গত রাতে আমার পিতার আত্মা আমাকে জাগায়ে বলে,
"অ পুত........ওঠ.......ওঠ", আজ আমি মুক্ত।
আমাকে মুক্তি দিয়েছে এ বাংলা...।
হঠাৎ যেভাবে ঘুম ভাঙ্গে , ভাঙ্গলো একই নিয়মে
ঘাম জমে এ শীতে ও আমার মাথার সামনের চুল ভেজা..।
মুখ মুছে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম,
গা-আফসা অন্ধকারে নিজেকে এতো পরিষ্কার কখনো দেখি নি আগে !
জানলা খুললাম...এক পশলা বাতাস পুরো স্বস্থি দিয়ে গেল মনে..
ডেকে নিয়ে গেল বাইরে রাজপথে......।
এ সেই রাজপথ !
পদে পদে দাবী জানানোর রাজপথ
হাত-পা- মাথা ঠুকার রাজপথ...
চিৎকার করে বুক ফাটানোর রাজপথ....আজ শান্ত !
সান্ত্বনা দিতে উম্মুখ হয়ে বসে আছে মাতৃ-আঁচল ছড়ায়ে.....।
হাতের মেটা কারপেল গুলো আজ যথেস্ট পরিশীলিত
'গরম রক্তে হাত ডুবিয়ে নেওয়া এ হাত
শরমে কতো পেন্টের পকেট ছিড়েছে,কতো দেয়াল ভেঙ্গেছে
ভেঙ্গেছে কত ঘুনে খাওয়া চায়ের টেবিল,
লন্ডভন্ড করেছে কতো নূতন কবিতার খাতা'।
আজ সে হাতে কলম, উঠে আসে নূতন তাজা কবিতা।
আজ পদ্মা-মেঘনা-যমুনার জল,
সুচী শুদ্ধ যুবতী মা আমার, নূপুর পায়ে নাচছে..
আর বলছে...আমার ঋণ শুধিয়েছে এ বাংলা
আমার ঋণ শুধিয়েছে এ বাংলা ।
হে সন্তান মোর ; হুঁসিয়ার থাকো ।
" আর কোন শ্বাপদ যেন তার খুনে রাঙানো হাত আমার বুকে ধুয়ে,
আমাকে চ্যালেন্জ জানাতে না পারে.....।"
সে দিনের সে 'রক্তেভেজা জায়নামাজ ভোর',
ভাগীরথের সাধনাচ্যূত সে ভোর
অকৃতজ্ঞ,বিশ্বাসঘাতকতায় .....'ট্রয়ের ঘোড়া' চেপে বসেছিল !
আজ তাকে পরশপাথর ছুঁয়েছে।
আজ আমার ভোর, রক্তজবার ভোর।
আমলকি পাতা'র ফাঁকে সদর্প সূর্যালোকের ভোর..
মহাধমনীতে উছলে পড়া নিষ্কলুস রক্তানন্দের ভোর।
পিতা,সেদিনের তোমার হাতের
ছিন্ন তর্জনী বার বার বলেছিল ,' আমার বাঙালী কাপুরুষ নয়'
আমার বাঙালী কাপুরুষ নয়, আমার বাঙালী বীর্যবান,তাঁরা সাহসী।
হিংস্র জানোয়ারের টুটি চেপে ধরা, সবল হাতে পাল তোলা,
রুদ্র-পাগল জওয়ান,দীপ্ত নাঙ্গলের ফলা.........।
হ্যাঁ সত্যিই তাই.....
ইতিহাসই তার প্রমান রাখে
করে নেয় আগামী'র বাজেট।
আজ বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ
বিশ্বাসে, নিশ্বাস নেয়। মন খুলে বলছে,"বিচার আছে এ বাংলায়"।
বিশ্ব আজ অবাক তাকিয়ে,স্মৃতিকে রি-ফ্রেশ করে নেয়'।
মায়ের শাড়ী'র গোছা ঠিক করার মতো...সময় ও নিজেকে গুছিয়ে
নেয় শুদ্ধ থাকার শপথে।
"সেদিনের সে পত্রিকার সম্পাদকেরা সিঁদুর খুঁজছিলো পত্রিকা রাঙাতে !"
আজ তাঁরা নিজের মন কে রাঙিয়েছে,সত্যের নিটোল আভায়।
আমি ছিলাম এক এতিম লক্ষিছাড়া জটাধারী
আজ হলাম ব্যাতিচার সন্ন্যাসি।
মাথা মুন্ডনে জানিয়ে দিলাম, বিহঙ্গ-ভাবনায়
"আমার পিতার অতৃপ্ত আত্মার অস্থি-ছাই
ছড়িয়ে দিলাম এ বাংলায়...........।"
বি: দ্র : পূর্ব প্রকাশিত, জাতির পিতার জন্মদিনে প্রতি সশ্রদ্ধ শ্রদ্ধা....। কবিতাটা লেখা হয়েছিল উনার খুনি দের বিচার কার্যকরের দিনে।