সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেল।
চোখ খুলতেই একটা শূন্যতা।
আজ কাল কি হয়েছে কিছুতেই অফিসে যেতে ইচ্ছে করে না।
যখন তখন নিলার হাত ধরে বসে থাকতে ইচ্ছে করে।
ঘণ্টার পর পর ঘণ্টা গল্প করে যেতে ইচ্ছে করে।পিছন থেকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে।
ভালবাসা যেন নতুন করে আমাদের একাকার করে দিয়েছে...
বিয়ের যদিও বেশী দিন হয়নি, তবুও খাপছাড়া লাগে এসব অনুভুতি।
কাজের মাঝে মাঝে হঠাত্ ভীষণ একা লাগতে শুরু করে।
অথচ...
আগে এমনটি ছিল না।
এখনও নিলার ঘুম ভাঙ্গেনি
যদিও আজ শনিবার
ওর Class ও থাকার কথা না।
ঘুমোবার অনেক সময়।
তবুও ওর আরাম করে ঘুমানো দেখে বিরক্ত লাগেহিংসেও হয়,আবার রাগ ও লাগে।
আমার যে বেরুতে হবে সে খেয়াল ও নেই মেয়েটার
আজ কাল কাউকেই Care করে না যেন।
ইচ্ছে হল ঘুমিয়ে আছে।ওঠার নামই নেই।
এত careless!!
অথচ....
আগে এমনটি ছিল না
বাগানের শেষ মাথায় একটা কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ
কুয়াশা ঘেরা দিনের শুরু
হালকা হাওয়া যেন অশীরিরি কান্নার সুর বয়ে আনে।
মাত্র তিন বছরেই গাছটা কত বড় হয়ে গেছে।
এবারই প্রথম ফুল ফুটেছে।দু'বছরের বিলম্ব পুষিয়ে দিতে যেন এত এত ফুল।এত বেশী লাল।
অথচ...
আগে এমনটি ছিল না....
হাটতে হাটতে পৌছে যাই অবশেষে
-এই উঠবেনা নাকি আজ?
জবাব নেই।
নিস্ফল ক্রোধে চিত্কার করে উঠি।
অথচ...
আগে সত্যিই এমনটি ছিল না।
আগে....
ভালবাসা ছিল।
রাগ ছিল...
তীব্র অভিমান ছিল।মধুমাখা পূর্ণচ্ছেদ ছিল।
আজও তো ভালবাসা আছে।
অথচ আজ...
টপ করে একফোঁটা পানি গালে এসে পড়ে।
চমকে উঠি!
খুব প্রিয় একটা মুখ মনে ভেসে ওঠে।
সব সময় যে মুখ বুকে নিয়ে দিন কাটে।
অভিমানী সেই দৃষ্টি।
দু চোখ ছাপিয়ে উপচে পড়ত এক একটা বড় বড় পানির ফোটা।
ঠোট দিয়ে প্রতিটা ফোটা মুছে দিতাম।
আজও কি তারই কান্না আমার ঠোঁট ছুতে চাইলো?
-কি করে ঘুমাও তুমি আমায় রেখে??
কি করে থাক তুমি আমায় ছাড়া?
আমাকে ছেড়ে থাকতে পারনা-
খুব তো বল তে!!
মিথ্যেবাদী!!!!
তুমি মিথ্যেবাদী!!
শুনতে পাও না আমার কান্না??
এতটাই কি বধির তুমি আজ??!!
নিলার মতই মায়া ভরা ফুলগুলো
গাছটাও অকৃতজ্ঞ নয়
প্রতিদিন আমি আসার আগে সে আমার নিলাকে সাজিয়ে দেয়।ওর কবর প্রায় ঢেকে যায় অজস্র লাল ফুলে....
প্রতিদিন সকালে এখানে এসে দাড়াই।
নিলা ওর রাজ্যের অভিমান নিয়ে বসে থাকে-
যেন আমিই ওকে একলা রেখে এসেছি।
ও অভিমান করে....
আমি ওকে জড়িয়ে ধরি।
ও কাদেঁ.....
গাছের টুপটাপ শিশিড় ওর জমানো কান্না বয়ে আনে...
আমি পরম ভালবাসায় ভিজতে থাকি..............................