আমি প্রত্যুষে পাখির কন্ঠে শুনতে পাই-
কবিদের জন্য কবিতার আত্মচিৎকার।
যদি পার, সকল কবিতা ভস্ম করে দেও।
পারবে না!
কবিতা বিনাশ করলে পৃথিবীর সকল ভাষা কবিতা হয়ে যাবে।
পান্ডুলিপির পাতায় জ্বলন্ত দিয়াশলাই ছুড়ে দিলে- সমগ্র ভূবন জ্বলে যাবে।
অরণ্যে কোন পাখি গাইবে না।
ক্লান্ত ঢেউয়েরা আর সৈকতের বুকে আছড়ে পড়বে না।
আসমান শূন্য হয়ে যাবে কোন মেঘ উড়বে না।
আর কখনো কোন কালে বসন্ত আসবে না।
আমি নব্য শিশুর ক্রন্দনে শুনতে পাই-
ধরণীর জন্য কবিদের আত্মচিৎকার।
যদি পার, কবিদের হত্যা কর।
পারবে না!
একজন কবিকে হত্যা করলে হাজারো মানুষ কবি হয়ে যাবে।
কলম হয়ে যাবে মিসাইল আর " ইউ টু থার্টিএইট " হয়ে যাবে কালি।
কবর থেকে মৃত অগ্নিগিরি জেগে উঠবে।
রাখালের বাঁশি মহাপ্রলয়ের হুঙ্কার দেবে।
বাউলের একতারের কম্পনে পৃথিবী থর থর করে কাঁপবে।
আমি প্রতিটি সংবাদ শিরোনামে শুনতে পাই-
প্রেমিকের জন্য ধরণীর আত্মচিৎকার।
যদি পার, প্রেমিকের টকবগে ধমনী স্তব্ধ করে দেও।
পারবে না!
একজন প্রেমিকের ধমণী প্রবাহ থামিয়ে দিলে
হাজারো যুবক প্রেমিক হয়ে যাবে।
সকল প্রেমিক গ্ল্যাডিয়েটর হয়ে যাবে।
মাটিতে ডঙ্কা বাজিয়ে স্পাটাকাস উত্থিবে।
প্রেমিকার শিমুল কোমল হাত বুমেরাং হবে।
রাজপথে রক্ত প্রবাহ শুরু হয়ে যাবে।
ফুরাতের সমস্ত জ্বল বাষ্প হয়ে যাবে।
মাতৃগর্ভ চিরে অপরিপক্ক শিশু এসে উপস্থিত হবে রণক্ষেত্রে।
আমি সহ্য করতে পারিনা, সহ্য হয় না-
নগরের জন্য প্রেমিকের এ আত্মচিৎকার।
এ নগর ধংস করে দেও ভয়ঙ্কর তান্ডবলীলায়!
আমি এখানে শুদ্ধ প্রণয়ের চাষ করব।
এরপর!
আর দালাল বুদ্ধিজীবীর গোলটেবিল বৈঠক হবে না।
অধিবেশন বসবে কেবল প্রেমিক প্রেমিকার।
একটি নারীও আর কভু হবে না পতিতা।
একটি শিশুও আর থাকবে না বুভূক্ষে।
ক্ষুধার রাজ্যে আর পৃথিবী হবে না গদ্যময়।
শহরে কোথাও আর থাকবে না কোন বিলবোর্ড।
নগর রক্ষায় আর লাগবে না সমরাস্ত্রের সওদা।
শ্রমিকের রক্তে আর একটি রাজপ্রসাদও উঠবে না।
কোন রাজ্য থাকবে না, কোন রাজা থাকবে না, কোন রাজপদ থাকবে না।
শুধু মানুষ থাকবে মানুষ।
আর পৃথিবী হবে একটি নগরের নাম।