এখানে প্রাসঙ্গিকভাবে ২ জন ব্লগার এর পোস্টকেও ধর্তব্যে রাখতে হয়েছে।
আশা করি পুরোটা পড়ার প্রয়োজনে সেই ২ টি পোস্টে গিয়ে হারিয়ে যাবেন না, মুল পোস্টে (এই পোস্টে) ফিরে আসবেন , কারন এরপর আরো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ভুল তুলে আনা হয়েছে যা দিনের পর দিন কান কথায় মানুষ বিশ্বাস করেছে পুরোটা যাচাই না করে।আপলোডকৃত ছবিগুলো জুম ইন করার জন্য পোস্টের একেবারে নীচে যান এবং ক্লিক করুন।
১ম প্রচলিত বক্তব্যটি হলোঃ
বীর পুঙ্গব তৎকালীন সেনাপ্রধান শফিউল্লাহর ডেইলী স্টার এ দেয়া সাক্ষাৎকার অনুযায়ী জিয়া শেখ মুজিব হত্যার খবর পেয়ে যখন তার নির্দেশ অনুযায়ী তার সাথে দেখা করতে আসেন জিয়া ক্লীন শেভড ছিলেন
তিনি এই ধরনের মন্তব্য করার কারনটি আমি চিহ্নিত করি গেম উইথ সেন্টিমেন্ট হিসাবে । মুজিব হত্যা বিষয়ে জিয়ার প্রতি আওয়ামী লীগ এবং মুজিব অনুরক্তদের বিদ্বেষের যে উত্তপ্ত ঘি তাতে তেল ঢেলে নিজেকে বিতর্ক থেকে দুরে রাখার জন্যই তিনি এধরনের মন্তব্য করেছেন বলে আমার বিশ্বাস। তাতে জিয়া Vilified হলো , তার নিজেরও ক্লীন ইমেজ তৈরী হলো।
সেই সাক্ষাৎকারের লিংকঃ
ডেইলী স্টার- ৮/১৫ বিষয়ে শফিউল্লাহর সাক্ষাৎকার
নীচের ছবিটি দেখুন - খোন্দকার মোশতাকের শপথ অনু্ষ্ঠানে মুজিব হত্যার শোকে কার কি দশাঃ
এই ছবিতে Bottom - Right বা নীচে ডানে দেখুন ।
সর্বপ্রথমে ডান থেকে সেনাপ্রধান শফিউল্লাহ কালো চশমা পরিহিত যেই চশমা পরার কারনে জিয়া খারাপ হয়ে গেছেন ,
এরপর নৌ বাহিনী প্রধান এম এইচ খান ,
এরপর বিমান বাহিনী প্রধান এ কে খোন্দকার ,
এরপর সেনাবাহিনীর ২ উপ-প্রধান মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান এবং
জিয়াউর রহমান।
ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুনতো এদের কারো চেহারায় কি মুজিব হত্যার শোকাবহতা চোখে পড়ে ?
কারো দু চোয়ালে কি খোঁচা খোঁচা দাড়ি চোখে পড়ে ?
