somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ স্বপ্ন

৩১ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অর্ণব ঠিকানাটা পড়ে দেখলো, আবার একই ঠিকানা, রোড নাম্বার-১৩৫, হাউজ নাম্বার ৪......
গত এক সপ্তাহে ৪ বার তাকে এই ঠিকানায় যেতে হয়েছে।
অর্ণব ঢাকায় বাইক মেসেঞ্জার বা ডেলিভারি বয় হিসেবে পার্টটাইম জব করে। তার অফিসটা অনলাইনভিত্তিক, অনলাইনেই জিনিসপত্র বিক্রি করে থাকে।

ঠিকানাটি গুলশান এভিনিউ পার হয়ে দুইশ গজ সামনে গেলেই সেই বাড়িটা। দুইতলা বাড়ি আর বাড়িটার সামনে বিশাল বাগান। অর্ণব ভাবে নিশ্চয় অনেক বড়লোকেরই বাড়ি। আর অর্ণব থাকে একটা এপার্টমেন্ট এর ফ্ল্যাটে বন্ধুদের সাথে। সে এখানে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। পড়ালেখার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করে সে নিজের পকেটখরচ নিজেই আয় করে। আগে টিউশনি করতো কিন্তু সেটা তার খুব বেশি ভাল লাগেনা। বরং তার চেয়ে বাইক মেসেঞ্জার এর কাজটাই ভাল লাগে তার। সে ছোটবেলা থেকেই সাইক্লিং আর ঘুরতে ভালবাসে আর এতে সাইকেল নিয়ে ঘুরাঘুরিও হয়ে যায় আবার কিছু টাকাও আয় হয়।

রাস্তায় বের হওয়ার আগে আকাশের অবস্থা দেখে নিল। আকাশের অবস্থা মোটেও ভাল না। যেকোনো সময় বড়সড় ভাবেই বৃষ্টি পড়তে পারে। তারপরও সে বের হলো। বের হতেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু। কি আর করার। হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই সে সাইকেল চালাতে লাগলো। রাস্তা ফাঁকা থাকায় আধা ঘন্টাতেই পৌঁছে গেল। এখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে তবে বৃষ্টি একটু বেড়েছে।

একটা মেয়েই প্রতিবার জিনিসগুলো রিসিভ করে। ঠিকানায় লেখা মেয়েটির নাম নীলা। একেকদিন একেক রকম জিনিস কিনে সে। আজ সে কিনেছে একটা একটা ঘড়ি। ঘড়িটা বুঝিয়ে দিয়ে পেমেন্টটা নিয়ে অর্ণব যেই না বের হয়ে যাবে সে সময়ে হঠাৎ জোরেশোরেই বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। অর্ণব বুঝতে পারলো না তার কি করা উচিত।
এসময় পেছন থেকে মেয়েটি হঠাৎ বললো "যদি কিছু মনে না করেন তাহলে বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত বসুন। বৃষ্টিটা থামলে তখন বের হতে পারবেন।"
অর্ণবের এখন তেমন তাড়া নেই। আর এই অবেলায় ভিজতেও খুব একটা ইচ্ছে করছে না। তাই সে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার সিদ্ধান্তই নিলো।
অর্ণব ভেতরে গিয়ে বসলো। অর্ণবকে বসিয়ে নীলা ঘরের ভেতর চলে গেল।
একটু পর দুই কাপ চা আর বিস্কুট নিয়ে ফিরে এল নীলা। অর্ণব ও এই কথাই ভাবছিল, এমন পরিবেশে চা পেলে মন্দ হয়না।
নীলা যেন অর্ণবের মনের কথা জানতে পেরেই চা নিয়ে এসেছে।

অর্ণব চায়ে চুমুক দিতে যাবে এমন সময় হঠাৎ করে সবকিছু কেমন যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীটা যেন কাপছে। আর অনেক দূর থেকে তাকে অর্ণব, অর্ণব বলে কে যেন ডাকছে। সে চোখ মেললো, তার সামনে বিছানায় বসে আছে তার বন্ধু তন্ময়। অর্ণবকে তন্ময়ই এতক্ষণ ডাকছিল। সে বুঝতে পারলো এতক্ষণ সে স্বপ্নই দেখছিল। পাশের টেবিল থেকে মোবাইলটা নিয়ে দেখলো সকাল সাড়ে আটটা। উহ, তাকে সকালে অফিসে যেতে হবে। দেরি করে ফেলেছে। তাড়াতাড়ি উঠে হাতমুখ ধুয়ে নাস্তা করে অফিসে গেল। গিয়েই শুনলো আজ বেশ কয়েকটা ডেলিভারি আছে। সে ঠিকানাগুলো নিল। ঠিকানাগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ একটা ঠিকানায় চোখ আটকে গেল, ঠিকানাটায় লেখা, "নীলা, রোড নাম্বার ১৩৫, হাউজ নাম্বার ৪....."
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৪৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×