নয়নাভিরাম সুন্দর এই পৃথিবীতে বিধাতার সৃষ্ট অপরুপ সুন্দর শিল্পকর্মের কোন অভাব নেই। অসংখ্য রঙ-বেরঙয়ের পাখ-পাখালি আর তাদের কলতানে মুখরিত আমাদের এই প্রকৃতি। সুন্দর এই প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে সাঁজাতে বিধাতা যেন একটুও কার্পণ্য করেননি। প্রতি মূহুর্ত্বে আমাদের চারিপাশে চোখ বুলিয়ে আনলে হাজারও রঙ-বেরঙয়ের অদ্ভুত সব জিনিস আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। যেগুলোর অনেকের নাম আমরা জানি, আবার অনেকের নাম হয়তো জানি না। প্রকৃতির এত রঙের ভিড়ে আজ আমি আপনাদেরকে কিছুক্ষনের জন্য নিয়ে যাব, পৃথিবীর সব থেকে ছোট অথচ সব থেকে সুন্দর আর রঙিন পাখি 'হামিংবার্ড'-এর কাছে।
হামিংবার্ড একটি বিদেশি পাখি এবং এর সম্পর্কে আমরা সবাই কম-বেশি একটা জিনিস খুব ভাল করেই জানি যে, 'এটি হলো পৃথিবীর সব থেকে ছোট পাখি'। কিন্তু এই ছোট্ট পাখিটি সম্পর্কে আর তেমন কোন তথ্য কি আদৌ আমরা জানি? না জানলেও অবশ্য কোন অসুবিধা নেই! তবে আজ জানবো, একদম বিস্তারিত ভাবে; এই ক্ষুদ্র পাখি হামিংবার্ড সম্পর্কে..........!!
পরিচিতিঃ- মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের বর্ননানুসারে, সৃষ্টির অসংখ্য আর অগনিত মাখলুকাতের মধ্যে একটি মাখলুকাত হলো 'পাখি' সম্প্রদায়। বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ১০,০০০ হাজার প্রজাতির পাখি বিদ্যমান রয়েছে। এবং আজ পর্যন্ত প্রাপ্ত পাখিদের জীবাশ্ম গুলো নির্দেশ করে যে, এই পাখিদের আবির্ভাব হয়েছিল সদূর জুরাসিক যুগে। অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ১৬'শ কোটি বছর আগে। জীবাশ্ম বিজ্ঞানীদের মতে, সাড়ে ৬'শ কোটি বছর আগের 'ক্রিটেশাস প্যালিওজিন' বিলুপ্তির পর পাখিরাই চার উপাঙ্গবিশিষ্ট ডাইনেসরের একমাত্র বংশধর হিসাবে এই পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত টিকে আছে। এবং এই পাখিদের মধ্যে সব থেকে ছোট আর রঙ্গিন পালক বিশিষ্ট বিচিত্র পাখি হলো 'হামিংবার্ড'।
ইংরেজি Humming শব্দটির বাংলা অর্থ হলো "গুঞ্জন বা গুনগুন শব্দ করা"। কেননা এই ছোট্ট পাখিটি উড়ার সময় যখন প্রচন্ড গতিতে পাখা ঝাপটায়, তখন সেই পাখার থেকে মৌমাছির পাখা নাড়ানোর মত একটা তীব্র গুনগুন শব্দ বের হয়। আর এজন্যই এই পাখিকে 'হামিংবার্ড বা গুনগুন পাখি' বলা হয়। অনিন্দ সুন্দর এই ছোট্ট পাখিটির স্বভাবেও আছে নানা বৈশিষ্ট। সম্প্রতি পেরুর একজন বিখ্যাত গবেষক আবিষ্কার করেছেন যে, "হামিংবার্ড নাকি তাদের নাকও ডাকাতে পারে! এবং তাও আবার মানুষের মত! তবে সুধুমাত্র পার্থক্য এইটুকু যে, মানুষের ক্ষেতেও নাক ডাকানোটা অনেক সময় অন্যের জন্য চরম বিরক্তিকর মনে হলেও; হামিংবার্ডের ক্ষেত্রে তেমনটা নয়। বরং এদের নাক ডাকানোটা যেমন মিষ্টি, শুনতেও ঠিক তেমনই ভাল লাগে।"