আমিতো বরং শফিউল্লাহ , এ কে খোন্দকার , মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান , এম এইচ খান যারা সবাই বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন এদের চেহারায় একধরনের নির্ভার - নির্লিপ্ততা দেখতে পাই।
ছেলেমানুষী রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা দেখিয়ে মুজিব হত্যার পর কে ঐ দিন দুপুরে কাতলা মাছের দুটো মুড়ো দিয়ে ভাত খেয়েছিলো সেটার প্রতি অনুসন্ধানুৎসাহী হওয়াটা আনপ্রাগম্যাটিক ছাড়া আর কিছুই নয়।
২য় প্রচলিত বক্তব্যটি হলোঃ
জিয়া জানতেন মুজিবকে হত্যা করার পরিকল্পনা চলছে এবং সেখানে তার সম্মতি ছিলো।
আমি দ্বিমত করলাম - জিয়া জানতেন মুজিবকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার পরিকল্পনা চলছে এবং সেখানে তার সম্মতি ছিলো।
জিয়ার ধারনা ছিলোনা সেটা ম্যাসাকারের ভেতর দিয়ে হবে ।
কেন দ্বিমত করলাম সেটার কারনগুলো নীচে দেখুনঃ
ফারুক - রশীদের অ্যান্থনী মাসকারেনহাসের সাথে সাক্ষাৎকারটিকে মিডিয়া ক্রাইমের মাধ্যমে কিভাবে Editing , Trimming , Mis-interpretation by Mis-Traslation করে পাল্টে ফেলা হয়েছে সেটা নীচের লিংকে গেলে পরিষ্কার দেখবেনঃ
শেখ মুজিব হত্যাকান্ড বিষয়ে ওয়ার্ল্ড অন অ্যাকশন অনুষ্ঠানে ফারুক এবং রশীদের সাক্ষাৎকার
জিয়ার সাথে কি কথা হয়েছিলো এ প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেনঃ সরাসরি না বলে জিয়াকে আমি কথাটা একটু ঘুরিয়ে বলি । আমি বললাম দেশ দূর্নীতিতে ভরে গেছে , দেশের জন্য একটি পরিবর্তন দরকার। এটুকু বলতেই জিয়া বলেনঃ হ্যাঁ হ্যাঁ চলো আমরা বাইরে লনে গিয়ে বসে আলাপ করি।
সেখানে আমি তাকে জানাই যে আমরা জুনিয়র অফিসাররা পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করেছি।
সবশুনে তিনি এই উক্তি করেছিলেঃ আমি ১জন সিনিয়র অফিসার । আমি এধরনের ব্যাপারে জড়িত হতে পারিনা। তোমরা জুনিয়র অফিসাররা যদি এটা করতে চাও তবে এগিয়ে যাও।
এই আলোচনা এবং প্রস্তাব পেশ করার পরও তৎকালীন সামরিক বাহিনীর ডেপুটি চীফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে খবর পাঠাননি বা গ্রেফতার করেননি।
এ প্রসংগে ফারুক বলেনঃ না , তিনি এরপর তার এডিসিকে আমাকে সাক্ষাতের অনুমতি আর না দেয়ার জন্য বলেন।
সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নীচের ক্লিপটি দেখুনঃ
অন্যদিকে রশিদ বলেনঃ ১৫ই আগস্ট হত্যাকান্ড ঘটানো হচ্ছে এটা মোশতাককে জানাইনি। আমরা শংকিত ছিলাম তিনি যদি শেখ মুজিবের কাছে এটা ফাঁস করে দিয়ে তার আস্থাভাজন হতে চান।
সত্যতা যাচাইয়ে নিচের ক্লিপটি দেখুনঃ
যেখানে খুনীরা মোশতাককেই জানানোর চেষ্টা করেনি সেখানে জিয়ার প্রশ্ন বাতুলতামাত্র।
শেখ মুজিবকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পরিকল্পনা জিয়া জানতেন , তার মৌন সম্মতিও ছিলো , কিন্তু সেটা ম্যাসাকারের মাধ্যমে হবে শেখ মুজিব পর্যায়ের ব্যক্তিত্বের বুকে গুলি চালিয়ে এটা জিয়ার ধারনাতে ছিলোনা।
শেখ মুজিবকে কেন খুন করলো তার কারন দেখিয়ে রশীদ যা বললোঃ
প্রাসংগিকভাবে যে বিষয়টি জানাচ্ছি সেটি হলো শেখ মুজিবের সাথে তাজউদ্দীন আহমদের বাকশাল নিয়ে কথোপকথন :
জুলাই ২৩ , ২০০৯ এ প্রথম আলো তে জাফর ইকবালের সাধাসিধা কথা সিরিজ কলামে তাজউদ্দিন আহমদের হাতঘড়ি কলাম
নীচে পুরো কলামের দরকারী অংশটুকু তুলে দিলাম:
এ প্রসংগে ১জন সিনিয়র ব্লগার নুরুজ্জামান মানিকের বক্তব্যকে আমলে নিতে হচ্ছেঃ
শেখ মুজিব হত্যা বিষয়ে তার পোস্ট :
ত্রিবেনী এবং পুঁজির নষ্ট সঙ্গমে লুটিয়ে পড়লেন শেখ মুজিব
