ভার্সিটিতে ল্যাব করে প্রবল আর্থিক সমস্যা আর অস্বাভাবিক বৈশ্বিক উষ্ণতা সত্ত্বেও আমরা ১০ জন নির্মল বিনুদুন প্রেমিক যাত্রা করিলাম দেশের অন্যতম ব্যায়বহুল সিনেমা হল চিনেপ্লেক্স
এর উদ্দেশে , , মনে রাখিবেন শুধু মাত্র দেশ ও জাতির কলানে , এম এ জলিল অনন্ত ভাই যে ১০ কোটি টাকা খোয়াইলেন তার প্রতি সমবেদনা জানাইতে ।
অতি উৎসাহী বাঙ্গালি বলে কথা । ১ : ৩০ এর শো হলেও ১২ বাজেই আমরা হাজির , অনন্ত ভাইয়ের ছবি বলিয়া কথা । টিকেটের সাথে এবার হারামিটেলের ফ্রি কোক কুপন ।
হঠাৎ দেখি আরে অনন্ত ভাই । নায়করে পাইয়া , বাস্তবে না হইলেও , আমরা ব্যাফুক খুশি । এই দেখেন ফটুঁ ।
অসভ্য গুলান ভিতরে যাইতে না দেয়াতে আমরা ।
[ আজকে ব্যাপক সুন্দরী ললনার আগমন ঘটেছিল , ওয়েস্টার্ন পোষাকে । তারাও অনন্ত ভাইয়ের বিরাট ফ্যান ]
হলে ঢুকিয়া আসন গ্রহন করিলাম , ১০ টা সিট , অবু দশ বিষ করতে করতে অবশেষে সবচেয়ে বাজে সিট টা আমার । তাতে কি ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও মানুষের হাতে চাপা দেয়
প্রথমে জাতীয় সংগীত । ইহা আমি খুব উপভোগ করি । সবাই আশা নিয়ে আরাম করে বসলেও প্রবল অনিচ্ছা নিয়ে দাঁড়ায় । আর কেও যদি না দাঁড়ায় তাহলে আমি তো আসি ই ই ই ই , , , ফাপর নিতে আর বাকি রাখি না
মূল গল্প
ঘটনা আসলে তেমন কিছু না , সত্যবাদিতা আর কি !!!!
শুরুতেই ছোট্ট পাকনা দিঘি , ভাবসিলাম মেয়ে কিন্তু না সে হল দেশের এক মাত্র সৎ নির্ভেজাল ব্যাবসায়ি অনন্য চৌধুরীর ছোট্ট একটি কলিজার বড় একটি টুকরা পাশে আছে ২ টি সিলিন্ডার , অক্সিজেন না মানব সিলিন্ডার , বাংলায় বললে ডিজিটাল স্কারট পড়া বুয়া , আর ইংরাজিতে বেবিসিটার
চাচা ভাতিজির মান অভিমান শেষে , দেখা গেল চাচা জানের সেই কি মহানুভবতা , , , বিলাচ্ছেন চাকরি , , নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান , ওরে ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই ।
মাল্টি গুনের অধিকারী চাচা আমার এককালের বড় ম্যাকানিক ছিলেন , নিমেষেই জাদু , মেশিন স্টার্ট । তাহার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দেখিয়া চক্ষু আমার চড়ক গাছ , কি নেই তাতে । আরমানি পোলো হুগোবস সব ফেল , তাই অচিরেই তিনি ভণ্ড ব্যাবসায়িদের চক্ষের বিষ । আলমগির ভাই , সুশীল ভিলেন হিসেবে হাজির। ডিপজল এর প্রক্সি
এবার কিছুক্ষন চাচা ভাতিজির নাচাগানা , এক লাফে ওয়ান্ডারল্যান্ড থেকে ফ্যান্টাসি । আর ডিজিটাল একশনের কথা নাই বললাম , , আজকাল অলিগলি তে রকেট লাঞ্ছার মারা হয় , লাদেন রে তুই চলে গেলি , রেখে গেলি তোর স্টাইল
এবার ভাড়া করা পাকি গুন্ডা , তবে দেশে জন্ম " অ্যান্ড্রু " এককালের দেশ বরেণ্য শুটার , , আজও তার নাম শুনলে বুলেট কেঁপে উঠে ।
হঠাৎ দেখি ওমা বিমান ন ন ন ! ! ! ! ম্যানেজার সাবের বোন আসিতেসে , বিলাত ফেরত । ফ্যাশন ডিজাইনার বলিয়া কথা । নায়িকার আগমন দীর্ঘ সময় পর , হল জুরিয়া সবার লুল পরিতে লাগিল , হাতে তালি , ঠোঁটে সিস , আর চক্ষে অশ্লীল বাসনা । নায়িকা পুরাই চখাম , ,
সন্ধ্যা , নায়িকা আপা । দেশে ফিরিয়া আর দেরি সইতে পারিলেন না ভাইয়ের সাথে সোজা অফিসে । সেইখানে ঘটিল আরেক কাণ্ড , , দর্শকরা জানিতে পারিলেন অনন্ত ভাইয়ের আরেকটি লুকায়িত প্রতিভার কথা , , তিনি ফায়ার ব্রিগেড কর্মী হিসেবেও বেশ যোগ্য । । এত বড়লোক ব্যাবসায়ির এত গুন দেখিয়া নায়িকা পুরাই লুলায়িত । প্রেমে পরিয়া স্বপ্ন না দেখিয়া ঘরের দেয়াল জুড়িয়া বাংলার হিরু অনন্ত ভাইয়ের ছবি কল্পনা করিল , , জামানা বদলাইসেরে মাউলা
এবার ফুল দেয়া নেয়ার পালা , , দোকান হইতে একরকম ফুল কিনলেও অফিসে আসতে আসতে তা পুরাই রূপ পরিবর্তন করিয়া ফেলেছে । ভালবাসায় কত কি না হয় !!!!!
