পুরো হ্যালিপ্যাডে আমি একা। একেবারেই একা। সাজেকের তারা ভরা আকাশ আর মেঘে মেঘে ঢেকে যাওয়া পাহাড় দেখে কিছুতেই ঘুমবোনা বলে ঠিক করলাম। কয়েকজনকে এভাবে সেভাবে বলে কয়ে মানসিকভাবে দুর্বল করলাম। নির্জন রাতে পাহাড়ের চুড়ায় শুয়ে বসে, প্রকৃতি উপভোগের লোভ দেখিয়ে রাজিও করালাম। কিন্তু শেষমেশ কেউই এলোনা।
কিন্তু আমি রাত জাগা সাজেকের মায়া ত্যাগ করতে পারিনি। শিশির ভেজা সবুজ ঘাসে পা ভিজিয়ে শিহরিত, জোনাকির আলো দেখে মোহিত আর কুয়াশার আবরণে আবিলুপ্ত প্রায়। সপে দিলাম দিজেকে সাজকের শীতল বুকে সুখের উষ্ণতা পেতে। শুয়ে শুয়ে দেখছিলাম তাঁরাদের ছোটাছুটি, মেঘেদের সাগর হওয়া, চাঁদের নিয়ন আলো। শুনছিলাম রাত জাগা পাখিদের গান। আর ভাবছিলাম, তোমার কথা, যদি এমন হত.........
আমার কোলে মাথা রেখে তুমি চাঁদ দেখছো। আকাশের তারা গুনছো। দূরের মেঘে মেঘে ভেসে বেড়াচ্ছ। ঝকঝকে আকাশে পাখা মেলছো। জোনাকির আলো দেখে হাসছ। শীতের কুয়াশাকে বাঁধছো আলিঙ্গনে। ঘাসকে করেছো আদ্র বাসর! আর রাতকে করেছো আলোকিত, ঝলমলে, কলকলে। আর আমি.........?
আমি তোমার কপালে হাত ছুঁইয়ে অনুভব করছি আমার তোমাকে। তোমার রেশমি কোমল চুলে আমার আঙুল দিয়ে বিলি দিয়ে হারিয়ে ফেলছি তোমার আঁধারের নিমগ্নতায়। তোমার ডাগর চোখের পাপড়ির স্পর্শে আমি হচ্ছি আন্দোলিত। তোমার দু-চোখের কোন বেঁয়ে গড়িয়ে পড়া সুখের অশ্রু, মুছে নিলাম আমার স্নেহমাখা পরশে। তোমার কপোলে আমার উষ্ণ ছোঁয়া, যে ছোঁয়ায় ব্যাকুল তুমি। তোমার অধীর অধর দুটি অপেক্ষায় আর আকুলতায় আমার অধর ছোঁয়ার। আর বলছ এই প্রকৃতিকে......
দেখ, দেখছো তোমারা? আমার মত সুখ আর আবিলুপতায় কে আছে এই পৃথিবীতে? কে কবে পেয়েছে এমন অনিঃশেষত আর অপার্থিব আনন্দের, সুখে আর আবেশে ভেসে যাওয়া রাত? দোহাই তোমাদের নজর দিওনা আমার এই সুখে ভেসে যাওয়াতে।
না এখানে কোন কামনা নেই, ছিলনা। নেই কোন উষ্ণ বাসনা।
এ আমার কল্পনা। এ এক অপার্থিব আবেগ, সত্যিকারের স্নেহ, নির্মল ভালোবাসা আর একাকিত্তের আল্পনা।
তোমায় নিয়ে ভাবনা।
এ তুমি জানবেনা, সে তুমি বুঝবেনা। এ কভু সত্য নয়, হবেনা, হবার নয়। কখনো, কোন কালেই!
কেন? হবেনা কেন? হতে পারেনা কেন?
কেন আবার......
তুমিও জানো, আমিও জানি।
কি?
শেকলে বাঁধা পাগলামি।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০২