সেখানে শেখ মুজিব কে হত্যা করা হবে নাকি জোর পূর্বক গান পয়েন্টে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে এ বিষয়ে রিভোল্টার অফিসার দের ভেতরে মতভিন্নতা ছিলো বলেই মনে হয়েছে।
তবে রশিদ , ডালিম , নুর এরা যে শেখ মুজিবকে হত্যার জন্য এক্সট্রীম ডেসপারেসী মাইন্ডসেটে পোক্ত ছিলো সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই।
হত্যা না আটক - এই মতভিন্নতার বিষয়টা আমার কাছে এই ব্লগেও চোখে পড়ে। ব্লগটি অতি বংগবন্ধু অনুরক্ত অমি পিয়ালেরঃ
জিয়া জানতেন, কতখানি জানতেন... - অমি রহমান পিয়াল
এই ব্লগের যেই অংশটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন মনে হয়েছেঃ
তবে জিয়া কেনো মিলিটারি কাউন্সিলের দায়িত্ব নেওয়া থেকে পিছিয়ে গেলেন তার একটা ব্যাখ্যাও রয়েছে লিফশুলজের লেখায়। শুধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত সমর্থন ছিলো জিয়ার, কিন্তু তার পরিবার সদস্যদের অর্থাৎ নারী ও শিশুদের রক্ত নিজের হাতে মাখাতে রাজী ছিলেন না তিনি
আমি মনে করি কেবল নারী এবং শিশু নয় , শেখ মুজিব হত্যার ব্যাপারটাও জিয়ার চিন্তাপটে ছিলোনা ।
অমি পিয়ালের ব্লগে রেফারেন্স হিসাবে দেয়া স্ক্যানড্ পাতাটি ব্যবহার করলামঃ
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অমি রহমান পিয়াল
এই খানেও হত্যা না আটক এই মতদ্বৈততা আমি দেখতে পাই শেখ মুজিব কে গুলি করার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ।
৩য় বিষয়টি হলোঃ
ইনডেমনিটি এবং শেখ মুজিব হত্যাকারীদের বিদেশের মাটিতে নিরাপদ থাকতে দেয়া।
২৬শে সেপ্টেম্বর , ১৯৭৫ এ প্রণীত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ।
মুজিব হত্যাকারীদের কে বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে শেখ হাসিনা যে বক্তব্য অহর্নিশ দিয়ে চলেছেন জিয়াকে দোষারোপ করে সেটির বিপক্ষে আসল সত্যটি জানালামঃ
যেই খালেদ মোশাররফের ক্যু ব্যর্থ হওয়ায় অগুণিত আওয়ামী পন্থীরা আক্ষেপে বেদনার্ত হন ইতিহাসের মোড় ঘুরে না যাওয়ার আফসোসে সেই খালেদ মোশাররফই মুজিব হত্যাকারীদেরকে লিবিয়া পাঠান জেল হত্যাকান্ডও ঘটে যাওয়ার পরও।
খালেদ মোশাররফ এর সাথে কালের কন্ঠ সাংবাদিক আবেদ খানের সাক্ষাৎকারটি দেখুনঃ
বেইলী রোডের লেডিস ক্লাবের ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা আবেদ খান যেভাবে জানালেন বংগবন্ধু ভক্ত খালেদ মোশাররফ কে
আবেদ খানের রাজনৈতিক মতাদর্শের সাথে আশাকরি সকলেই পরিচিত।
আরেক কট্টর আওয়ামী সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু শেখ মুজিব হত্যার রায়ের পরে আমাদের সময় পত্রিকায় জিয়ার প্রতি ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে খালেদ মোশাররফের ক্যু ব্যর্থ হওয়ায় আক্ষেপ করে বলেনঃ
" খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান সফল হলে ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো"
মুজিব হত্যাকারী ফাঁসি এবং ৫ম সংশোধনী বাতিল বিষয়ে খালেদ মোশাররফের ৩রা নভেম্বরের পাল্টা অভ্যুন্থান প্রসংগে আমাদের সময় পত্রিকায় মোজাম্মেল বাবুর প্রতিক্রিয়া
খালেদ মোশাররফ মোশতাককে লাথি দিয়ে উড়িয়ে দিলেও মোশতাকের ইনডেমনিটি কে লাথি মারেননি।
বরং শুধু শেখ মুজিবের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডই নয় , জেল হত্যাকান্ড ঘটে যাওয়ার পরও খালেদ মোশাররফ এদের কে গুলি করে মারেননি।
নীচের লিংকে যানঃ
সি আই এর রেকর্ড থেকে ১৯৭৫ এর সংকটময় আগষ্ট থেকে নভেম্বর
