somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে চিঠি লেখা হয়নি....

১২ ই মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার সলিট্যারি রীপার

তুমি আমাকে চোরকাটার গান শুনিয়েছিলে, সেই ছোটবেলায়, এখনো এক বিন্দু ভুলিনি, বিশ্বাস করেই চোরকাটা মুখে পুরে ছিলাম, টান দিয়েই দিলে দৌঁড়, দুই তিন দিন গলা ব্যাথায় ভাত পানি গিলতে কষ্ট হয়েছিল।
স্কুল থেকে ফেরার বিল পথের নাম 'সেবা খোলা বিল'। ' তোমার মনে আছে তো ! লম্বা লম্বা বালাম ধানের ফাঁকে তোমার সাদা পাজামা, হালকা নীল এপ্রোন,বুকের দুধার দিয়ে ওরপাড় করে গোঁজা ওরনা, চোখে পড়া নিত্য আলোর নেগেটিভে তুমি বনর্নাতীত। মনে আছে তোমার, আমি আগে থেকেই ওঁতপেতে থাকতাম, আমাকে দেখেই দিতে এক দৌঁড়। ঝাপটে ধরে তোমার শরীরের তামাটে ঘ্রান নিতে ইচ্ছে হত।

জানো, সে সব দিন গুলো আঁটসাঁট মালার অংগহানীতে না গিয়ে কিউ করে মাথার চারপাশে ঘুরে অবিরাম।আজ নষ্টালজিয়াটা বোধ হয় আর লুকাতে পারলাম না। কিছু মনে কর না লক্ষীটি!
বেত গুলো খেতে চেয়েছিলে, মল্লিকদের বাড়ী থেকে চুরি করে চুপি চুপি দিতে গিয়ে খেলাম ধরা, তোমার আমার নিক নেইম হল'বেতগুলো'-দুজনেই নিরূপায়-মুচকি মুচকি হাসতে।

এ আগানো জীবনের না বলা, না পারা'দের ভিড়ে তোমাকে মনের আপন একটা কথা বলতে না পারা টা, জানো, নিশান ওড়ায়, সে ইতিহাসের বীরদের চিনে না, কিন্তু নিজেই চিন্তক, না দের অস্থিত্ব জানান দেওয়া খনি খোদক।

তুমি আমার একবছরের বড় ছিলে কিন্তু, হা হা হা । ক্লাস থ্রিতে উঠলাম, তোমার বাবা,তোমাকে আমাদের ক্লাসে ঢুকিয়ে দিল, ফ্রেশ বকা খাওয়া ফোলানো মুখ, রোদে ঘেমে হাতের মাংসল বাহু মরিচ বর্ন।টীটকারি ছলে হেসেছিলাম,সফি স্যারের নাতিদীর্ঘ বেতে বাড়িতে হুঁশ হল। তোমার কি মনে পড়ে, প্রাইমারীতে দুপুর ছুটিতে স্লুলের পাশের কালীবাড়ীতে জমতো লুকোচুরি খেলা। একান্ত ইচ্ছায় নিয়ে নিতাম তোমার গায়ের গন্ধ।

সবসময় আমি, তোমার হাসিমাখা মুখ দেখতে চাইতাম, তবে হাসতে খুব কম, কী কষ্ট ছিল জানতে পারি নি, সেই শৈশব-কৈঢর পাড় হওয়া অবধিসে অভ্যাস টা বজায় ছিল। ঈষৎ কালো মুখ টা নিয়ে তোমার যত আহংকার আর আমার রাম ধনু নিশানা, বর্ষার জলপুকুরে আমার সুখ সাঁতার।

তোমাদের ছায়াঘন উঠানের জবা ঝাড়টা আমার খুব প্রিয়, পুকুরের দূর পাড় থেকে চেয়ে থাকতাম, সন্ধ্যায় ঘাঁটার নাগেশ্বর তলায় আমার ছায়া তোমাদের গেছোভুতদের ভয় দেখাতো ! কিন্তু তোমার ছায়া দেখতে পেতাম খুবই কম।

দূর্গাপূজায় তোমাকে প্রাণভরে দেখতাম, অষ্টমীতে লাল পেড়ে শাড়ীতে তোমাকে 'ডালিম দানা' মনে হত।একটু হাসি দেখবো বলে , ধুতি গুঁজে দাড়িয়ে যেতাম নবমীর বলীতে। বার্ষিক ক্রীড়া-প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কবিতা আবৃত্তিতে
" Oh marry, call the cattle home,
Call the cattle home, across the Sand's of Dee. পড়েছি জোর গলায়,ফার্স্টা প্রাইজ পেয়েছি, তবে তোমার তালি পাইনি।

হালদা পাড়ের বাজার, যেতে হত ঘুর পথে, জানো, রাস্তা ধরে না গিয়ে তোমাদের পচা ডোবা লাফ দিয়ে পেড়িয়ে যেতাম, কচুরি পানার পার্পেল রঙের ফুল গুলো তুল লুকিয়ে রাখতাম তোমার জন্য পাশের ঢেঁকিঝাড়ে, ফেরা পথে দেখি আমার সেই ফুল শুকিয়ে শেষ !
ব্রাহ্মমূহুর্তে আজানের পর পর তাল কুড়াতে তোমাদের তাল পুকুরে যেতে সাহস হতো না, দূরের সরকার বাড়ী, দত্তে'র বাড়ী, মজুমদার বাড়ী'র গাছ গুলো চেক করে, সূর্যের আংশিক আভা নিয়ে দাড়ি্য়ে থাকতাম তোমার পুকুরঘাটের ঝোপের আড়ালে, তুমি যে কী! তোমাকে কখনো ই অত সকালে দেখিনি, শুনেছি তুমি সকালে উঠেই পড়তে বসতে...।তবে বিকালে পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে দেখেছি অনেক বার।তোমাদের লাল টগবগে বাছুরটাকে আদর করতাম মন ভরে, জানো ওর কালো বড় বড় চোখ গুলো আমাকে শাসাত।

আজ বলছি, তুমি সাধারনের অজানায়, আমার খুব জানা, আমার চেনা একজন মানুষ।রাজ্যের সব জলে আমার পিপাসা মেঠে না, শুধু তোমাকে একবার দেখেই আমি ক্ষান্ত, আমি নির্লিপ্ত।

স্যরি , তা নামতো বলা হলো না....থাক আরেক দিন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১২ রাত ৮:৫৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×