মেহেরজান
বাংলাদেশ নামের টইটম্বুর বিতর্কের চৌবাচ্চায় নতুন বুদবুদ......
এরই মধ্যে উঠেছে / উঠছে / আরো উঠবে......
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন তনয়া রুবাইয়াৎ হোসেন চলচ্চিত্রটির প্রানকন্যা......
কাহিনীকার /পরিচালক......
সোজা কথায় অলরাউন্ডার ম্যান অফ দা ম্যাচ......
প্রসংগত জানিয়ে জানিয়ে রাখি সর্বজনাব আবুল হোসেন সাহেব আওয়ামী লীগ ৯৬ তে ক্ষমতায় আসার পর আদম ব্যবসার মাধ্যমে কাঁচা টাকার তেলের খনি পেয়ে গিয়েছিলেন.....
আলিবাবা ৪০ চোরের মতই তিনি আদমব্যবসার ঐ কাগুজে তেল ড্রামে ড্রামে ভরে রেখেছিলেন..........
সেই সকল ড্রাম উপচে পড়া তেলেই মেহেরজান নামের সিনেমাটি ভাজা হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিত নই.....
আর মসলা ?
অনেক পুরোনো ব্র্যান্ড :
রোমান্স ক্রসিং দা এনিমি লাইন
এই ব্র্যান্ডের মসলায় এর আগেও ভুরিভুরি ফিল্ম ভাজাভুজি হয়েছে.....
হয়েছে দুনিয়াটা জুড়ে.......
আর উপমহাদেশে এই হুজুগের পালে দমকা বাতাস লেগেছিলো ৬ বছর আগে......
২০০৪ সালে....
মনে পড়ছে ?
বাংলা- দিল্লী- করাচী (ভায়া বিহার - উড়িষ্যা) কাঁপানো ,
উপমহাদেশের লাখো লাখো কপোত কপোতীর প্রেম উদ্বেল ডানা পতপত করে ঝাপটানো :
ভারতীয় বৈমানিক বীর প্রতাপ সিং ( শাহরুখ ) আর পাকিস্তানী তরুনী জারা হায়াত খানের ( প্রীতিজিনতা) ভেতরকার অচ্ছেদ্য প্রেমের গল্প.......
বীরজারার ঝাক্কাস ধাক্কায় আরেকটি রোমান্স অ্যাক্রস এনিমি লাইন "ফানাহ" ও সুপার ডুপার হিট হয়েছিলো....
ভারতীয় পরিচালক যশ চোপড়া বীরজারা মুভিতে ভারতীয় বীরপ্রান যুবক বীরপ্রতাপ সিং কে তুলে ধরেছেন বিশাল প্রেমিক হৃদয়ের এক মানুষ হিসেবে.....
এনিমি লাইনের ছেদরেখা মাড়িয়ে যে চিরশত্রু দেশের হৃদয়হারিনী জারার জন্য ছুটে যায়......
অন্যদিকে বাংলাদেশী পরিচালক রুবাইয়াৎ কি দেখিয়েছেন ?
তিনি দেখিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের নিষ্ঠুর প্রিডেটর পাকিস্তানী বাহিনীর এক সেনা ওয়াসিম খান ( ওমর রহিম ) দলত্যাগ করে বাঙালী নয়নহারিনী মেহেরজানের ( শায়না আমিন ) প্রেমে পড়ে গেছে.....
ঠিক এই জিনিসটি যদি কোন পাকিস্তানী চলচ্চিত্রকার তার মুভিতে দেখাতো তাহলে আমি সাধুবাদ দিতাম.....
দিতাম এটা ভেবে যে......
যাক ! পাকিস্তানীদের মাথায় বুদ্ধিসুদ্ধি কিছু হয়েছে তাহলে......
মুক্তিযুদ্ধের ২০০০০০ লাখ ধর্ষনের কলংক ২০০০০ এ নামানোর জন্য ভাড়াটে হার্ভাড গ্র্যাড শর্মিলা বোসের প্রজেক্ট ক্লোজ করে মুভি প্রজেক্টে পাবলিকের ট্যাক্সের রূপী গুলো খাটাচ্ছে.......
কিভাবে তাদের কোন মহান হৃদয় সেনা বাঙালী নারীকে ভালোবেসেছিলো তার একখান কাল্পনিক গল্প ফেঁদে সেন্টিমেন্টের খেঁজুর গাছে কলসী ঝুলিয়ে দিয়েছে.....
