপরাধী। সমাজের চোখে,আইনের চোখে,রাষ্ট্রের চোখে,আত্মীয় স্বজনের চোখে সে অপরাধী । নষ্টা চরিত্রের অধিকারী । তার প্রথম অপরাধ ছিল সে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিল মডেলিংকে । গ্লামার জগতকে । তার দ্বিতীয় অপরাধ ছিল সে ভালবেসে ছিল এক ভুল মানুষকে। বউ হতে চেয়েছিল এক ভুল পরিবারের। ছোট ভাই হিসাবে পেতে চেয়েছিল এক মুখোশ ধারিকে ।
এসবই সে করেছিল একজনকে ভালবেসে ছিল বলে। মেয়েটির আত্মহত্যার খবর চারিদিকে চাউর হওয়ার পর বেশির ভাগ মানুষ মেয়েটাকে মাগি বলছে,বেশ্যা বলছে। ঘেন্নায় নাক ছিটকাচ্ছে। কিন্তু কেন? একবারের জন্যেও কেউ বলছে না, ছেলেটি ওতো দোষী তকে গ্রেফতার করা হোক। শাস্তি দেওয়া হোক। মেয়েটির দোষ সে অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছিল এক ভন্ডকে। সে তাকে বিয়ে করবে এই মিথ্যা আশ্বাসে ভুলে গিয়েছিল। তুলে দিয়েছিল ছেলেটির হাতে নিজের নারীত্ব,বিশ্বাস সব সব। কিন্তু সে জানতো না কি ভয়ানক পরিণতি অপেক্ষা করছে তার জন্য। সে জানতো না সে ভুল পথে হাটছে । জীবন দিয়ে যে ভুলের মাশুল গুনতে হবে। সে বুঝতে পারেনি গ্লামার জগতের মেয়েদের পুরুষ নামের পশুগুলো শুধু ভোগ করতে চায় তাদের ঘরের বউ করতে কেউ চায় না । সে অধিকার তাদের নেই ।
মেয়েটি যদি বেশ্যা হতো, খারাপ হতো তা হলে সে আত্মহত্যা করতো না। বেচে থাকতো । অন্য কাউকে সব লুকিয়ে বিয়ে শাদি করে সংসারও করতো। মেয়েটি যদি বেশ্যা হতো, তা হলে চেপে যেত সব। গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াত । ভাত ছেটালে যেমন কাকের অভাব হয় না ঠিক তেমনি ওর জন্য কোটিপতি পুরুষের অভাবও হতো না ।
মেয়েটির অপরাধ সে এক ভুল সমাজে, ভুল সময়ে, ভুল জায়গায় জন্ম নিয়েছিল। যে সমাজের জন্ম দিয়েছি আমরা । মেয়েটি নয় ছেলেটিই ছিল বেশ্যা। একজন খাটি বেশ্যা পুরুষ। আপনারা যারা মেয়েটির সরলতা,বিশ্বাসের মূল্যায়ন না করে তাকে বেশ্যা বলছেন আপনারাও সবাই এক এক জন বেশ্যা।
সব কিছু "আত্মহত্যা মহাপাপ" এই সরল ইকুইশনে বিচার করা ঠিক নয়। মেয়েটির সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। তাকে মৃত্যুর কুপে ঝাঁপিয়ে পরতে বাধ্য করা হয়েছে । ছেলেটি দিনের পর দিন মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে যে শারীরিক সম্পর্ক করেছে সেটি মূলত ছিল ধর্ষণ । প্রতারণা । সে অভিযোগে ছেলেটি দোষী। শেষ মুর্হুতে মেয়েটি এটি উপলদ্ধি করতে পেরেছিল । কিন্তু তখন তার আর কিছু করার ছিল না । তাই সে অপরাধের প্রতিবাদ মেয়েটি জীবন দিয়ে করে গেছে। হয়তো পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসলে দেখা যাবে মেয়েটি প্রেগন্যান্ট ছিল । সে ক্ষেত্রে হবে দুটি মানুষকে হত্যা করা ।
মানুষের ভুল হয়ে যায় । কেউ শুধরেও নেওয়ার সুযোগ পায় কেউ পায় না । কেউ বুকে পাথর চাপা দিয়ে দু:খ আটকে রাখে কেউ আবার হাসি মুখে সব সহ্য করে । কেউ একেবারেই সহ্য করতে পারে না । এ মেয়েটিও পারেনি । যারা ওর ভিডিওটি দেখেছেন তারা কি শুনতে পাননি কি আবেগ আর কষ্ট থেকে কথাগুলো বলছিল মেয়েটি । ছুরি দিয়ে নিজেকে আহত করার চেষ্টা করতে করতে এক সময় মেয়েটি বলে উঠে, সামান্য একটু ব্যথা পেলে কতো কেঁদেছি । আর এখন নিজেকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছি, রক্তাক্ত করছি । এ রক্ত শুধু তার শরীর থেকে বের হয়নি এ রক্তক্ষরণ হচ্ছে সমাজের শরীর থেকে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×