হামিং বার্ডের আকার, আয়তন এবং বৈশিষ্টঃ- বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এই পাখির ঠোঁটের অগ্রভাগ থেকে লেজের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দৈর্ঘ্যে ৫-৬ সেঃ মিঃ (২.০-২.৪ ইঞ্চি) এবং সর্বোচ্চ ওজন ১.৬-২.০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। অর্থাৎ এটি আয়তনের দিক থেকে দেখতে অনেকটা মৌমাছির মতই বলে মনে হয়। তবে এই হামিংবার্ড প্রজাতিরই সব থেকে বড় পাখিকে বলা হয় 'জায়ান্ট হামিংবার্ড', যারা লম্বায় মাত্র ৮.৫ সেঃ মিঃ এবং ওজনে সর্বোচ্চ ১৮-২০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে মজার বিষয় হলো, তাদের এই ওজনের শতকরা ৩০ শতাংশই হলো পেশি; যা এদেরকে উড্ডয়নের কাজে সাহার্য্য করে।
সাধারনত পুরুষ হামিংবার্ডের চেয়ে স্ত্রী হামিংবার্ড আকারে একটু বড় হয়, যে কারনে পুরুষদের চেয়ে স্ত্রী হামিংবার্ডের ওজন তুলনামূলক ভাবে একটু বেশি। গড় অনুপাতে একটা হামিংবার্ডের শরীরের তাপমাত্র সর্বোচ্চ ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাছাড়াও এদের পালক খুবই উজ্জল এবং রংরঙয়ে হয়ে থাকে। অর্থাৎ সাধারন ভাবে বলতে গেলে, সাবানের বুদবুদ বা প্রিজমের মধ্য দিয়ে আলো যাওয়ার সময় যেভাবে আলোকরশ্মি ভেঙে গিয়ে অনেক গুলো রংয়ের ছটা দেখতে পাওয়া যায়; ঠিক একই প্রকৃয়ায় হামিংবার্ডের পালক থেকেও আলো বিচ্ছুরিত হয়ে তা অনেক গুলো রংয়ের সৃষ্টি করে। আর সব থেকে উজ্জল যে পালক গুলো এদের ঘাড়ের কাছে বিদ্যমান থাকে, তার নাম হলো- 'গরজেট।' তাছাড়া এদের অনেক গুলো বৈশিষ্টের মধ্যে একটা অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট হলো, দরকার মত এরা নিজেদের পালকের রং'কে বদলাতেও পারে। যা পৃথিবীর অন্যকোন পাখি পারে না। এবং এটা শত্রুর হাত থেকে এদেরকে বাঁচতেও খুবই ভাল ভাবে সাহায্য করে।
একটা হামিংবার্ডের শরীরের যা ওজন তার শতকরা ৪.২ শতাংশ হলো এদের মাস্তিষ্কের ওজন। সাধারনত পাখিদের মধ্যে এত বড় মস্তিষ্কের অধিকারী অন্যকোন পাখিকে দেখতে পাওয়া যায় না। সম্ভাবত একারনেই এদের বুদ্ধিও অন্যান্য পাখিদের তুলনায় একটু বেশিই হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে, এদের মস্তিষ্ক এতটাই পরিষ্কার যে; এরা কোন কোন ফুল থেকে আগেই মধু খেয়ে গেছে সেটা দিব্যি মনে রাখতে পারে। এমনকি সেই ফুলে আবার কখন মধু আসবে, এরা তাও বলে দিতে পারে।
হামিংবার্ডের হৃদয় বেশ শক্তিশালী। এর হৃদস্পন্দন মিনিটে প্রায় ১২৬০ বার পর্যন্ত হতে পারে। যেখানে একজন সুস্থ মানুষের হৃদস্পন্দন মিনিটে মাত্র ৭০-৭৫ বার। তবে বিশ্রামের সময় এদের হৃদস্পন্দন অনেকটা কমে গিয়ে তা মিনিটে প্রায় ২০০-২৫০ বার পর্যন্ত হতে পারে। সম্পূর্ন শরীরের ওজনের ২.৫ শতাংশ হয় এদের হৃদপিন্ডের ওজন। আর এই শক্তিশালী হৃদপিন্ডের কারনে এদের নিঃশ্বাস ও অনেকটাই দ্রুত। তাও মিনিটে প্রায় ২৫০ বার।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, আমেরিকা আবিষ্কারক বিখ্যাত নাবিক 'কলম্বাস' যখন জাহাজে চেপে আমেরিকার উপকূলবর্তি কোন এক অজানা দ্বীপে গিয়ে পৌঁছান, তখন সেখানে নতুন দেশের ছোট্ট অথচ বিচিত্র এই পাখি দেখে তিনি বোকা বনে গিয়েছিলেন। এমনকি ফুলের সামনে উড়ে বেড়ানো এই ছোট্ট পাখিটিকে দেখে তার সাথীরা এটাকে একটা অজানা পোকা ভেবে ভুল করেছিলেন।
