নিশো বসে আছে চন্দ্রিমা উদ্যানের লেকের পাশের একটি বেঞ্চে......... প্রায় সময়ই কাজ না থাকলেই সে এখানে এসে বসে থাকে। মন খারাপ থাকলেও এখানে এসে বসলে কিভাবে জানি মন ভাল হয়ে যায়। সে চুপচাপ বসে বসে সবুজ প্রকৃতি উপভোগ করে। ভাবে, ঢাকা শহরে এমন আরো কিছু উদ্যান থাকলে ভাল হতো। তাহলে ব্যস্ত নগরীর ব্যস্ত মানুষেরা এসে রিফ্রেশ হতে পারতো......
তবে কোথায়ই বা এমন জায়গা আছে আরো। আজকের ঢাকায় তেমন খোলামেলা, সবুজ জায়গা খুব কম।
তবে আজ সে বসে আছে অন্য কারনে। কারো অপেক্ষায়...... মেয়েটির নাম অনন্যা। তাদের পরিচয় হয়েছিল ৩ বছর আগে ফেসবুকে। তবে কখনো দেখা হয়নি। আজ তাদের পরিচয়ের ৩ বছরপুর্তি। তাই তারা আজকের দিনটাতে বেলা ৩ টায়দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নিশোর পকেটে একটা ছোট্ট বাক্স। সে একটা রিং কিনে এনেছে। সে আর দেরি করতে চায়না। সে আজও অনন্যাকে তার ভালবাসার কথা জানাতে পারেনি। তার ভয় হতো, অনন্যাকে হারানোর ভয়, বন্ধুত্ব নষ্ট হবার ভয়। ওদিকে অনন্যাও নিশোকে আস্তে আস্তে ভালবেসে ফেলেছে। সে অপেক্ষা করছিল কথাটা নিশোর কাছ থেকে শুনার।
এদিকে বেলা গড়িয়ে বিকেল হলো। নিশো সেই আড়াই টা থেকে বসে অপেক্ষা করছে। সাধারণত সে কোথাও গেলে দেরি করে বলেই সবাই জানায়, তবে আজকের দিনটা স্পেশাল বলে কথা.........
নিশো সেই আগের জায়গাতেই বসে আছে। সে ভাবে, অনন্যা হয়তো পথেই জ্যামে আটকে আছে। তাছাড়া ওর জন্য কিছু ঘন্টা কেন সে সারাটা জীবন অপেক্ষা করতে রাজী। ঢাকা শহরই তো। জ্যাম থাকতেই পারে। কিন্তু সে জানেনা অনন্যা নামের মেয়েটি আজ নিশোর সাথে দেখা করতে আসার পথেই এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে একটু আগেই চলে গেছে না ফেরার দেশে।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়েছে অনেক আগে। উদ্যানটাও প্রায় খালি হতে চললো। নিশো এখনো বসে আছে সেই বেঞ্চেই। ফেসবুকে লগিন করে ইনবক্স চেক করলো, কিন্তু না, অনন্যা অনলাইনে আসেনি। , ঘড়িতে ৯ টা বেজেছে দেখলো নিশো। তবুও সে বেঞ্চটিতে বসেই অপেক্ষা করতে লাগলো...... যে অপেক্ষার কোনো শেষ নেই.......
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:২৪