কাপালিক(চতুর্থক কবিতা)
কাপালিক! তুমি নৃত্য কর, তখনও কি চিত্ত সাজে না লোহিতের লোহা ঘরে!
এ হাতে খঞ্জর ঘাড় ভেদ করে , গড়ে পাপী-পূণ্যবানের সুখ তার শুষ্ক অধরে
ভেদাভেদে পূণ্য জোটে কি? রটে কি নির্বাক প্রেম , পুঁতিগন্ধময় ঘামের সোঁদা গন্ধে?
এসো! প্রবেশ করো মহাশূণ্যে,লোহিতের উল্লাসে , জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
কে গো তুমি কাপালিক! কাটো মাথা! দ্যাখো! প্রসন্ন চিত্তে বসেন মা কালী
ধুতুরা ফুল অনাঘ্রাতা? ত্রাতা? নাকি বিভীষণ রুপী ভ্রাতা, চাই না এ স্বর্গলোক
স্বর্গ-মর্ত্য-নরকে , সড়কের ধর্মঘটের তুলসী পাতা, তুলে নিয়ে গেছে মালি
মালি! মা কালীকে শুধাও , উধাও কেন প্রভু-ভৃত্যের নৃ্ত্যের ঘি-প্রদীপের আলোক?
লোহা ঘরে বসে খঞ্জরে শান্ দেয় সে, দ্যাখে যেন ঘাড়ের শিরা-উপশিরাগুলি আয় আয় হাঁকে
অন্ন জোটেনা, পূ্ন্য জোটানো চাই, পূণ্য ছাড়া অন্নপূর্ণ জীবনটাই বৃথাই
আহা! অন্নের কথা বন্য লোকেরা ভাবে, অন্ন চিন্তায় জীবন কেটে যাবে?
শুষ্ক অধর, শোনিতে ভিজিয়ে নাচে কাপালিক নাচে , আহা! স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ কর্মী পুরুষটাই!
ধুতুরা বাগানে কবে ঢুকে গেছে সাপ , কেবল ঢোকেনি পরিতাপ, অনুতাপ কোন ভয়াল সংকটে
সেই অভিশাপে , চিতার নিদারুন তাপে , ছাই হয় , সব প্রেম অনাঘ্রাতা ফুল বাগানের ঘাটে
সুখ নাই, এই সুখের বিশ্বে , যত নিঃস্বেরা নিয়ে গেছে সুখ , পূণ্য কিংবা পাপের অন্তরালে
মালি! মা কালীকে শুধাও! উধাও কেন প্রভু-ভৃত্যের নৃ্ত্যের অদ্ভূত আকালে?
শোন! পরকালের তপ্ত কড়াইবাসী! সে আগুনে তারাই জ্বালানি , একালে যারা তোমার দাস-দাসী
এসব ঠুনকো প্রলাপে ,বিশ্বাস গেছে টুঁটে, সাপের ভয়াল নিঃশ্বাসে, নিরো আজও একাই বাজায় বাঁশি।
তবু শেষবারের মত এসে দেখে যাও , চিতায় জ্বলছে তোমার হৃদয়, উড়ে যায় ছাই, মহাশূণ্যের রন্ধ্রে রন্ধ্রে
জোট বেঁধেছে সেই বন্য লোকেরা আজ, অন্ন খোঁজাই ছিল যাদের কাজ তাদের শক্তি মিলেছে আজ তাদের মনিবন্ধে ।