বাদশা জাহাঙ্গীর, শাসক সে দিল্লির।
বিবি নূরজাহান ছিলেন তাহার প্রানপ্রিয় বধু।
বান্ধবী লয়ে আপন মনে খেলছিল তীর-ধনু।
আচমকা তীর বিধিল গিয়ে নিরীহ চাষার তনু।
চাষা ক্ষানিক্ষন কাতরায়
বিধবা করিয়া আপন বধুরে চিরতরে চলে যায়।
এই সংবাদ আসিল যবে চাষার বধুর কানে
কাঁদিতে লাগিল চাষার বধু স্বামী হারানোর টানে।
স্বামীকে হারিয়ে চাষার বধু একেলা বসিয়া ভাবে।
বিচার চাইব বাদশার কাছে তাতে যা হবার হবে।
শোককে মহা শক্তি বানিয়া হাটিল প্রাসাদ যেথা।
পৌছি প্রাসাদে ডাকিতে লাগিল বাদশা আছেন কোথা।
ডাক শুনিয়া চাষা পত্নীর বাদশা কহেন আসিয়া।
কি নিমিত্তে ডাকিছ মোরে বল শুনি তাহা খুলিয়া।
দৃঢ় চিত্তে চাষার বধু কহে বাদশার তরে।
আপনার রানী কি অপরাধে মোর স্বামীকে হত্যা করে।
দেখুন! দেখুন জাহাপনা!
তীরের গায়ে খোদিত রয়েছে "নূরজাহান" নামখানা।
দেখে সে খোদিত তীর বাদশা হয় অস্থির।
এ বিচারে যে প্রাণ যাবে তার প্রিয়তমা স্ত্রীর।
নিরব থাকিয়া কিছুটা সময় বাদশা এবার বলে।
সাতদিন পর বিচার করিব চলে এস দরবারে।
তারপর থেকে হায়-
এমন বিচার ক্যামনে করিবে তাই ভাবে দিবারাতে।
হত্যার আদেশ কি করে দেবে এত ভালোবাসে যারে।
সাতদিন পর আজ বসিয়াছে এজলাস-
বাদী আজিকে চাষা পত্নী বিবাদী রাজ্য রানী।
রাজা আজিকে বিচারপতি দেবে বিচারের বাণী।
বাদশা এবার কহে তীর মার মোর বুকে।
রানীকে ভাসাও আজিকে তুমি ভাসিতেছ যেই দুখে।
আসামি যেভাবে তীর মেরে তোমার স্বামীকে করেছে বধ।
তাহার স্বামীকে তীর মেরে তুমি নেও সে প্রতিশোধ।
চাষার বধুর হৃদে আজিকে বাজিতেছে সুর করুন।
স্বামী হারা শোক বুকে, মুখে বলে বাদশা বাঁচিয়া থাকুন।
স্বামী হারায়ে হৃদয় আমার হয়েছে যদিও শূন্য।
আপনার মত বিচারক পেয়ে রাজ্য আজিকে পূর্ন্য।
ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:০৯