সোর্সঃ Sources: The Library of Congress Country Studies; CIA World Factbook
পুরোটা পড়া লাগবেনা ,এক্সার্পটি এখানে তুলে দিলামঃ
Tensions within the military exploded on August 15, 1975, when thirty middle-ranking army officers, many of whom were repatriates, staged a coup. With the support of troops from the First Bengal Lancers and the Second Field Artillery Regiment, the mutineers assassinated Mujib and members of his family and called on Ziaur Rahman (Zia) to become army chief of staff. Osmany, the former Mukti Bahini chief, lent respectability to the emerging military- political order by agreeing to serve as defense adviser to the new figurehead president, Khondakar Mushtaque Ahmed.
Freedom-fighter elements within the army countered this so- called "majors' plot" by staging a coup of their own on November 3, 1975. Following the murder of prominent Awami League officials detained in Dhaka Central Jail, troops commanded by Brigadier Khaled Musharraf dismissed the government, placed Zia under arrest, created a vaguely defined revolutionary council, and exiled the ringleaders of the original coup to Libya.A total breakdown in discipline within the military occurred shortly after this second coup, as junior army officers and jawans took to the streets to defend themselves against anticipated assaults from rival army factions. Simultaneously, the Jatiyo Samajtantrik Dal called on jawans to kill their commanding officers. On November 7, Zia secured his release from house arrest, reportedly with Jatiyo Samajtantrik Dal backing, and staged a third coup. Musharraff was killed, Zia and other senior officers restored a semblance of army unity, and the jawans returned to barracks.
এ ব্যাপারে উইকিপিডিয়ার ভাষ্য দেখুনঃ
Aftermath of assassination
Khondaker Mustaq Ahmed assumed the presidency and the participating army officers became the de facto leaders of the country. They were later toppled by yet another coup led by General Khaled Mosharraf on November 3, 1975. Mosharraf himself was killed in a counter coup four days later on November 7, which installed General Ziaur Rahman in power. In the meantime Faruque Rahman, Rashid, and the other army officers had been promoted to the rank of lieutenant colonel. They were exiled to Libya and other countries, and were given several diplomatic posts in Bangladeshi missions abroad. Faruque later returned and founded the Bangladesh Freedom Party
যাচাই করার জন্য সোর্সে যানঃ
শেখ মুজিব হত্যা , উইকিপিডিয়া
আশা করি বাংলা ট্রান্সলেশনের প্রয়োজন পড়বেনা।
তাহলে বিষয়টা কেমন দাড়ালোঃ
ইনডেমনিটি জারী করলেন শেখ মুজিবের বিভীষন মোশতাক ,
আওয়ামী বিশ্বস্ত খালেদ মোশাররফ সেটাকে কন্টিনিউ করলেন।
জিয়া সেটার Duration Promote করলেন।
মুজিব এবং ৪ নেতা হত্যাকারীদের কে লিবিয়ায় পাঠালেন আওয়ামী বিশ্বস্ত খালেদ মোশাররফ যদিও ৩রা নভেম্বর তিনি তাদেরকে শ্যুট করতে পারতেন এবং জিয়া সেটাকে কন্টিনিউ করলেন ।
তাহলে কি যত দোষ নন্দঘোষ জিয়াই হয়ে গেলো ?
