বাংলাদেশে চাকরী নাই, এই কথাটা ঠিক না হলেও, চাহিদা অনুযায়ী চাকরীর বিজ্ঞাপনের সংখ্যা অনেক কম এটা মানতেই হবে! বিডি জবস ডট কম ওয়েবসাইটে বর্তমানে ৪৪২৪-টি চাকরীর বিজ্ঞাপন ঝুলছে! প্রতি মাসে যদি গড়ে ৩০০০টি চাকরীর বিজ্ঞাপন আসে, তাহলে, বছরে ৩৬,০০০ ভেকেন্সী তৈরী হচ্ছে। যদিও বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লক্ষ।
.
বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা অনেক দেশের চেয়ে কম। এক হিসেবে দেখা গিয়েছে, ভারতে বেকারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি, পাকিস্তানে ৪৫ লক্ষ। দক্ষিণ এশিয়ার এই দু'টি দেশের চেয়ে কম হলে, বাংলাদেশের প্রায় ২৬ লক্ষ বেকারকে কিভাবে চাকরী দেওয়া যাবে?
.
এর তিনটি সমাধান। ১) দেশে নতুন চাকরী তৈরি করা, ২) বেকারদের দেশের আবিরে জব দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া, ৩) বেকারদের প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ দিয়ে ব্যবসায়ী হিসেবে তৈরী করা।
.
এই ৩টি সমাধানের মাঝে আমাদের সরকারের হাতে ৩-নং সমাধানটি রয়েছে। সরকার আগামী ৫ বছরে ৫ লক্ষ নতুন ব্যবসা তৈরী করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশে বেকারদের সংখ্যা প্রায় শূন্যতে নেমে আসবে। আর, একটু নজর দিলে, এটা করা সম্ভব!
.
২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ লক্ষ নতুন স্টার্ট-আপ রেজিস্টার্ড হয়েছে। এর মাঝে, করোনা যে বছর শুরু হয়, সেই বছর সবচেয়ে বেশি কোম্পানি রেজিস্টার্ড হয়, যার সংখ্যা ৮ লক্ষ ১০ হাজার ৩১৬টি। অর্থাৎ, দূর্যোগের সময়েই সেই দেশের মানুষ ব্যবসা করার দিকে ঝুঁকেছে।
.
বাংলাদেশেও কি এটা সম্ভব? এতো এতো কোম্পানীকে এতো অর্থ যোগান দিবে কোথা থেকে সরকার? অর্থ যোগান দেওয়া দিলে এতো ব্যবসায়িক আইডিয়া কোথা থেকে আসবে?
.
প্রথমেই অর্থের কথা ভাবা যাক। নতুন ব্যবসায়ীরা কোথা থেকে এতো টাকা পাবে? ২০২১ সালে প্রথম আলোর একটি রিপোর্টে উঠে আসে, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে ৬০০০ বিলিয়ন টাকা অলস পড়ে রয়েছে যা কোন কাজে লাগানো হয় না। এই টাকার ২৫% অর্থাৎ ১৫০০ বিলিয়ন টাকা যদি নতুন ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় বিনিয়োগ হিসেবে দেওয়া হয়, তাহলে?
.
এখন কথা হচ্ছে, অর্থ দিয়ে দিলেই তো সমাধান হবে না! নতুন ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সামলানো লাগবে। তার জন্যে প্রয়োজন বুঝদার ম্যানেজমেন্ট। আর, একজন সমঝেনেওয়ালা ব্যবসায়ী হওয়ার জন্যে প্রয়োজন সঠিক স্কিলস। সরকার যদি ঠিক করে যে, আগামী ২ বছরে দেশের ৬৯৪টি উপজেলায় ব্যবসায়িক স্কিলস গড়ার জন্যে ১০টি করে ইন্সটিটিউট করবে, আর এই ৬৯৪০ টি ইন্সটিটিউটে প্রতি বছরে ১০০ জন করে ৬৯৪০০০-জন করে ব্যবসায়ী তৈরী করবে, তাহলে ১ বছরে কমপক্ষে ৫ লক্ষ নতুন ব্যবসা তৈরি হয়ে যাবে।
এরপরে, এই ইন্সটিটিউটগুলো থেকে নতুন ব্যবসায়ীদের যদি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ ভিত্তিতে বিনিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে, বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব শীঘ্রই ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড দেশগুলোকে টেক্কা দেওয়ার পর্যায়ে চলে যাবে।
এজন্যে প্রয়োজনীয় ডাইভ দিতে হবে। সবাইকে ঐক্যবধ্য হতে হবে। তাহলেই, একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:০৫