নামকরনঃ- হামিংবার্ড মুলত Trochiledae (ট্রকিডি) পর্বের অন্তর্গত Mellisuga (মেলিসুগা) নামক গোত্রের অন্তর্ভূক্ত এক প্রজাতির মৌ'পায়ী পাখি। Mellisuga Helenae হলো এদের বৈজ্ঞানীক নাম। অর্থাৎ পৃথিবীর সকল বৈজ্ঞানিক মহল এদেরকে ঐ নামেই চিনে থাকে। এছাড়াও এদের বৈজ্ঞানিক শ্রেনীবিন্যাস গুলো বলতে গেলে বলতে হয়-
"এদের জগৎ বা রাজ্যঃ Animalia; পর্বঃ Chordata; শ্রেনীঃ Aves; বর্গঃ Trochiliformes; পরিচয়ঃ Trochilidae; গণঃ Mellisuga এবং প্রজাতি হলঃ M. Helenae।"
তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় এদেরকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়ঃ- "পুর্তগীজ ভাষায় এদের কে 'বেইজা-ফ্লর বা চুম্বনকারী' নামে ডাকা হয়। স্থানীয় কিউবার ভাষায় এদেরকে অনেক সময় 'চুপাফ্লর' নামেও ডাকা হয়, যার বাংলা অর্থ-'ফুল চুষে খায় যে'। এছাড়াও স্প্যানিশ ভাষায় এদেরকে বলে 'জয়াস ভোলাডরাস', যার অর্থ হলো-'উড়ন্ত রত্ন'। ঐ একই স্প্যানিশ ভাষায় এদের আরও একটি নাম হলো 'পিকাফ্লর', যার মানে হলো-'ফুল কামড়ায় যে'। ইহা ছাড়াও ক্যারাবিয়ান ভাষায় এদেরকে 'যুনযুন' নামেও স্বম্বোধন করা হয়।"
প্রজাতিঃ- আমেরিকান জার্নাল অব সায়েন্স কর্তৃক প্রকাশিক এক জরিপে দেখা গেছে যে, পাখি বিশেষজ্ঞরা এ যাবত পর্যন্ত প্রায় ৩১৯ প্রজাতির হামিংবার্ডের সন্ধান লাভ করতে পেরেছেন। এবং উনারা আরও দেখেছেন যে, এই প্রত্যেকটা প্রজাতির মধ্যে একটা আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট বিদ্যমান। যেমন 'এদের কারো গলার পালক সবুজ, আবার কারোরই বা নীল এবং হলুদে মেশানো। কারো ঠোঁট লম্বা এবং সরু, আবার কারো ঠোঁট লম্বা কিন্তু নিচের দিকে বাঁকানো।'
এছাড়াও কিছু কিছু প্রজাতির হামিংবার্ড আছে যাদের শরীরের চেয়ে লেজের দৈর্ঘ্য অনেক বড়। এমনই কিছু উল্লেখ যোগ্য হামিংবার্ড হলোঃ- "মৌ হামিংবার্ড, গ্রিন-ক্রাউন্ড ব্রিলিয়ান্ট,ওয়াইন-থ্রোটেড হামিংবার্ড, রুফাস হামিংবার্ড, কোসটা'স হামিংবার্ড, মারভেলাস স্পাটালটেইল, ফেরি-থ্রোটেড হামিংবার্ড, আন্না'স হামিংবার্ড, জায়ান্ট হামিংবার্ড, আনস্পেসিফাইড ইত্যাদী।" প্রকৃতিতে হামিংবার্ডের এই প্রজাতিকে অত্যধিক বলে মনে হলেও এদের মধ্যে অধিকাংশই এখন বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীর অন্তর্ভূক্ত এবং অধিকাংশই আছে হুমকির মুখে।
হামিংবার্ডের ওড়ার রহস্যঃ- এই ক্ষুদ্র পাখিটি সম্পর্কে সব থেকে মজার তথ্যটি হলো, আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম বিস্ময়কর আবিষ্কার রকেটের উড়ে চলা আর হামিং বার্ডের উড়ে চলা প্রায় একই সূত্রে গাঁথা। কারন রকেট যেমন নিচ থেকে সোজা উপরে উঠার ক্ষমতা রাখে, ঠিক তেমনি ভাবে হামিংবার্ডও তাদের স্পেসিফিক গ্রাভিটি বাড়িয়ে ভূমি থেকে সোঁজা উপরের দিকে উঠতে পারে। আবার উপর থেকে সোজা নিচের দিকে নামতেও পারে।