এখানে আরো ১ টা বিষয় আমাকে অবাক করে । সেটা হলো শেখ মুজিব হত্যাকারী দের বিদেশে প্রেরন এবং কূটনৈতিক চাকরী প্রদানের ব্যাপারে শেখ হাসিনা যে জিয়া কে মুখ্য অপরাধী বানাচ্ছে তার নিয়ন্ত্রনহীন মুখরা স্বভাবে সেটা নিয়ে বিএনপি প্রতিবাদ করেনা কেন ?
প্রাসংগিকভাবে বলতে হয় ফারুক - রশিদ- তোয়াহাব গং রাও যে জিয়ার বিপক্ষেও ক্যু করতে চেয়েছিলো সেটা সম্ভবত অনেকেই জানেন।
এডিশন ১: ১৫ ই এপ্রিল,২০১০:১ জন কমেন্টারের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে এই এডিশনটি আনা হলো । হাসান শহীদ ফেরদৌস বলেছেন : কর্নেল হামিদ এর ভাষ্যমতে খালেদ মোশররফ জানতেন না জেলহত্যাকান্ডের কথা।
শাফায়াত জামিল ও তার বই "ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর" এর পৃষ্ঠা -১৩৬ এ দাবী করেছেন একই বিষয়। যদি জানতেন তাহলে নাকি খুনী মেজরদের লিবিয়া যেতে দিতেন না।
বিষয়টা একেবারেই হযবরল । কারন ৮/১৫ তে মুজিব হত্যা হয়েছে।
তারমানে খালেদ মুজিব হত্যাকারীদের বিদেশে যেতে দেবেন , তবে মুজিব অনুগামী ৪ নেতা হত্যাকারী দের যেতে দেবেন না!!!!!
সেই সময়কার মার্কিন এ্যাম্বেসেডর ডেভিস বোস্টার বলছেন সিআইএ রিপোর্টে ৮/১৫ 'র পর অনেক সেনাঅফিসারের পদন্নোতি হলেও তার হয়নি। সে কারনে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন । মোশতাকের সাথে তার আপোষ হয়েছিলো এইভাবে যে মোশতাক রাষ্ট্রপতি থাকবেন এবং খালেদ হবেন সেনাপ্রধান। শেষ পর্যন্ত খালেদ মোশতাককে কিক আউট করেন।
সিআইএ রিপোর্ট (যেটার লিংক দেয়া হয়েছে উপরে)অনুযায়ী জেলহত্যা ঘটার প্রেক্ষিতেই খালেদ ক্যু করেন।
প্রসংগত জানিয়ে রাখিঃ
জেলহ্ত্যা ঘটে ৩/১১ বেশ সকালে।
খালেদ মোশাররফ ক্যু করেন ৩/১১ বেশ সকালে।
খুনী মেজররা দেশত্যাগ করে ৩/১১ শেষবিকেলে।
মার্কিন রিপোর্ট অনুযায়ী। সোর্স লিংক দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত।
কারো দ্বিমত থাকলে জানাতে পারেন।
৪র্থ বিষয়টা হলোঃ
মোশতাক - সায়েম-জিয়ার ১৯৭৯ র জাতীয় নির্বাচন পূর্ববর্তী শাসন কে আওয়ামী ক্রেজী বিচারপতি খায়রুল হক অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন।
কেন ?
উত্তর- শেখ মুজিব হত্যাপরবর্তী দেশের শাসন ক্ষমতা অসাংবিধানিকভাবে
হাত বদল হয়েছে। Unconstitutional power transfer.
