অল্প কিছু টাকা হলেই হয়ে যায়। আর
দরকার সামান্য ক্ষমতাসম্পন্ন একজন
মানুষ।
একটা পত্রিকা বের করতে চাই। সাপ্তাহিক
পত্রিকা।
সাপ্তাহিক ধর্ষন।
আঁতকে উঠলেন? ভয় পেলেন?
আরে ভাই ভয় পাবার কোন দরকার নাই।
জাষ্ট লিসেন মাই প্লান। এক জীবনে
টাকার কোন বিকল্প নাই। হোক সেটা
কালো টাকা। খ্যাতিরও কোন বিকল্প
নাই। হোক সেটা কুখ্যাতি।
আপনি জানেন, কি পরিমান বিকারগ্রস্ত
মানুষ এই দেশে ছেয়ে গেছে? শুধুমাত্র
তাদের জন্য প্রতিটি জাতীয় দৈনিক
অত্যন্ত রসিয়ে রসিয়ে ধর্ষন নিউজগুলো
পত্রিকায় ছাপানোর মহান ব্যবস্হা
গ্রহন করেন। কোথায় কবে কেন কতজন
মিলে কোন মেয়েকে ধর্ষন করেছে তার
বিস্তারিত সংবাদ, আহাহা, কি শিহরণ, কি
শিহরণ!
আমরা পুরো হপ্তাজুড়ে এই নিউজগুলো
সংগ্রহ করবো। যে ঘটনাগুলো রসে
পরিপূর্ণ একেবারে সোনায় সোহাগা
আমরা সেগুলো ছাপাবো আমাদের
পত্রিকায়। আমরা এমনভাবে
রিপোর্টগুলো উপস্হাপন করবো যে,
পাঠক পড়া মাত্রই প্রতিটি দৃশ্য দেখতে
পাবে। শিহরণে শিহরণে পাঠক পাগল প্রায়
হবে। এই কাঁঠাল পাকা গরমে কুল কুল করে
ঘামবে। গোসলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব
করবে। আর শীতে? লেপ বা কম্বলের
কোন দরকার নাই। সিলিং ফ্যান চালিয়ে
স্রেফ আমাদের পত্রিকাটি বুকের উপর
রেখে ঘুমালেই চলবে। শীতে লেপ কিংবা
কম্বলের কি দরকার? সাপ্তাহিক ধর্ষন
আছেনা?
উত্তেজনায় সবকিছু তো মাথায় উঠে
গেছে। সবকিছুকে তো আগের জায়গায়
নিয়ে আসতে হবে। আমরা এবার একটু ভয়
দেব। পাঠকরা পড়বে চৌদ্দ বছর সাজা
পাওয়া কোনো ধর্ষকের করুন আর্তনাদ।
চমৎকার একটি সাক্ষাৎকার। ধর্ষক বলবে,
ভাই ছাড়া পাইলে পুরা বালা অইয়া যাইব।
নামাজ রোজা করুম। কোন পাপ কাজ না।
দরকার অইলে হেই জিনিসটা কাইট্টা
ফালাই দিমু!
আমাদের রিপোর্টার বলবে, বিজ্ঞান
এখন অনেক দূর এগিয়েছে। চাইলে ওটা কেঁটে
ফেলে দিয়ে মেয়ে হয়ে যেতে পারেন।
সত্যিকার মেয়ে মানুষের অনুভুতি পাবেন।
পাশের দেশ ইন্ডিয়াতেই করছে।
ধর্ষক রিপোর্টারের কথা শুনে ট্যাঁরা হয়ে
যাবে। পুরোই কনফিউজড!
তারপর থাকবে সৈয়দ হক কিংবা তসলিমা
নাসরিন অথবা ইমদাদুল হক মিলনের
একটি রগরগে যৌন উত্তেজনাপূর্ণ গল্প।
বিবাহিত পাঠক পড়ে ভাববে, আহ্, মিনুর
মার আর বাপের বাড়ি যাওয়ার সময়
হলোনা! এই সময় কেউ বাপের বাড়ি যায়?
অবিবাহিত বিয়ের লায়েক পাত্র ভাববে, যে
কোন একটা চাকুরী যে করেই হোক খুঁজে
পেতে হবে। খ্যাতা পুড়ি শালার
সার্টিফিকেটের। বিয়েটা সেরে ফেলতে হবে-
এ্যানি হাউ! আর টিন এ্যাজ কচি খোকা
অতি সন্তর্পণে এ গল্প পড়ে ভাববে,
বাবার থেকে যে করে হোক দু' হাজার টাকা
ম্যানেজ করতেই হবে। মেঘনার দিকে একটা
ভিলেজ আছে। ছ'শো টাকা দিলে এক
ঘন্টার জন্য রুম পাওয়া যায়। সাথে এটাচ
বাথ। মিতুকে নিয়ে একটু ভিন্নভাবে সময়
কাটাতে হবে এবার!
তারপর আবার এসি অফ। আবার একটু ভয়
দেখানো। আইনের মারপ্যাচে ধর্ষন যে কি
ভয়াবহ অপরাধ তা ফুটিয়ে তুলবো। মিনুর
বাবা নিজে উঠে গ্লাসে পানি ঢেলে ঢল ঢল
করে পান করবে। কাজের মেয়েটাকে ছুটিতে
পাঠিয়ে ভালো করেছে মিনুর মা।
অবিবাহিত তরুনটি লজ্জিত হবে। পাশের
বাসার ভাবির সাথে যোগাযোগটা কমিয়ে
দিতে হবে। ভদ্রমহিলা কারণ ছাড়া অযথা
কেবল উড়না ঠিক করেন। কচি খোকা
ভাববে, গার্ডেনের রুমটা ভালো করে চেক
করে নিতে হবে। সিসি ক্যামেরা থাকলে
সাড়ে সর্বনাশ!
আমার বন্ধু লিষ্টে যদি কোন অঢেল
পয়সাওয়ালা মানুষ থাকেন যার ইচ্ছা আছে
পত্রিকার গর্বিত মালিক হওয়ার, প্লিজ
আওয়াজ দেন। এই পত্রিকা চলবে রে, ভাই,
কোন সন্দেহ নাই। এ্যাড পার্টিরা তাদের
এ্যাড দেয়ার জন্য আমাদের পিছনে বিশাল
লাইন লাগাবে। অমুক হার্বাল, তমুক
হার্বাল। ওমুক বড়ি তমুক বড়ি। তারপর
ষ্ট্রবরি কিংবা লেমন ঘ্রানে সমৃদ্ধ অমুক
বা তমুক কনডম।
আছেন কেউ?
জাস্ট সামান্য আওয়াজ দেন !