পৃথিবীর ভিতরে হামিংবার্ডই একমাত্র পাখি, যারা সামনে, পিছনে, ডাইনে, বামে এবং উপর-নিচ সব দিকে সমান ভাবে উড়তে পারে। এমনকি এরা নিজেদের পাখনার গতি বাড়িয়ে প্রচন্ড দমকা হাওয়ার মাঝেও হেলিকপ্টারের মত স্থির হয়ে ভেসে থাকতে পারে। যা অন্য পাখিদের দ্বারা আদৌ সম্ভব নয়।
হামিংবার্ডের আরও দুইটি প্রধান বৈশিষ্ট হলো, এরা অনেক দিন পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারে। এবং কোন রকমের বিশ্রাম ছাড়াই একটানা উড়ে প্রায় হাজার মাইল পর্যন্ত পথ অতিক্রম করতে পারে। একটা বৈজ্ঞানিক গবেষনায় দেখা গেছে যে, সেকেন্ডে সর্ব নিম্ন ১২ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ বার পর্যন্ত এরা ডানা ঝাপটাতে পারে। অর্থাৎ এক মিনিটে যা প্রায় ৫০০০ বারের মত দাঁড়ায়। যেটা অন্য পাখিদের জন্য একেবারেই অসম্ভব। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে, যেমন যৌন মিলন অথবা শত্রুকে আক্রমন করার সময় এরা সেকেন্ডে ২০০ বারেরও অধিক পাখা সঞ্চালন করতে পারে। যা প্রায় একটা মৌমাছির ডানা ঝাপটানোর সমতূল্য।
কিভাবে এত ছোট্ট একটা পাখি এত দ্রুত ডানা সঞ্চালন করতে পারছে, তার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, এদের ডানার উন্নত গঠন, কাঁধের জোড়া এবং ডানার অতি শক্তিশালী পেশির মধ্যেই এর আসল রহস্য লুকিয়ে আছে। সর্বনিম্ন ডানা ঝাপটানিতে একটা হামিংবার্ড ঘন্টায় ৫৪ কিঃ মিঃ পথ অতিক্রম করতে পারে. এবং যখন খুবই দ্রুত ডানা ঝাপটায় তখন এদের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকে ঘন্টায় ১০০ কিঃ মিটারেরও অধিক। তবে এরা দ্রুত উড়তে পারলেও অন্যান্য পাখিদের মত হাঁটতে বা দাঁড়াতে পারে না। কারন শরীরের গঠনের তুলনায় এদের পা খুবই দুর্বল। যে কারনে এরা হাঁটার চাইতে উঁড়তেই সব থেকে বেশি পছন্দ করে।
হামিংবার্ডের খাবারঃ- অন্য পাখিদের তুলনায় খাবার-দাবারের বেলাতে হামিংবার্ড বেশ বিলাসী। এদের খাদ্য তালিকায় প্রধান হলো মধু বা এভাবে বলা যায় যে, মধু জাতীয় খাদ্যই এদের কাছে সব থেকে বেশি প্রিয়। জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একটা হামিংবার্ড দিনে প্রায় ১৫০০ ফুল থেকে মধু আহরন করে খায়। তবে মধু খাওয়ার সময় এরা ফুল থেকে যতটা সম্ভব নিজের দুরত্ব বজায় রাখে এবং শূন্যে ভাসমান অবস্থায় এরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে। এদের ঠোঁট অনেকটা সুঁচের মত সরু, যা এদের শরীরের তুলনায় বেশ বড়। তাছাড়া উপরের ঠোঁটের তুলনায় নিচের ঠোঁট কিছুটা লম্বা এবং অনেকটাই স্থিতিস্থাপক। ওদের জিহ্বার গঠনও বেশ অদ্ভুত ধরনের। অনেকটা সাপের জিহ্বার মত মাঝে খাঁজ কাটা এবং জিহ্বার অগ্রভাগ দেখতে কিছুটা ইংরেজি 'W' অক্ষরের মত।
এছাড়াও এদের জিহ্বার অগ্রভাগে রয়েছে ক্ষুদ্র কিছু রোম যা ফুল থেকে মধু চেটে খাওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। মূলত লাল রঙের ফুলই এদের কাছে সব থেকে বেশি পছন্দের। তবে কিছু কিছু প্রজাতির হামিংবার্ড আছে, যারা খাবার হিসাবে পোকা-মাকড়ও গ্রহণ করে থাকে।