এখানে যে বিষয়টা Ironic সেটা হলোঃ
শেখ মুজিব তথা প্রেসিডেন্ট পদ শুন্য হলে সেই ক্ষমতা সাংবিধানিকভাবে হস্তান্তর হবে জাতীয় সংসদের স্পীকার এর কাছে সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনপূর্বপর্যন্ত - প্রেসিডেনশিয়াল শাসন ব্যবস্থায়।
কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান বাকশালের সংবিধানে তথা ৪র্থ সংশোধনী অনুযায়ী নির্বাচন কে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য ক্লোসড করে নিজেই সকল এক্সিকিউটিভ পাওয়ার হাতে নিয়ে ফেলেন।
যাই হোক আসল তথ্যটি হলোঃ
সেই সময় যেই ব্যক্তিটি স্পীকার ছিলেন তিনি হলেনঃ
মালেক উকিল যিনি বাকশালের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (১৩ সদস্য বিশিষ্ট) সদস্য ছিলেন এবং শেখ মুজিব হত্যার পর যিনি উক্তি করেছিলেনঃ
ফেরাউনের পতন হয়েছে
যার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হলে সেটা সাংবিধানিক হতো তার অবস্থানটা দেখুন ।
সেলুকাস !!!!!!
আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে বিচারপতি খায়রুল হকের কাছে- যদি খালেদ মোশাররফ সফল হতেন ৩/১১ তে তার শাসনকে খায়রুল হক সাহেব কি বলতেন ?
ডকট্রিন অব নেসেসিটি না অসাংবিধানিক শাসন ?
কারন শেখ হাসিনা যিনি হাইকোর্টের জিয়ার শাসন বিষয়ক রায় নিয়ে শুভংকরের ফাঁকি দিয়েছেন [কারন হাইকোর্ট অনির্বাচিত CMLA হিসাবে যারা দেশের শাসনভার নিয়েছেন সেটাকে অবৈধ বলেছেন , ১৯৭৯ এর নির্বাচিত সরকারকে নিয়ে হাইকোর্ট কিছু বলেনি বা বলার এখতিয়ারও রাখেনা] তিনি এরশাদের গনধীকৃত সামরিক শাসন সম্পর্কে বলেছিলেনঃ
I am not unhappy
আমি অখুশী নই।
IMF তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়েই বা খায়রুল হকের বক্তব্য কি হবে সেটাও জানতে ইচ্ছা করে।
এডিশন২: ১৬ই এপ্রিল, ২০১০:
বিচারপতি খায়রুল হক তার রায়ে ১টি অনেক বড় ফাঁকি দিয়েছেন খালেদ মোশাররফের ন্যুনতম সমালোচনা না করে। অরাজনৈতিক ব্যক্তি হয়েও জাতীয় রাজনীতির সংকট সময়ে ত্ৎকালীন প্রধান বিচারপতি সায়েম কে স্পট লাইটে নিয়ে এসেছিলেন খালেদ মোশাররফ যখন মোশতাকের সাথে তার মনমতো আপোষ হয়নি । সায়েম কে ৫ম সংশোধনী বিষয়ক রায়ে অভিযুক্ত করলেও খালেদ মোশাররফ কে তা করা হয়নি।
যুক্তিটা যদি এমন হয় সিএমএলএ হওয়ার দরুন সায়েমকে রায়ে দোষী করা হয়েছে , খালেদ তাকে প্রেসিডেন্ট বানিয়ে ছিলেন - সেটাও কি সাংবিধানিক ছিলো ? পরিষ্কারভাবেই সংবিধান লংঘন করা হয়েছিলো। খালেদের মুজিবভক্তি প্রদর্শন মুজিবের খুনীদের লিবিয়া পাঠিয়ে - আরেক গরমিল ঘটনা।
নীচের সোর্সে যানঃ
লাইব্রেরী অব কংগ্রেস, কান্ট্রি স্টাডিজ, বাংলাদেশ , ১৯৭৫ পরবর্তী পরিস্থিতি , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
Excerpt টি তুলে দিলামঃ
Despite the economic and political instability during the last years of the Mujib regime, the memory of the Bangabandhu evoked strong emotions among his loyalists. Many of these, especially former freedom fighters now in the army, were deeply resentful of the majors. One of these Mujib loyalists, Brigadier Khaled Musharraf, launched a successful coup on November 3, 1975. Chief Justice Abu Sadat Mohammad Sayem, who had served Mujib in the Supreme Court, emerged as president. Musharraf had himself promoted to major general, thereby replacing Chief of Staff Zia.