দেখা যাক সেন্টিমেন্টের রস কতখানি জমে.....
তাতে নারী দেহের প্রতি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কার্নাল অ্যাডিকশনের কলংক দাগ কিছু মোছা যায় কিনা........
কিন্তু নাহ , তা আর করা লাগেনি......
পাকিস্তানী পরিচালকের প্রক্সিটা দিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশী নারী রুবাইয়াৎ .....
যার স্বজাতির নারী সম্ভ্রম হারিয়েছিলো পাকিস্তানী পুরুষ সেনাদের কাছে...
অথচ বিএসএফের চেয়ে তিনকাঠি সরেস ভারতীয় সেনাদের মাহাত্ন্য প্রমানের জন্যই কিন্তু বীরজারার মত চলচ্চিত্র নির্মান হয়.......
নির্মান হয় যশ চোপড়ার মত ভারতীয় পরিচালকদের দারুন কৌশলে.....
শাহরুখের মতো হার্টথ্রবের কাস্টিং এ......
অথচ দেখুন - পাকিস্তানী কোন চলচ্চিত্রকার আজঅব্দী কখনো কোন ভারতীয় রোমিও সেনার সংগে পাকিস্তানী জুলিয়েটের কাল্পনিক মুভি বানায়নি....
ভারতও বানায়নি কোন পাকিস্তানী রোমিও সেনার সংগে ভারতীয় জুলিয়েটের বানোয়াট প্রেম গাঁথা...
সবাই সেয়ানা পাগল..... জাতে মাতাল হলেও তালে ঠিক থাকে......
সবাই স্বজাতির পুরুষকে রাম আর নারীকে সীতা ক্যারেক্টারাইজ করে
শুধু বাঙালীই ন্যাংটো.......
মেহেরজান সিনেমাটির গল্প পুরোপুরিই কাল্পনিক.....
কিন্তু ওমর রহিমের ওয়েব সাইটে কিন্তু বলা হচ্ছে এটি সত্য গল্প.........
পরিচালক রুবাইয়াৎ হোসেনের আরো একটি সুক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা না করে পারছিনা......
মেহেরজান সিনেমাটিতে ওয়াসিম খান কে দেখানো হয়েছে বালুচ রেজিমেন্টের সৈন্য হিসেবে , বালুচিস্তান নামে পাকিস্তানের আরেক নিপীড়িত জনপদের সন্তান হিসেবে......
যদি ওয়াসিম খান চরিত্রটিকে পান্জ্ঞাবী সৈন্য হিসেবে দেখানো হতো তাহলে মুভিটা প্রিমিয়ারের দিনেই "গান্জ্ঞাবী" টাইটেল পেয়ে যেতো তা বলাই বাহুল্য......
বীরজারাতে ভারতীয় এক বিমান সেনার অপার মাহাত্ন্য দেখানো হয়েছে....
এবার বীরজারা থেকে ফানাহ'র দিকে তাকানো যাক....
সেখানে কি দেখানো হয়েছে ?
সেখানে দেখানো হয়েছে দৃষ্টিশক্তিহীন ভারতের মেয়ে জুনি আলী বেগের ( কাজল ) প্রেমে পড়েছে কাশ্মীরি যুবক রেহান খান ( আমির খান )।
মুভির কনক্লুশনটা কি ?
জুনির প্রতি রেহানের ভালোবাসা পারেনি রেহানের ভেতর থেকে পাকিস্তানী মদদের সন্ত্রাসী উন্মত্ততাকে কর্পূরের মত উবে দিতে......
আর জুনির বেলায় কি ?
দৃষ্টিশক্তিহীন অসহায় জুনির ভারতমাতার প্রতি দেশপ্রেম দুর্বল হয়নি রেহানের ভালোবাসার কাতরতায়......
এ ধরনের মুভিগুলোই হচ্ছে কালচারাল ক্ল্যামোফ্লেজে ডিপ্লোমেটিক কোল্ড গেম......
অন্যদিকে মেহেরজানের দৃশ্যপটে তাকানো যাক....
সেখানে দেখানো হয়েছে মেহেরজানের খালাতো বোন ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী নীলা পাক সেনাদের হাতে ধর্ষিত হওয়ার আগেও ধর্ষিত হয়েছে !