এদের শ্রবনশক্তি এবং দৃষ্টিশক্তি মানুষের চেয়ে অনেক বেশি প্রখর হলেও, সেই তুলনায় এদের ঘ্রানশক্তি খুবই দুর্বল। তবে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য সনাক্তকরনে এরা বেশ ওস্তাদ। হার্ভাড মেডিকেল কলেজের গবেষক জনাব মাওডি ব্যাল্ডউইন এদের সম্পর্কে বলেন, 'হামিংবার্ডের মিষ্টি জাতীয় খাদ্য সনাক্তকরন ক্ষমতা অনেকটাই তাদের বংশগত। তিনি আরও বলেন, মিষ্টি জাতীয় খাদ্য পছন্দের ক্ষেত্রে হামিংবার্ডের মধ্যে প্রায় ১৯টি পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে।'
অর্থাৎ সব ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাদ্যই যে এদের পছন্দনীয় হবে, এমনটি কিন্তু নয়। বরং সব থেকে আশ্চার্যজনক বিষয় হলো, এদের খাদ্য পরিপাক করার ক্ষমতা একটা হাতির চেয়েও ১০০ গুন বেশি। একারনেই এদেরকে খুব বেশি বেশি পরিমাণে খেতে হয়, এবং প্রতিদিন এরা নিজের শরীরের চেয়েও বেশি ওজনের খাবার গ্রহণ করে থাকে।
বাসস্থানঃ- হামিংবার্ড সাধারনত গাছের ডালে বাসা বেঁধে তাদের শান্তির নীড় রচনা করে থাকে। বাসা তৈরির জন্য এরা শুকনো ঘাস, লতাপাতা, গাছের বাকল, মাকড়সার জাল, ছত্রাক এবং শ্যাওলা ব্যবহার করে থাকে। তবে বাসা তৈরির জন্য মূলত স্ত্রী পাখিরাই কাজ করে থাকে, এ ব্যাপারে পুরুষের কোন মাথাব্যাথা নেই। ওদের বাসা দেখতে অনেকটা কাপ আকৃতির হয়ে থাকে। দুই গ্রামের কম ওজন এবং আড়াই ইঞ্চিরও কম লম্বাকৃতির এই পাখির ডিমের আকৃতি দেখতে অনেকটা ক্ষুদ্রাকৃতির একটা মটর দানার মত। একটি স্ত্রী হামিংবার্ড প্রতিবার দুইটি করে ডিম পাড়ে। প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা হামিংবার্ড বের হয় এবং প্রাপ্ত বয়স্ক হতে প্রায় ছয় থেকে সাত দিন সময় লাগে। আর এই সময় টুকুতে বড় হামিংবার্ডেরা কখনো বাচ্চাদের কে অবহেলা করে না।
সুধুমাত্র উত্তর এবং দক্ষিন আমেরিকা ব্যাতিত পৃথিবীর অন্য কোন মহাদেশে হামিংবার্ড কে দেখতে পাওয়া যায় না। তবে কিউবার গভীর ঘন অরণ্যই হলো এদের জন্য স্বর্গরাজ্য। আর এই অঞ্চলেরই মাত্র ১ লক্ষ ৯ হাজার বর্গ কিঃ মিঃ জুড়ে এরা বিস্তৃত।
এবার আসুন ছবির মাধ্যমে হামিংবার্ডের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা পর্যন্ত এক নজর দেখে নিইঃ- একটা হামিংবার্ড সাধরণত তার জন্ম থেকে পূর্ণাঙ্গ বেড়ে ওঠা অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় নেয় মাত্র ২০ থেকে ২১ দিন। এই ২০ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত একটা হামিংবার্ড তার বাসাতে বসে কি করে, কিভাবে তার জন্ম হয় এবং কিভাবেই বা ক্রমবর্ধমান আকারে সে বৃদ্ধিলাভ করে, পর্যায়ক্রমে ছবির মাধ্যমেই সেগুলো এবার জেনে নেবঃ-
☞ প্রথম দিনঃ- হ্যাপি বার্থ ডে টু চাইল্ড হামিংবার্ড। ডিম ফুঁটে সদ্য জন্ম নেওয়া পিচ্চি হামিংবার্ড। এটার ওজনও ঠিক ডিমেরই অনুরুপ। অর্থাৎ প্রায় ০.৫ গ্রাম।
☞ দ্বিতীয় দিনঃ- যদিও সদ্য জন্মগ্রহণকারী পিচ্চি হামিংবার্ড দুটি এখনো বেশ দূর্বল, তথাপি তারা বর্তমানে তাদের প্রিয় খাদ্যের যে কোন কিছুই গ্রহণ করার জন্য একদমই তৈরি। তাছাড়া বর্তমানে তাদের চোখ দু'টো সম্পূর্ণ বন্ধ অবস্থায় আছে এবং এভাবে প্রায় নয় দিন পর্যন্ত অতিবাহিত হওয়ার পরে তারা চোখ খুলে এই পৃথিবীর আলো সহ্য করার সক্ষামতা অর্জন করতে পারবে।
