লেখার প্রথমেই আপনাদের কে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে কিছু ধারনা দিয়ে রাখা উচিত, তা না হলে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে আপনাদের একটা খারাপ ধারনা জন্মাতে পারে ।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠা হয়ে মাত্র ৯ বছরের মধ্যে ইউনিভার্সিটি টি এমন এক স্থানে গেছে যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি কে বাংলাদেশের সেরা ৫টি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে একটি ধরা হয়। আর এর নেপথ্যে যার প্রধান ভুমিকা, তিনি আর কেউ ই নন, বাংলাদেশের অদ্বিতীয় কিংবদন্তী প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী । ইউনিভার্সিটি টি পড়াশোনার ব্যপারে কখনই ছাড় দেয়না এবং পরিক্ষার পদ্ধতি ও সকল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে আলাদা এবং জটিল । বলা হয় যে, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি CGPA দেয়ার ব্যাপারে অনেক কৃপণ । যে জন্যে ছাত্র- ছাত্রীরা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এর উপরে অনেক খিপ্ত । কিন্তু স্যার দের মুখে শুনেছি যে, চাকুরির বাজারে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভালই চাহিদা আছে । বড় ভাইয়া আপুদের ও ভাল ভাল যায়গায় চাকুরি করতে শুনি ।
এখন আসা যাক যা বলতে চাচ্ছি তাতে । আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে ২০০৭ সালের এইচ এস সি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়ার সুবাদে বোর্ড কর্ত্রিক একটা বৃত্তি পেয়েছিলাম । আর তাতেই হল যত ভুল । বৃত্তি গ্যাজেটে নাম টা দেখে ভাবিনাই যে এই টাকা টা তুলতে আমাকে এত্তো কাঠ খড় পুরাতে হবে । আমার সাথের পাবলিক এবং অন্যান্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা সবাই কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই যথা সময়ে টাকা পেয়ে গেছে । অবশ্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের অল্প একটু ঝামেলা বেশি করতে হয়েছে । সেটা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ঝামেলার ৫ ভাগ ও না । আসলে টাকাটা তোলার দায়িত্ব ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের, কিন্তু আমাদের ভারসিটি তে এই ঝামেলা পুর্ন কাজ গুলা ছাত্র দের ই করতে হয় । আমাদের ইউনিভার্সিটিকে এত্তো পরিমান টাকা (৫২৫০০ টাকা/ সেমিস্টার) দেওয়ার পরেও তারা আমাদের এত্তো কষ্ট করায়, এদিকে অন্যান্য সব ইউনিভার্সিটি তেও এই কাজের জন্য লোক রাখা আছে, তা জানতে পারলাম, সরকারি অফিস গুলাতে পা রাখার পরেই । মোট ৪টা অফিস আ আমরা গেছি কাজটা করার জন্য, তার মধ্যে ৩ টা অফিসএর কর্মকর্তারাই বললেন যে - “এটা করতে আপনারা আসছেন ক্যান? এটা তো ইউনিভার্সিটির কাজ । “
এবার আসি আমাদের অফিস ঘোরার কাহিনীতে । এদিক থেকে বাংলাদেশ সরকার এর সাথে আপনি নিঃসন্দেহে এভারেস্ট জয় কে তুলনা দিতে পারেন । আর বাংলাদেশ সরকারি কর্মকর্তারা যে মানুষ কে চরকীর মত ঘুরিয়ে এত্তো দক্ষ, আমার তো মনে হয় যে চাকুরি তে ঢুকানোর পরে তাদের একটা ট্রেইনিং সেশন ই থাকে যে লোক জন কে কি ভাবে ঘুরাইতে হয় । কিন্তু, সাথে সাথে আর একটা কথা বললেই নয়, যে একাজ করতে গিয়ে আমরা একজন অসাধারন সরকারি কর্মকর্তার খোজ পেয়েছি, যাকে আমি কোনমতেই বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তার কাতারে ফেলতে পারিনাই । উনি বসেন শিক্ষা ভবনে । সরকারি অফিসগুলা তার মত নাগরিকের জন্য কাঁদে ।
এবার আসা যাক আমাদের এভারেস্ট জয়ের কাহিনি তে, যা শুরু হয়েছিল মার্চ মাসের কোন এক সময়ে । (সঠিক তারিখ মনে নাই)। প্রথমেই আমরা গিয়েছিলাম ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইনফরমেশনে, যেখান থেকে আমাদেরকে বলা হল যে তোমাদের মোট ৩টা অফিসএ যেতে হবে এবং কাজটা তে তোমাদের অনেক দৌড়া দৌড়ি করতে হবে, তখন আমরা বুঝিনাই যে দৌড়া দৌড়ির সময়কাল হবে ৪মাস!!! যাহোক, ইনফরমেশন থেকে সব কিছু শুনে কাগজ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্তর তৈরি করে ওই দিন ই রওনা হলাম ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দিকে, সময়টা ছিল ২টা ৩০ এর মত, আধা ঘন্টা অপেক্ষা করার পর যাকে খুজছি, উনি বাইরে থেকে আসলেন এবং তার রুমের দরজা থেকে তালা খুললেন । উনাকে কাগজ পত্তর দেখানর পরে উনি বললেন যে, এটা শিক্ষা বোর্ডের কাজ না, এটার জন্য শিক্ষা ভবনে যেতে হবে । তখন ই মোটামুটি একটা ধারনা পেলুম যে, একাজে আমাদের কি পরিমান দৌড়ানি দেয়া লাগতে পারে । ওই দিন আর শিক্ষা ভবনে গেলাম না, তার একদিন পরেই গেলাম শিক্ষা অফিসএ, ওইখানেও গিয়েছিলাম দুপুরের দিকে, গিয়ে দেখি ইলেক্ট্রসিটি নাই, এর আগে আমি জানতাম না যে শিক্ষা ভবনের মত একটা অফিসেও যে জেনারেটর থাকেনা । যাহোক, এখানেও গিয়ে দেখি যে প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা নাই, আসলেন আধা ঘন্টা পরে ।
চলবে ইনশাআল্লাহ……………