In a public display orchestrated to show his loyalty to the slain Mujib, Musharraf led a procession to Mujib's former residence. The reaction to Musharraf's obvious dedication to Mujibist ideology and the fear that he would renew the former leader's close ties with India precipitated the collapse of the new regime. On November 7, agitators of the Jatiyo Samajtantrik Dal, a leftist but decidedly anti-Soviet and anti-Indian movement, managed to incite troops at the Dhaka cantonment against Musharraf, who was killed in a firefight. President Sayem became chief martial law administrator, and the military service chiefs, most significantly the army's Zia, became deputy chief martial law administrators. Zia also took on the portfolios of finance, home affairs, industry, and information, as well as becoming the army chief of staff.
৫ম বিষয়টা হলোঃ
১টি শব্দের সংজ্ঞা জানতে চাই- বেনিফিসিয়ারী ?
বেনিফিসিয়ারী কাকে বলে ?
মুজিব হত্যার বেনিফিসিয়ারী কে কে ?
মোশতাক কেবিনেটের মহামান্যরা কি বেনিফিসিয়ারী না?
ওসমানী কি বেনিফিসিয়ারী না ?
খালেদ মোশাররফ যদি সফল হতেন তাহলে তিনি কি বেনিফিসিয়ারী হতেন নাকি হতেন না ?
জিয়া বাংলাদেশের ডেমোক্রেটিক ফ্রেমের পঙ্গুত্ব ঘোচাতে আওয়ামী লীগের ১৯-২০ বিরোধী পলিটিক্যাল ফ্রন্ট বিএনপি তৈরী করলেন - সেই জন্যই কি তাকে বেনিফিসিয়ারী বলা হয় ?
আমার তো মনে হয় তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত সব গনতন্ত্রমনা মানুষের আওয়ামী লীগের ফাকা মাঠের গোল দেয়ার রাস্তা বন্ধ করে গনতন্ত্রের সংকট থেকে দেশকে বাচানোর জন্য।
এডিশন ৩: এপ্রিল ২৯ , ২০১০:
এই " বেনিফিসিয়ারী " শব্দটার ব্যাপারে একটি অমীমাংসীত প্রশ্ন রেখে যাই সবশেষে । প্রশ্নের প্রেক্ষিত আগের মতই পুরোনো -" মুজিব হত্যার আসল সুযোগ সন্ধানী জিয়া যেহেতু শেষ পর্যন্ত জিয়াই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। "
সেখানেই প্রশ্নটা রাখছি : ধরে নেয়া যাক খালেদ মোশাররফ ক্যু করলেন না। তাহলে কি হতো ?
মোশতাকের প্রেসিডেন্সীতে মুজিবের কেবিনেটই দেশ চালাতো ,
তাই নয় কি ?
জিয়া থাকতো কেবলই সেনাপ্রধানের পদবীতে।
তাহলে জিয়াকে ক্ষমতালাভের সুযোগ সন্ধানী বলার সুযোগটা কোথায় ? জিয়া কি জানতেন খালেদের ক্যুর পর তাহের তাকে রেসকিউ করতে সফল হবেন ?
সফল তো নাও হতে পারতেন!
৫ ই নভেম্বর যে জিয়া খালেদের বন্দুকের মুখে সেনাপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন তাহলে সেটাকে কিভাবে মুল্যায়ন করা হবে ?
যদি খালেদ ক্যু না করতো জিয়া মোশতাকের অধীন সরকারের সেনাপ্রধান হিসেবেই থাকতো।
যদি তাহের সফল না হতো জিয়া কে ৭৬ এ ই অসামরিক জীবনে ফিরে যেতে হতো !
অনেক কিছুই তো জিয়ার বিপক্ষে ছিলো। ঘটনাচক্রে ক্ষমতা জিয়ার কাছে এসে যায় । শুধু রাজনৈতিক বিদ্বেষ থেকেই কি তাহলে জিয়া সুযোগ সন্ধানী বলা হয় যেখানে সুযোগ তার পায়ে এসে ধরা দিয়েছে বারবার , তার নিজের পক্ষ থেকে নিষ্ক্রিয় থাকার পরও !?