প্রিয়তমা, মন খারাপ তাই কুত্তা খেদাই
প্রিয়তমা তুমি কাছে আসনি, ভালোবাসনি
তুমি কুত্তার চেয়েও হারামী !!
ক্যাম্পাসে চায়ের দোকানে বসে শাহীন জীবনের মানে খুজেঁ। কি না করেছে সে। বৃষ্টিতে ভিজেছে, খরতাপে পুরেছে, কুয়াশা ঢাকা ভোরে লেডিস হোষ্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছে, একটিবার শুধু প্রিয়তমাকে দেখার আশায়। প্রচন্ড চাপ সামলাতে না পেরে, হোষ্টেলের দেয়ালে মুত্র বিষর্জন কালে ললনাদের বটী আর দা’য়ের দৌড়ানি পর্যন্ত খেয়েছে। সর্বশেষ তাকে শুনতে হয়েছে- আবার যদি কখনো তরে দেখি তাহলে সুন্নতে খাতনা করে দেব, শালা।
এত প্রচেষ্ঠার পরেও কিছুতে যখন কিছু হলো না, ভেবে ভেবে যখন কোন উত্তর মিলাতে পারে না, তখন সে মাথায় হাত দিয়ে চুল টনে আর কাগজ কলম নিয়ে কবিতা লিখে। আর এই কবিতার একমাত্র বিশ্লেষক হলো তার রুমমেট হাসান। একজন যদি হয় উত্তর মেরু অন্যজন দক্ষিন মেরু। দুজনের মিল শুধু এক জায়গাতেই উদাস হয়ে মাথার চুল টানাতে।
কবিতা হলো গভীর কল্পনাশক্তির বিষয়। শাহীন তার সকল কল্পনাশক্তির সংমিশ্রনে দু’ লাইন কবিতা লিখে বন্ধু হাসান কে যায় শুনাতে-
“টিনের চালো
পড়ল চাঁদের আলো”
তৎক্ষনাৎ হাসান বলে, পরের লাইনটা হবে-
“তুমি আমার কবির বালও !!”
শাহীনের মন ভেংগে টুরকো টুরকো হয়ে যায়। টুকরোগুলো কুড়িয়ে জোড়া লাগায়। আবার নতুন একটা কবিতার লাইন শুনাতে যায় –
“কাক তুমি কালো
বসেছিলে টেলিফোন এর তারো”
পরের লাইন হবে-
“কত কথা এলোগেলো
জানলা না তার বালও !!”
অসহায় চোখে শাহীন হাসানের দিকে তাকিয়ে থাকে, সকাল বেলায় কুত্তা যেমন ছিল তার দিকে তাকিয়ে। রাগ আর ক্ষোভে মনে মনে শুধু বলে –
“কুত্তা তুই যা ভাবছছ তা না
এইটা আসলে "গু" না, কবিতা, তুই বুঝবি না!!”
আবেগের সর্বোচ্চ শিখরে দাঁড়িয়ে পৃথিবীটা অবাক লাগে শাহীনের কাছে। জীবনের মূল লক্ষ্য ভুলে যায়, রঙ্গীন জগতের কড়া নাড়ে বেড়ায়। অবহেলা আর কষ্টের নীল বেদনায়, স্বপ্নের রঙ্গীন জগতকেই চিরন্তন বাস্তব মনে হতে থাকে......আর উপলব্ধি করতে থাকে জীবনের কি মানে ! অবশেষে একটা কবিতাটা সে লিখে -
!! বিলাপ ও কবিতা !!
তুমি না থাকলে
মালটা খেতে এতো মজা লাগতো না
তুমি না থাকলে
চিনি মাখানো দুধের স্বাদ ই জানতাম না
তুমি না থাকলে
টেষ্টি সালাইন এতো মধুর লাগতো না
তুমি না থাকলে
মধুর এই ক্ষন কখনোই আসতো না
তুমি না থাকলে
অতীত পানে কভু চেতাম না
তুমি না থাকলে
সংগীত ভুবনে হারাতে পারতাম না
তুমি না থাকলে
এই অসহ্য যন্ত্রনা মাথায় নিতাম না
তুমি না থাকলে
নিজেকে হারিয়ে আবার খুঁজতাম না
তুমি না থাকলে
নগ্ন কথায় মগ্ন হতাম না
তুমি না থাকলে
হেড়ে গলায় গান গাইতাম না
তুমি না থাকলে
হিংসা, ঘৃনা আর কষ্ট ভুলে হাসতে পারতাম না
তুমি না থাকলে
দু’বোতল ঘোলের জন্য আফসুস জাগতো না
তুমি না থাকলে
অপলক চোখে কভু তাকাতাম না
তুমি না থাকলে
যুক্তি তর্ক এতোটা জমতো না
তুমি না থাকলে
চিন্তা ধারা কখনো বদলাতো না
তুমি না থাকলে
তোমার মর্ম বুঝতে পারতাম না
তুমি না থাকলে
অশ্রু জলে সিক্ত হতাম না
শুধু তুমি না থাকলে
.......................................।।
(চরিত্র এবং কবিতা কোনটাই কাল্পনিক না, তাই কারো সাথে মিলে গেলে দায় ভার নিতে পারবো না)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৫৬