"চাচা কই যাবেন? ভাড়া দান"...কি কইলি আবার ক? ভাড়া দান ভাই।তুই আমাকে চাচা কইলি ক্যান? আমাকে কি দেখতে চাচার মতো মনে হয়? ওই ব্যাটা আমি তো এখনো বিয়াই করি নাই, চাচা হইলাম কখন? এইখান থেকে একটা থাপ্পর দিমু সোজা গুলিস্তান যাইয়া পরবি, ব্যাটা ফাজিল!! ভুল হইয়া গ্যাছে চাচা, চরি।
চাচা ডাকটা আসলে অবিবাহিত কারো জন্যই কাম্য না, তা তার বয়স যতই হোক না। তাই বলে আমার চয়ন চাচা কিন্তু তেমন না, তাকে চাচা ডাকলেও সে মাইন্ড করে না, কারন আমি তার একমাত্র ভাইস্তা।আর এই চাচার জীবনে ঘটে গেছে আতি নাটকীয় একটা ঘটনা। মিথ্যা বলব না, ঘটনাটা আসলে ঘুঘুতালীয় ভাবে ঘটে গেছে।
কখনোই তাকে চয়ন চাচার তেমন করে ভালো লাগে নাই। সেই প্রথম যেদিন তার সংগে পরিচয়, তখন ভালো বা মন্দ লাগার কোন প্রশ্নই ওঠেনি, কারন পুরো কাজটা ঘটে গেছে সামাজিক–পারিবরিক রীতি অনুসারে, মা-বাবার ইচ্ছায়। কি আর করা !! ভালো লাগুক আর নাই লাগুক, তাকে নিয়েই যে সারাটা জীবন কাটাতে হবে, চাচা তা বুঝতে পারে, বয়সটা যখন আরো একটু বাড়ে।
যখন দেখে বয়সে ছোটরা নিশ্চিন্ত মনে আনন্দ করে বেড়াচ্ছে, তার প্রতি চাচার বিরক্তির শুরু হয় তখন থেকেই। সবার যখন আনন্দ করার সময়, চাচাকে তখন তাকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকতে হয়। কত বার সে কেঁদেছে, শুধু একটি দিন তার কাছ থেকে মুক্তি পেতে। মাঝে মাঝে সৃষ্টিকর্তার দয়ার আভির্বাব ঘটত, তাই সে সাময়িক বিরতি পেয়ে যেত । কিন্তু পরক্ষনেই আবার সেই পুড়ামুখ এসে হাজির হতো। কি যে বেকায়দা, তা বলে বুঝানো যাবে না !!
কিন্তু আজ তার ক্ষুদ্র জীবনে খানিকটা বিরতিতে পিছন ফিরে দেখে, আর অবাক হয়ে ভাবে, জীবনে যা কিছু প্রাপ্তি, তার সবটুকু তার জন্যই পাওয়া, তার কাছ থেকেই পাওয়া। তার অনেক কঠিন নিয়মনীতি ইচ্ছার বিরুদ্ধে থাকলেও, আসলে পুরোটাই ছিল তাকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্যে।
তাই চয়ন চাচা আজ হাড্ডিতে হাড্ডিতে বুঝতে পেরেছে, বাবা-মা সেদিন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো তাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়ে, পড়া-লেখার সাথে পরিচিত করে।
হে “পড়া-শোনা” তোমাকে হয়তো কখনোই ভালোবাসেনি চয়ন চাচা, তাই বলি, তুমি নিশ্চিত থাকো ভবিষ্যতেও সে বাসবে না ! বিরাট আপচুস !! শুধু তোমার জন্য !!!