নায়িকা এবার নিজের মাথার নিজে ইটা মারলেও তা হিতে বিপরিত হইল । নায়িকার , কলিজার টুকরা দিঘিরে নিয়ে চম্পট দিসে , , অনন্য সাহেব খুজতে খুঁজতে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অবস্থা । ফলাফল বরখাস্ত কইরা , , বিয়ে করিলেন সন্ধ্যা আপা কে । সিলিন্ডার ২ টার কথা ভুলিয়া যাবেন না , ডিরেক্টর নিজ দায়িত্তে তাদেরকে একটু একটু করে দেখাচ্ছেন
বিবাহের রাতেই বোঝা গেল , দিঘি মাইয়াটা কত পাকনা । শুরু হল নায়ক- নায়িকার কাবাডি কাবাডি খেলা
সুখে শান্তিতে দিন যাপন ,নায়ক- নায়িকার রোমীয় জুলিয়েট অস্থির গান , , লালটিপ এর ক্যামেরাম্যান বাবুল ভাইরে খুব মিস করসি , উনি হইলে দর্শকরা আরও কিছু দেখতে পাইত কিন্তু কথায় আছে বেশি সুখ ভালা না । খাইল কোপ , মারা গেল দিঘি , , এই চরম দুঃখের মাঝেও দর্শকদের সেই কি টিটকারি , , , ,আলামগির একখান সিগারেট সেই শুরু থেকে গন্ধই নিচ্ছে , এর ধরায় না এত কিছু হয়ে গেল ইন্টারভালের আগেই । ব্যাপক চিন্তিত হইয়া পড়িলাম , , আর কি কি হওয়া বাকি , , কিন্তু ওস্তাদের মাইর এখনও বাকি ।
এবার বউ নিয়ে মালয়েশিয়া । লালটিপ দেখলে প্যারিস আর ইস্পিদ এ দেখতে পাবেন পুরো মালয়েশিয়া কুয়ালালামপুর, পুত্রাজায়া, লঙ্কাবি, সি পোর্ট, অ্যাসেম্বলি হলসহ সব সব সব
কালের বিবর্তনে বউ টা ও গেল , , , আলমগিরের কবলে , কিন্তু ভয় নাই , তার এখন বয়স হয়ে গেসে , , ডিপজল বা মিসা হইলে রিস্ক ছিল । অনন্য ভাই গুলি খেয়ে আরামে হাসপাতালে , , , এবার মিশন ইম্পসিবল , , একটা সিডি আর একটা ঘড়ি । ঘড়ি না থুক্কু স্ক্যানার , , মিশন হল গুণ্ডাদের চক্ষু স্ক্যান করতে হবে ঘড়ি দিয়ে , সময় ৫ দিন ।সন্ধ্যা আপা বন্দি , সময়ের সাথে অক্সিজেন কমবে আর কি বাড়বে বলেন তো , , , , কার্বন ডাই অক্সাইড , তারা বড়ই বিজ্ঞান মনস্ক শুরু হল অস্থির এক মিশন । গান গেয়েই কয়েকদিন দিন , , এক মালয়েশিয়ান মাইয়া ও জুটল । একটু পর পর অ্যাকশন , , ফাইট ডিরেক্টর হংকংয়ের উইলিয়াম । সকল মারামারির একটাই লক্ষ্য চক্ষু স্ক্যান । ওরে আমার চক্ষু নাই রে রে রে রে রে
এবার বাবা আলমগির তোমার চক্ষুর পালা , , দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সিগারেট খানা এবার জ্বলিলো , একটা বিখ্যাত ডায়ালগ দেয়া হইল “আই ডন ওয়ান টো কিল ইউ। আই ওয়ান ইয়ুর আই কোনটাক'' ঠাকুমার ঝুলি খুলল কিন্তু চোখ স্ক্যান হইল না , আলমগির আত্মহনন করিল এবার তার চক্ষু নিয়ে টানাটানি , , শত টানার পরেও আর খুলল না ।
নিরাশ হইয়া খুজিয়া পাইল বন্দি সন্ধ্যা আপা কে , , অক্সিজেন নাই বললেই চলে , , গুলি করিলেন কাঁচের বাক্সে , মালায়সিয়া থেকে কিনা লাইসেন্স বিহীন পিস্তল দিয়ে , , কোন কাম হইল না , , যার কেও নাই তার আল্লাহ আছে , , অনন্য ভাইয়ের গলার লকেট লইয়া আল্লাহতায়ালার নাম জপিতেই ঠাডা পরিয়া গেলাস ভাঙ্গিয়া চুর চুর মার । । । ।
ছিনেমা শেষ , বাংলাদেশ ________
১৫০ টাকা মোটামুটি উসুল , , ব্যাফক মজা লুটা হইসে , , এক কথায় নির্মল বিনোদন । চাকিব খানকে কো আর্টিস্ট হিসেবে রাখা যাইতো । হারামিটেলকে ধন্যবাদ , মাগনা কুক খাওয়ানোর জন্য । সাথে আমাদের বাদর দল সকল সদস্য জাবের , রকিব , রক্সি , লিফান , প্রিন্স , রাকিবা , মৈত্রী , লিজা , আনুপ ও আমি । আর হলের প্রানবন্ত দর্শকদের ।