☞ তৃতীয় দিনঃ- সাধারণত পাখিদের চোখের পাতায় এক ধরনের আবরণ থাকে যেটা তাদেরকে উড়তে গিয়ে বাতাসে যাতে চোখের ভিতর শুকিয়ে না যায়, সে জন্য কাজ করে থাকে। যেটা স্বভাবতই মানুষের চোখে থাকে না। তিন দিন বয়সি পিচ্চি হামিংবার্ড গুলো এখনো পর্যন্ত তাকানোর মত সক্ষামতা তৈরি করতে পারেনি, কেননা তারা বর্তমানে অলস সময় অতিবাহিত করছে।
☞ চতুর্থ দিনঃ- কত ছোট্ট বাসা! অথচ কতটা নির্ভরযোগ্য আবাসস্থল!!
☞ পঞ্চম দিনঃ- পাখিরা সাধারণত খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আজ এই বাচ্চা দুইটার জন্মের মাত্র পাঁচ দিন। অথচ এই পাঁচ দিনেই তাদের মধ্যকার পরিবর্তন গুলো চোখে পড়ার মত। পাঁচ দিনে একটা মানুষ্য শিশু বোধ হয় ঠিক মত চোখ মেলে তাকাতেও পারে না।
☞ ষষ্ট দিনঃ- দ্রুত বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের চামড়ার উপরও যথেষ্ট পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। হালকা একটা হলুদের আভা সমস্থ শরীর জুড়েই বিরাজ করছে। যেটাকে মূল পাখনা গজানোর প্রাথমিক স্তরও বলা যায়।
☞ সপ্তম দিনঃ- এতদিন তাদের পাখনা গুলো ততটা স্পষ্ট ছিল না। তবে সপ্তম দিনে সেটা কিছুটা আলাদা হয়ে যায়, এবং পৃথক পৃথক স্তরে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
☞ অষ্টম দিনঃ- এতদিন তাদের ঠোঁট গুলো কিছুটা হলুদ রংয়ের ছিল। অষ্টম দিনে সেটা পরিবর্তিত হয়ে কালচে রুপ ধরণ করেছে।
☞ নবম দিনঃ- অল্প অল্প করে হলেও প্রতিদিনই তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। যেটা তাদের বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
☞ দশম দিনঃ- একটু সতর্কতার সাথে লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, দশম দিনে তাদের চোখ কিছুটা হলেও খোলা আছে। এতদিন তাদের চোখ বন্ধ ছিল। তবে বর্তমানে সেটা আলো সহ্য করার মত সক্ষামতা অর্জন করে ফেলেছে।
☞ এগারতম দিনঃ- ক্রমবর্ধমান আকারে এখানো তারা প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েই চলেছে। যদিও বর্তমানে তাদের শারীরিক গঠনের তুলনায় বাসাটা একটু ছোট হয়ে গেছে, তবে তারা তো আর মানুষের বাচ্চা নয় যে; এই বয়সেই তারা দু'জনে জমি-জায়গা সংক্রান্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়বে।
☞ বারতম দিনঃ- আস্তে আস্তে হামিংবার্ডের শরীরের উপরে কি সুন্দর সবুজের আবরণ তৈরি হচ্ছে! বারতম দিনে তাদের শরীরে এবার প্রকৃত উড়ার উপযোগী পাখনা বের হচ্ছে।
☞ তেরতম দিনঃ- জায়গাটা তাদের ক্রমবর্ধমান পরিবেশের জন্য বড্ড ছোট। কিন্তু একটু লক্ষ করে দেখুন, তাদের ডানার সমানুপাতিক হারে লেজেরও তদ্রুপ বৃদ্ধি ঘটছে।
☞ চৌদ্দতম দিনঃ- প্রতিদিনই একই পজিশনে থাকতে কারই বা ভাল লাগে? মাঝে মাঝে বাংলা মদ ছেড়ে একটু হুইসকি, ব্রান্ডি হইলে তো আর মন্দ হয় না! চৌদ্দতম দিনে পিচ্চি হামিংবার্ড দুইটা নিজেদের মধ্যে একটু পজিশন চেঞ্জ করে নিলো। নুতন পজিশনে বেশ ভালই লাগছে কিন্তু!
