প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে, আমাদের দেশে এটা নতুন কোন ঘটনা নয়, তাছাড়া এ ধরনের খবর আর আমাদের অনুভূতিকে তেমন নাড়াও দায় না। তবে উচ্চ শ্রেনীর যদি বিশেষ কেউ মারা যায় বা সংখ্যায় যদি খুব বেশি হয় তাহলেই সেটা বিবেচনাধীন বিশেষ খবর হয়, অনুভূতিটাকে একটু নাড়া দায়, মিটিং হয়, মিছিল হয়, মানব বন্ধন হয়। ছোট খাটো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা তেমন প্রভাব ফেলে না, কারন যারা মারা গেছে তারা আমাদের আপন কেউ না। আমরা সবাই জানি পৃথিবীতে মানুষ চিরদিন বাঁচেও না।
এবার ধরেন আপনার পরিবারের কেউ একজন (আপনার ছোট ভাই) সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিক ভাবেই আপনার কোমল অনুভূতিগুলো জেগে উঠবে, কষ্টের নীল বেদনা আপনাকে দংশন করবে। আত্মীয় স্বজনরা সহানুভূতি জানাবে, স্মৃতিচারন হবে, পাশাপাশি আপনার মনে অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম নিবে এই মৃত্য নিয়ে-
- এই অসময়ে আল্লাহ কেন আদরের ভাইকে তুলে নিলেন ?
- আজ্রাইল কি আমাকে চোখে দেখে না ?
- বাসের ড্রাইভার কি চোখ বন্ধ করে গাড়ী চালায়?
- ওদের কাছে কি জীবনের কোন মূল্য নেই?
- এমন ঝুকিপূর্ন রাস্তায় আর কত জীবন যাবে?
- সরকার কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়?
এরকম অনেক প্রশ্ন। এখন প্রশ্ন হলো আসলে কে আপনার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী- আল্লাহ? বাসের ড্রাইভার? ঝুকিপূর্ন রাস্তা? না সরকার?
সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল প্রিয় এক ছোট ভাই সোহেল রানাকে হারালাম, ঈদের খুশির রেশ মিলিয়ে গেলো, ভূতা অনুভূতি জেগে উঠলো কষ্টের নীল বেদনায় কারন ওর সাথে আর কোনদিন কথা হবে না, কোন দিন আর ওর হাসি মুখ দেখা হবে না, কোনদিন আর শোনা হবে না কেমন আছেন ভাইজান।
এখন প্রশ্ন হলো ওর মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?
বিষয়টা কার সদয় অবগতির জন্য জানানো যায়?
ভূতা অনুভূতিগুলো নিয়ে ভালই ছিলাম
সহনশীলতা আর ধর্যশীলতার দেয়াল ঠেকায়
হঠাৎ কোথা থেকে একটা লোহার হাতুড়ী এলো
তারপর ভূতা অনুভূতিগুলোকে উতপ্ত করলো
একের পর এক কষাঘাতে স্ফুলিং ছড়াতে চাইল
আমি থেতলে গেলাম, নীল কষ্টে চিৎকার দিলাম
দয়া করে আমাকে চুখিও না, আমাকে জাগিও না
আমি চোখে দেখি না, আমি বলতে পারি না
তুমি বরং সেই সব অনুভূতির কাছে যাও
যারা জেগে জেগে ঘুমিয়ে আছে
যাদের চোখ আছে কিন্তু বন্ধ রাখে
যাদের ভাষা আছে কিন্তু অপব্যবহার করে
তুমি পারলে তাদেরকে কষাঘাত করো
পারলে স্ফুলিং ছড়াও, চুখিয়ে দাও, একটু জাগিয়ে দাও !!