এই নিয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশী বামদের গায়ে তেলের ছিটা পড়েছে !
মুক্তিযুদ্ধে কৃতকর্মের জন্য পাকিস্তান ক্ষমা চায়নি আজও.....
চাইবেনা এটা নিশ্চিত.....
কিন্তু মেহেরজান মুভিটি দেখার পর পাকিস্তানীদের প্রতিক্রিয়া কি হবে ?
আমার ধারনা দাঁত বের করে হাসবে.....
যেই বীরংগনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষীনি শুরুতে খুবই ইমপ্রেসড হয়েছিলেন রুবাইয়াৎ এর মুভিটি নিয়ে আগ্রহ দেখে.....
সেই ফেরদৌসী প্রিয়ভাষীনিই মুভিটি দেখে বেকুব বনে গেছেন.....
ছবিটির কলাকুশলীদের দিকে তাকান :
জয়া ভাদুড়ী কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই....
শায়না আমিন শুনেছি গায়ক তাহসানের শ্যালিকা তথা মিথিলার ছোট বোন....
আরো আছেন খায়রুল আলম সবুজ , হুমায়ুন ফরিদী , আজাদ আবুল কালাম......
আর ক্যামেরার পেছনের লোকজন ?
সবাই ওপার বাংলার বাঙালী !
সংগে আছে হৃদয়ে বাংলাদেশ ধরে রাখা মাটি ও মানুষের চ্যানেল আই ......
প্রথম আলোর নিয়মিত লেখক ফারুক ওয়াসিফের স্ত্রী ফারজানা ববি চলচ্চিত্রটির সহকারী পরিচালক......
মেহেরজান নিয়ে প্রথম আলোর নালা দিয়ে পানি কতদুর গড়ায় সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম.....
আর প্রথম আলোর সাথে মোশন অটোমেটেড বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় এখন কি বলেন সেটাও অনেক বড় ইলামেন্ট অফ কিওরিওসিটি........
তবে কেন জানি তাদের পক্ষ থেকে মিউট মুড কিংবা পাশকাটানো ব্লারি কথাবার্তাই আশা করছি......
না করেই বা উপায় কি ?
ডঃ কামাল হোসেন বিয়ে করেছেন পাকিস্তানী হামিদা হোসেনকে.....
শমী কায়সার বিয়ে করেছিলেন ক্যালক্যাশিয়ান ১ সন্তানের বাবা বিবাহিত রিংগোকে....
সজীব ওয়াজেদ বিয়ে করেছেন আমেরিকান ক্রিস্টিনাকে.......
শেখ রেহানার ছেলে বিয়ে করেছেন এক ইউরোপ কন্যাকে.....
ডঃ কামাল হোসেনের মেয়ে বিয়ে করেছেন এক স্কটিশকে......
শাহ এম এস কিবরিয়ার মেয়ে বিয়ে করেছেন এক আমেরিকান কে.....
একুশে টিভিতে প্যাচাল পাড়া ব্যারিস্টার সারাহ বিয়ে করেছেন আরেক ইউরোপীয়ানকে........
জাতীর অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর শালা সমন্ধী সব পাকিস্তানী.....
বলতে বলতে শেষ হবেনা.......
বাঙালীপনার ধ্বজ্বাধারীদের আন্তর্জাতিকতা ব্যাপক প্রশংসাযোগ্য !
ছবিটি নিয়ে ব্লগে বেশ কিছু মন্তব্য- প্রতিমন্তব্য লক্ষ্য করেছি......
তার একটা এই রকম আওয়ামী নেতা যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন বা তার পরিবার আওয়ামী লীগকে প্রতিনিধিত্ব করেনা !
ভালো কথা.......
এই একই ঘটনা যদি বিএনপির যোগাযোগ মন্ত্রীর মেয়ে ঘটাতো তখন আমরা বিএনপি পন্থীরা মুক্তিযুদ্ধের ব্লগীয় পেটেন্টধারীদের গালাগালির তোড়ে বাংকারে লুকাতাম আর মনে মনে যোগাযোগ মন্ত্রী আর তার মেয়ের ফোরটিন জেনারেশন উদ্ধার করতাম.......
তাই নয় কি ?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৫:৩১