☞ পনেরতম দিনঃ- এখন থেকে ওরা আর দিনের চব্বিশ ঘন্টাই আন-লিমিটেড ঘুমায় না। অল্প ঘুম, হালকা স্বপ্ন, আবার কিছুক্ষণ কিচির-মিচির। নিজের সাথে বেশ একটা মিল পাচ্ছি কিন্তু! পনেরতম দিনে আমি ঠিক কেমন ছিলাম জানি না, তবে হামিংবার্ড কিন্তু পনেরতম দিনে; এখন থেকে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছে। বেশ কাজের পাখি বলতেই হবে!
☞ ষোলতম দিনঃ- আবারও পজিশন পরিবর্তন। দু'জনেই আবারও বিপরিতমুখী হয়ে একই বাসায় অবস্থান করছে। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, আমি আর কোনদিনও তোর মুখ দেখবো না। আফটার অল, আগামী দিন গুলোর সংসার তো আমাকে তোর সাথেই করতে হবে! আসলে এটা ওদের জন্য একটা চলিত ধারা! ওদের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির জন্য এই বাঁক নেওয়াটা খুবই জরুরি।
☞ সতেরতম দিনঃ- বাড়তে বাড়তে সতেরতম দিনে আজ এ পর্যন্তই। বর্তমানে তাদের শারীরিক ওজন প্রায় ৪.০ গ্রাম। জন্মের সময় তাদের ওজন ছিল মাত্র ০.৫ গ্রাম। সতের দিনে তারা বেশ বেড়ে উঠেছে বলতে হবে।
☞ আঠারতম দিনঃ- ছোট্ট বাসাটার মধ্যে আজ আর দু'জনের এই বৃহৎ শরীর ধরছে না। তাই বাসার বাইরেও শরীরের খানিকটা অংশ ঝুলে পড়েছে।
☞ ঊনিশতম দিনঃ- কি কিউট বাচ্চা! বাসাটা তাদের শরীরের তুলনায় একদমই ছোট হয়ে গেছে। ভগ্ন বাসাটা তাদেরকে কেবল এটাই নির্দেশ করছে যে, আমার কাছে তোমাদের অবস্থান আর বেশিদিন নয়।
☞ বিশতম দিনঃ- পাখি দু'টিও বোধ হয় তাদের মুখ উচিয়ে প্রিয় জন্মস্থানকে এটাই বুঝাতে চাইছে, আমিও আর তোমার এখানে বেশিদিন থাকবো না? আমারও যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে!
☞ একুশতম দিনঃ- বড় ভাই চলে গেছে, এখন ছোটটারও যাওয়ার পালা! আর কিছুক্ষনের মধ্যেই হয়তো এটাও চলে যাবে! তাই যাওয়ার আগে পিচ্চিটাকে অগ্রিম- 'বাই বাই বেবি!' জানাইয়া রাখলাম!
