শিক্ষকের কান ধরে উঠ বস করানো নিয়া যারা জাত গেল জাত গেল করতাছেন তাদের বলছি , শিক্ষকেরা ও মানুষ । তারাও দুনীতি করে, স্কুলের টাকা মেরে খায় । জি হ্যাঁ তারাও সুযোগ পেলে ফুসলিয়ে ফাঁসলিয়ে ছাত্রী ধর্ষণ করে । পরিমলের কথা কি ভুলে গেছেন ? আমাদের স্মৃতি শক্তি এমতেই খুব দুর্বল সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যাই । শেখ হাসিনা একবার তামাশা করে এক বক্তিতায় বলছিলেন এ কথাটা । কথাটা মনের ভেতর গেঁথে আছে ।
আচ্ছা বলুন তো দেখি, শিক্ষক শব্দটার কোন ধর্মের ? এই শব্দটা হিন্দু না মুসলমান নাকি বৌদ্ধ না খ্রিষ্টান ? এ দেশে এখন আন্দোলনগুলো জাতী ধর্মের উপর নির্ভর করে । সবাই সবাইকে আলাদা করে দেখে । কেউ কাউকে মানুষ হিসাবে দেখে না । এখন আমরা আর মানুষ নই হয় মুসলমান নয় হিন্দু নতুবা অন্য কিছু । ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখেন এখন এটাই হচ্ছে । টাকার বস্তা নিয়ে ধরা পরার পরেও রহস্যজনক কারণে কেউ দপ্তরহীনমন্ত্রী থেকে যায় । আবার জামাতের দলীয় পরিচয় মুছে ফেলে কেউ নৌকার টিকিট পায় । আবার সংখ্যা লঘুর তকমা লাগিয়ে ফায়দা লুটে । কিন্তু নির্যাতিত বিচার পায় না । মিডিয়ার কাটতি বাড়ে। রাজনীতিতে সব চলে ।
শিক্ষক শব্দটির কোন ধমের অন্তভুক্ত নয় । এট কোন ধমের সম্পত্তিও নয় । এই শব্দের সঙ্গে যিনি নিজের নাম যুক্ত করেন তিনি হয়ে উঠেন সকল র্ধমের লোকের জন্য আর্দশ । শিক্ষক শব্দটি একটি আর্দশের নাম । একটি শ্রদ্ধীয় উর্চ্চরন । বাংলা ভাষায় যতোগুলো শব্দ রয়েছে পিতা, মাতার পরেই আমি এই শব্দটিকে রাখবে । কেননা শিক্ষকেরা মানুষ গড়ার কারিগর । তারাই সমাজ গড়েন । তাদের হাতেই জাতীর ভবিষ্যত । কিন্তু তারা ও তো মানুষ ! তাদের মধ্যেও ভাল মন্ধের মিশ্রন রয়েছে । সমাজে ভাল শিক্ষক যেমন আছেন খারাপ শিক্ষকও তেমনি আছেন । একজন শিক্ষকের কারণে একটি শিশুর জীবন যেমন উজ্জল হয়ে উঠে ঠিক তেমনি কিছু শিক্ষকের কারণে অনেকের জীবন নরকে পরিনত হয় ।
নারায়নগঞ্জের শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার পর দেখতে পাচ্ছি বিষয়টিকে অনেকেই হিন্দু মুসলিম দৃষ্টি কোণ থেকে দেখছেন । এটা ঠিক হচ্ছে না । অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে । সে এমপি হোক কিংবা শিক্ষক হোক । আমি মনে করি একজন আদর্শ শিক্ষক যতোক্ষন তার শিক্ষা প্রতিষ্টানে থাকেন ততোক্ষন তিনি পিতার আসনটি দখল করে থাকেন । নারায়নগঞ্জের এমপি সাহেব অত্যান্ত অন্যায় একটি কাজ করেছেন । সব চেয়ে মজার বিষয়টি হচ্ছে, ভাল করে খোজ নিয়ে দেখুন ঐ শিক্ষকের শাস্তিতে ঐ বিদ্যালের অনেক শিক্ষই খুশিতে ডুগডুগি বাজাচ্ছেন । তাদের অনেকে আবার দীঘদিন যাবত এই চক্রান্তের সাথে জড়িত ।
সবচেয়ে ভাল ছাত্রটিই সবচেয়ে ভাল শিক্ষক হতে পারেন । সেটাই হওয়া উচিত কিন্তু এদেশে এখন যারা শিক্ষাকে পেশা হিসাবে বেছে নিচ্ছেন তারা বাধ্য হয়ে নিচ্ছেন । কেননা দেশের বর্তমান অবকাঠামো অনুযায়ী তাদের যে বেতন দেওয়া হয় তাতে জীবন চলে না । চলার কথা নয় । ভাল ছাত্ররা চলে যায় অন্য পেশায়। খারাপেরা তাই এই পেশাটিকে নিয়ে বাণিজ্য শুরু করে ।
এক একটি শিক্ষা প্রতিষ্টান এখন পরিনত হয়েছে বাণিজ্য প্রতিষ্টানে । এক সময়ের সব চেয়ে খারাপ ছাত্রটিই এখন একটি বাণিজ্যিক শিক্ষা প্রতিষ্টানের মালিক । তারই আন্ডারে কাজ করতে হচ্ছে, অনেক ভাল শিক্ষকদের । যারা প্রায় সকলেই মামা খালুর জোড় নেই বলে । চাকরী বাকরী না পেয়ে একান্ত বাধ্য হয়ে শিক্ষাকে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন । শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলো ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা নিলে ও শিক্ষকেরা সে টাকার মুখ দেখেন না । এটা সমাজের জন্য লজ্জার । এটা রাষ্ট্রের জন্য লজ্জার ।
একজন শিক্ষকের সাথে অশোভন আচরণ করা হয়েছে, তাই আমরা তার প্রতিবাদ করছি । যারা এটাকে ধর্মীয় রঙ্গে রাঙিয়ে রং ছড়াতে চাইছেন তাদের কে বলবো সব কিছু নিয়ে রাজনীতি ফাজনীতি করা ঠিক নয় । তাতে নিজেরই ক্ষতি হয়ে থাকে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:৫৭