ফটোগ্রাফি বিষয়টি ঠিক কবে আমার মাথায় এসেছিল মনে করতে পারছিনা, ছোট থাকতে দেখতাম বড় ভাই বোন ক্যামেরায় রিল ভরে যার যার নিজের ছবি তোলে, (তখন মোবাইল ক্যামেরা অথবা ডিজিটাল, ডি,এস,এল,আর ক্যামেরার যুগ বাংলাদেশে চলে এসেছিল, কিন্তু টেকনোলজি থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিল তখনো এক বিশাল জনগোষ্ঠী, আমাদের পরিবার সেই বিশাল জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।) রীল ক্যামেরাটা ছিল দুবাই থেকে আমার বাবার পাঠানো, আমি খুব ছোট হওয়ায় ওটার একচেটিয়া ব্যাবহার শুধু বড় ভাইবোনদের।
তারা নিজেদের ছবি তোলার পরই মাঝে মাঝে করুনা হলে আমার দুই একটি ছবি তুলত কিন্তু আমার কাছে আমার নিজের ছবি তোলার চাইতে আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য তুলতে খুব বেশি ইচ্ছে করতো, কিন্তু সে কথা বলার সাহস কি আর আমার ছিল! তাই ইচ্ছেটাকে কঠিন শাসনে দমন করে রাখতাম। তবু একদিন খুবি দুঃসাহসিক এক কাজ করে বসলাম আমি কিছু ঘাসের ছবি তুললাম, চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম বড় ভাইবোনেরা তখন নতুন এক জায়গা খুজে পেয়েছে ছবি তোলার। আমি কিছু না বলে চুপচাপ ক্যামেরাটা বড় ভাইয়ের হাতে দিয়ে দিলাম, কেউ কিচ্ছুটি টের পায়নি।
ভেতরে ভেতরে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে ছিলাম কবে ছবি প্রিন্ট করবে! কবে আমি আমার তোলা ছবিটা দেখব, তখন ঠিক জানতাম না যে এটাকে ফটোগ্রাফি বলে, সাংবাদিক ছাড়া সবাই নিজের ছবিই তোলে আমার অন্তত তাই ধারনা ছিল , আমার আশেপাশের জগতটা ছিল বেশ সংকীর্ণ! এখনও অনেকটা সেরকমই আছে। যাই হোক অধীর আগ্রহে আমি অপেক্ষা করছি আমার তোলা ঘাসের ছবিটি দেখার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব ছবি প্রিন্ট করে আনার পর দেখলাম আমার তোলা ছবিটা নেই।তারা ছবির নেগেটিভ দেখে জ্বলে গেছে ভেবে আর ওটা প্রিন্টই করেনি। যাক তবু সান্ত্বনা ছিল তারা অন্তত বুঝতে তো পারেনি যে ওটা জ্বলে যাওয়া ছবি না, আমার তোলা ছবি। বুঝতে পারলে কি ঝড় তুফানই না যেত আমার উপর দিয়ে!!!
আমি প্রিন্ট দেখতে চাইলাম কিন্তু সবার ছোট বলে নিন্মতম মান মর্যাদা কিংবা অধিকারের কিংবা ভাললাগা মন্দ লাগার বালাই ছিল না সেসময়(এখনও নেই) আমার ফটোগ্রাফি বিষয়ে আসি। তারপর আমার আর সেই ছবি কোনদিনও দেখা হলনা, এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর আমার কোন এক স্কুল প্রোগ্রামের জন্য আমি ক্যামেরার বায়না ধরি বড় ভাইয়ের কাছে, বান্ধবীদের সাথে ছবি তুলবো, ভাই এর দয়া হল সে আমাকে ক্যামেরায় রীল ভরে দিল অনুষ্ঠানে নেয়ার জন্য। আগেই বলেছি সে সময় মানুষ মোবাইল Use করা শুরু করেছে কিন্তু আমি মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলা দূরে থাক হাতের নাগালেই পাইনি, আমায় মাথায় তখন কাজ করতো ডি,এস,এল, আর ক্যামেরা। যা আমার বাবাকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করার পর ও কিনে দেয়নি, এটা আমার বেলায় হত, আমার কোন আবদারই বাসায় Granted হত না।
যাই হোক, সেদিন আমি পুরনো দিনের রিল ক্যামেরা নিয়ে গেলাম স্কুলে, অনেক ছবি তুললাম বান্ধবীদের সাথে উত্তরা ৭ নাম্বার পার্কে। (উত্তরা ৭ নাম্বার পার্ক আমার জীবনে নস্টালজিক জায়গা)তখন হঠাৎ দেখি কি ঘাসের উপর একটা প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে, জীবনের সেকেন্ড ফটোগ্রাফি ছিল ওটা, এবং এবার ছবি প্রিন্ট ও করা হল, ছবিগুলো প্রিন্ট করার পর সব এক সাথে নিয়ে গেছি বান্ধবীদের দেখাতে, সেখানে ঘাসের উপর প্রজাপতির উড়ে যাওয়া দৃশ্য দেখে খুব মুগ্ধ হয়ে এক বান্ধবী বলল বাহ! আমি ওর বাহ!তে যার পর নাই খুশি হয়ে গেলাম , শুধু যে খুশি হলাম তাইই না, ছবিটি সুন্দর একটা খামে ভোরে ওকে উপহার দিয়ে দিলাম। সেই ছিল আমার প্রমান বিহীন ফটোগ্রাফির শুরু।
Bubble
পথোসঙ্গী
উচ্ছাস
শুভ ভোর
ভীষণ একাকিত্তে
কাকেরা
আমাদের রাজপথ
বন্য
ইতিহাস কথা (পানাম সিটি)
ভীষণ একলা
ফুলের স্নিগ্ধতা
চড়ুই
সূর্য ডোবার ক্ষণে
মেঘ ভর্তি আকাশ।
বাবুটা.......
নিরিবিলি ভালোবাসা
কুয়াশা দিগন্ত
দিগন্ত জুড়ে আলো
বুনো ফুল ।
নদী ও নৌকা
Device Nikon D5100
Thanks For watiching
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:২০