☞ বাইশতম দিনঃ- কেউ কথা রাখে না, সবাই কেবল যাওয়ার জন্যই আসে বোধ হয়! আর যাওয়ার আগে তাদের ফেলে রেখে যায় তাদের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন। লক্ষ করুন, বাসাটা প্রথম যখন তৈরি করা হয়েছিল তখন সেটা দেখতে অনেকটা খোপের মত ছিল। অথচ আজ সেটা একদমই খেলানো। পাখি দু'টো হয়তো এখন অন্য কোথাও গিয়ে তাদের নিজেদের স্বাধীন জীবন যাপন শুরু করবে। তারপর তারাও এভাবে বাসা তৈরি করবে, ডিম ফুঁটাবে, আবার সে ডিমে ঠিক একই প্রকৃয়ায় বাচ্চাও ফুঁটবে। এবং এক সময় সেই বাচ্চাও ঠিক এভাবেই বড় হয়ে নিজেদেরকে মেলে ধরবে মুক্ত আকাশের বুকে। আর এভাবেই চলে হামিংবার্ডের জীবন চক্র।
পুনশ্চঃ- দেখতে ছোট হলেও হামিংবার্ড অনেক সাহসী একটা পাখি। এরা দিজেদের এলাকা রক্ষা করার জন্য অনেক বড় বড় পাখিদেরকেও খুব বেশি তোয়াক্কা করে না। বরং দলবদ্ধ ভাবে তাদের উপর আক্রমন করে তাদেরকে নিজেদের এলাকা ছাড়া করে ছাড়ে। প্রচন্ড বিপদের সময় ভীষন রকমের কর্কশ আওয়াজের মাধ্যমেই মূলত এরা নিজেদেরকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে। তবে এদের সব থেকে বড় শত্রু হলো মানুষ। কারন এদের রঙিন পালকের লোভে মানুষ এদেরকে শিকার করে। এছাড়াও অনেক অসাধু ব্যবসায়ী আছে যারা এদেরকে ফাঁদ পেতে ধরে ধরে বিভিন্ন দেশে বিক্রি করে দেয়। যে কারনে বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কমে যাচ্ছে।
হামিংবার্ডের গড় আয়ু ৩-৫ বছর হলেও, কিছু কিছু হামিংবার্ড আছে যারা এক বছরের মধ্যেই মারা যায়। আবার অনেক হামিংবার্ড আছে যারা একটানা ৮-১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। সব থেকে আশংকার কথা হলো, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং মানুষের অতিমাত্রায় শিকারের কারনে ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রজাতির হামিংবার্ড এই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এজন্যই আই.ইউ.সি.এন এই প্রজাতিটিকে প্রায় বিপদগ্রস্থ প্রজাতি হিসাবে ঘোষনা করেছে। পরিশেষে একটা কথা বলবো-
"প্রকৃতি আমাদের সম্পদ, আর এই সম্পদকে রক্ষা করার দ্বায়িত্বও আমাদের। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে আমাদের এই সুন্দর প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলি।"
তথ্যসূত্রঃ- এই ধরনের পোস্টের ক্ষেত্রে সাধারণত তথ্যসূত্র উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে বলে আমার মনে হয় না। তথাপি সর্বাধিক সহযোগিতা গ্রহণকরা দু'টি লিংক নিচে উল্লেখ করে দিলাম। এছাড়াও পোস্টে উল্লেখিত আনুসঙ্গিক তথ্যাদী সহ প্রত্যেকটা ছবিই ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিতঃ-
☞ উইকিপিডিয়া এবং এনসাইক্লোপিডিয়া- হামিংবার্ড।
☞ ক্রমবর্ধমান উপায়ে হামিংবার্ডের বেড়ে ওঠার ধাপ সমূহ।
দৃষ্টি আকর্ষণঃ- এটা একটা রি-পোস্ট। পোস্টটা সংগত কারণে প্রথমে প্রকাশ করার পরে সেটাকে আবার ড্রাফট করে নেওয়া হয়েছিল। তবে আপাতত লেখার মত কোন টপিক মাথায় না আসায় সেটাকে কিছুটা সংযোজন এবং বিয়োজনের মাধ্যমে সংশোধন করে, আবারও আন-ড্রাফট করে পূনরায় প্রকাশ করা হলো।
প্রাণী সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমার লেখা ঠিক একই কোয়ালিটির আরো দু'টি পোস্ট আছে। নিচে তার লিংক উল্লেখ করে দেওয়া হলো। সময় থাকলে একই সাথে সেগুলোর উপরেও একবার চোখ বুলিয়ে আসতে পারেনঃ-
☞ জানা/অজানাঃ- "বৈচিত্রময় জোনাকি পোকার সাত কাহন"
☞ জানা/অজানাঃ- "প্রাগৈতিহাসিক যুগে বিলুপ্ত হওয়া এক অতিকায় দানবীয় প্রাণী ডাইনোসরের সাতকাহন"
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- টাইপিংয়ের ভুলের কারনে হয়তো অনেক জায়গায় বানানে ভুল থাকতে পারে। সেটাকে বিবেচ্য বিষয় হিসাবে না ধরে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে কৃতার্থ হবো! তাছাড়া এতক্ষণ যাবত সাথে থেকে এবং কষ্ট করে এতবড় একটা পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন! হ্যাপি ব্লগিং....!!