এগিয়ে চলা গাড়ির কাচের মধ্য
দিয়ে এক ঝলক দেখি তাকে....ছোট্ট
একটা মেয়ে হাটু পর্যন্ত
ফ্রক...পিঠে স্কুল ব্যাগ...মাথার উপর
ছাতা...
আরও কিছু ছিল তার সাথে ...
ভয়...
চোখে অপরিসীম ভয়....আর ঠোঁট
চেপে রাখা আতঙ্ক...
গাড়ি থামিয়ে তার
সাথে যেতে থাকি.....
ততটা দুরে সে আমার....ঠিক
ততটা যতটা সময়ের ......
তার মুখ খানি ছাতার আড়ালে প্রায়
ঢাকা ....
এক সময় ঢুকে যায় সে মফস্বলের এক
প্রাইমারি স্কুলে ...
শিক্ষকের টেবিলের উপর
রাখা কাগজে তাকিয়ে দেখি আজ
তার ফাইনাল পরীক্ষা
অনেকক্ষন হয়ে গেলেও তার
লেখা শেষ হয় না...
অধৈর্য শিক্ষক বলে উঠলেন আর
পনেরো মিনিট পর সময় শেষ
হলে খাতা নিচে দিয়ে আসবে ...
আমি বাকিদের
খাতা নিয়ে নিচে গেলাম ..
মাথা নেড়ে লিখে যেতে থাকে
সে...
ভাবছি তার খাতার উপর
লেখা নামটা এবার দেখবো ...এমন সময়
হঠাৎ এক দল ছেলে এসে ঢুকল
খালি রুমটাতে...এইবার একটা চটকদার
রেপের কাহিনীর গন্ধ এসে ভক
করে লাগলো নাকে...
মেয়েটা চট করে দাড়িয়ে গেল
খাতা নিয়ে ....অসমাপ্ত লেখার
দাড়ি টুকু না দিয়েই
হুর্মুরিয়ে বেরিয়ে শিক্ষকের
রুমে গিয়ে খাতা জমা দিল...তখনও
ছেলেগুলো বাইরে অপেক্ষায় ....
মেয়েটা শিক্ষককে নানা প্রস্ন
করতে করতে আড়চোখে তাকিয়ে
দেখে ছেলেগুলো নেই....
বেরিয়ে স্কুলের মাঠে যেতেই
তারা ঘিরে ধরে...একজনের
কানে গোজা ফুল
হাতে চিঠি ....কি ভালবাসার
কথা তাতে আজ মেয়েটার চোখে ভয়
এনে দিল.....???
একজন বলে এই তোমার নাম কি???
মেয়েটা ব্যাগ থেকে স্টিলের
স্কেল বের করে ফেলেছে ততক্ষনে ...
আর এক
পা কাছে আসলে পা ভেঙে দেব!!!!
রক্ত গরম চোখের
চাহনীতে কি দেখে ছেলেগুলো
সরে পড়ল ভিড়ের
পিছনে আমি দেখতে পেলাম না....
যা হোক..এবার
মেয়েটা হাটা ধরলো ....নাহ কেউ
নেই
পিছনে ...চেপে থাকা নি:শাসটা
এবার বের করা যায়...
হাটতে হাটতে একটা বাড়িতে ঢুকে .
...
দরজা খুলে এক মহিলা উতকন্ঠিত গলায়
জিজ্ঞেস করে আজ
জালায়নি তো বদমাশগুলা?
ঝপ করে ব্যাগ রেখে জানালায়
গিয়ে বসে.....
বাতাসের ঝাপটায় সব ভুলে দুরের সবুজ
মাঠের দিকে তাকায় .....কেমন
দুরে দুরে সবুজগুলো...সময়ের মত কেমন
যেন দুরে দুরে...
পাশে গিয়ে বসি আমি.....
নতুন বানানো সাদা ধবধবে এপ্রোন
গায়ে নিজের সাথে অনেক বছর পর
একটু সময় কাটাতে থাকি আজ.......
(লেখকের সত্য ঘটনা অবলম্বনে#)